ফরিদপুরে অধ্যক্ষকে হত্যা চেষ্টা, প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
Published: 20th, January 2025 GMT
ফরিদপুরে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো. মনজুরুল ইসলামের (৫৮) ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয় ‘ফরিদপুর শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের’ উদ্যোগে।
সকাল ১০টার দিকে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অম্বিকা সড়ক ধরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সামনে যায়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি ব্রাহ্ম সমাজ সড়ক হয়ে মুজিব সড়ক দিয়ে আলীপুর মোড় এলাকায় গিয়ে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়।
চার রাস্তার মোড়ে অবস্থিত শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টি অবরোধ করায় আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো.
জেলা প্রশাসক বলেন, এ হামলার বিষয়টি সরকারি ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রোববার জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। আসামি সনাক্ত করতে ও তদন্তে সময় লাগছে। কাউকে হেরাজমেন্ট করা হবে না। আসামি সনাক্ত ও গ্রেপ্তার হলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পর্যালোচনা ও আসামিদের সনাক্ত করার জন্য আরেকটু সময় চাই। এ নিশ্চয়তা দিচ্ছি সনাক্ত হওয়ার পর আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ অবস্থায় আপনারা এমন সব কর্মসূচি থেকে বিরত থাকবেন যাতে জনদুর্ভোগ না হয়।
এরপর বক্তব্য দেন এ আন্দোলনের সমন্বয়কারী বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম শহীদুল ইসলাম। তিনি জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দুই দিন সময় দিয়ে বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে আসামি ধরা না হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
অন্যদের মধ্যে সরকারি ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান খান, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ তালুকদার আনিসুর ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, জামাল শেখ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজ, মুসলিম মিশন কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনসস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের পাশে আব্দুল করিম সড়কে ‘ফ্রেস ফুড এন্ড পেস্ট্রি’ শপের সামনে হামলার শিকার হন অধ্যক্ষ মনজুরুল ইসলাম। ওই সময় তিনি তার ছেলেকে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। এসময় পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা এক আরোহী স্টিলের লাঠি দিয়ে অধ্যক্ষের মাথায় আঘাত করলে তিনি সড়কের উপর লুটিয়ে পড়েন।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, হামলার আসামিদের এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামি সনাক্ত করা যায়নি। তবে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি সনাক্ত করার চেষ্টা করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ কল জ র অবর ধ সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের দিন নিহত সুমাইয়ার বাসায় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
গত বছরের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে নিহত সুমাইয়া আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
রোববার (৩১ মার্চ) সকাল ১০ টায় সিদ্ধিরগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় সুমাইয়ার বাসায় উপস্থিত হন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ সময় তার সাথে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, তামিম আহমেদ ও দক্ষিণঅঞ্চলের সংগঠক শওকত আলি।
এ সময় সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিহত সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের বর্তমান অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং ঈদ উপহার তুলে দেন।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “সুমাইয়ার মতো এমন অসংখ্য মানুষ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নির্মমভাবে খুনের শিকার হয়েছেন। বর্তমান সরকার এ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে তৎপর রয়েছে। ভুক্তভোগী এসবপরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা তাদের পাশে আছি”।
পরে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিহত সুমাইয়ার মায়ের হাতে ঈদ উপহার ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতোয় নাগরিক পার্টি এনসিপি নারায়ণগঞ্জ সংগঠক জোবায়ের হোসেন তামজীদ, ফয়সাল আহমেদ ফজলে রাব্বি, সোহেল খান সিদ্দিক, রাইসুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের ১নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় মায়ের বাসায় ঘরে আড়াই মাস বয়সের শিশু মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া আক্তার।
বারান্দায় দাঁড়ানোর কয়েক মিনিটের মধ্যে আচমকা আকাশে ওড়া হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া একটি গুলি বারান্দার গ্রিল ভেদ করে সুমাইয়ার মাথায় বিদ্ধ হয়।
এসময় রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা নিথর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পথেই সুমাইয়ার মৃত্যু হয়।
বিশ বছর বয়সের তরুণী সুমাইয়া গার্মেন্টস কর্মী ছিলেন। স্বামী মো. জাহিদ এবং আড়াই মাস বয়সের মেয়ে সুয়াইবাকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তারা।
দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানে রূপ নিলে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্বামী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে নিজ বাসা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সুমাইয়া।