‘আগের স্বামী দেওয়া দেনমোহরের টাকার জন্যই স্ত্রীকে খুন’
Published: 20th, January 2025 GMT
অনৈতিক সম্পর্ক বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে নয়, গচ্ছিত টাকার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্বামী আজাদ বক্স। পরে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
১২ জানুয়ারি উপজেলার পৌর এলাকার উত্তর আলেপুর গ্রামে মনোয়ারা বেগম নামে এক নারীর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সম্প্রতি এমনই তথ্য সামনে এসেছে। তবে নিজের অপরাধ ঢাকতে স্ত্রীর নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করে স্বামী আজাদ।
নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোয়ারা বেগমের আগে অন্যত্র বিয়ে হয়েছিল। তালাকের সময় আগের স্বামী দেনমোহরের ৩ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেন।
পরে ২০২৩ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিগাঁও গ্রামের আজাদ বক্সের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিয়ে হয় মনোয়ারার। মনোয়ারা বেগম আলেপুরের বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এ সময় মনোয়ারার কাছে থাকা সেই ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করতে থাকে আজাদ। এক পর্যায়ে স্ত্রী মনোয়ারা সরল বিশ্বাসে সব টাকা তার হাতে তুলে দেন। টাকা নেওয়ার পর যৌতুক হিসেবে আরও ১ লাখ টাকার জন্য মনোয়ারা ও তাঁর পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে আজাদ।
এক পর্যায়ে মনোয়ারা তাঁর দেওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে আজাদ মনোয়ারাকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ১২ জানুয়ারি সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মনোয়ারাকে হত্যা করে আজাদ। পরে শাস্তি কম করার জন্য সে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
প্রতিবেশী ইয়াকুব আলী জানান, মনোয়ারাকে নির্যাতন করত আজাদ বক্স। একবার এ নিয়ে বিচারও হয়েছে। সে স্ত্রীর টাকা হাতিয়ে নেয়। মনোয়ারা তাকে দুটো অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলেন। সেটারও কোনো টাকাপয়সা দিত না।
নিহতের ছোট ভাই ও মামলার বাদী সুমন মিয়া জানান, তাঁর বোন খুব সহজ-সরল ছিল। মা ও বোন মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। তাঁকে অত্যাচার করত আজাদ।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, আসামি আজাদ বক্স থানায় এলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামিন পেলেন এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত জামিন পেলেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি এনসিসি (ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন। আজ বুধবার তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে দুই দফা শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে তোফাজ্জলের আইনজীবী মো. জামিল হক জামিন আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আবেদনে প্রয়োজনীয় নথিপত্রের ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল বলেন, এই আসামি দীর্ঘ পলাতক। জেলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়াই আসামিকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তখন ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীকে দুই ঘণ্টার মধ্যে কাগজপত্র নিয়ে আসার সময় দেন।
দুই ঘণ্টা পর আজ বেলা তিনটার দিকে আবার ট্রাইব্যুনাল বসে। তখন শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন। এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৩ জুলাই। সেই সময় পর্যন্ত তোফাজ্জল হোসেনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় ২০১৭ সালে ট্রাইব্যুনালে তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে বিবিধ মামলা (মিস কেস) হয়। ওই বছরই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তখন থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিন পেলেন।