Risingbd:
2025-03-03@20:22:07 GMT

শিল্পী সমিতির কমিটিতে মুক্তি

Published: 20th, January 2025 GMT

শিল্পী সমিতির কমিটিতে মুক্তি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রুমানা ইসলাম মুক্তি। নির্বাহী সদস্য পদ শূন্য থাকায় তাকে মনোনীত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিং শেষে সভাপতি মিশা সওদাগর মুক্তিকে শপথ পাঠ করান। এ তথ্য জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও মুক্তি নিজেই। এসময় কার্যনির্বাহী পরিষদের অনেক সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, মুক্তিকে কমিটিতে পেয়ে আনন্দিত তারা।

শিল্পী সমিতির সদস্য পদে শপথ নিয়ে আনন্দিত মুক্তি বলেন, “সমিতির বাইরে থেকেও বিগত দিনে শিল্পীদের জন্য কাজ করেছি। এখন যেহেতু সমিতির সঙ্গে থেকে কাজ করার সুযোগ হলো, এটি আমার জন্য আরো ভালো হলো। কাজ করাটা আরো সহজ হবে। এই কমিটির সদস্যরা দারুণ। এ কারণে আমি আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে শপথ নিয়েছি।”

আরো পড়ুন:

শুটিং সেটের সিলিং ভেঙে আহত অর্জুন-ভূমি

কাজের লোককে ‘ঝি’ বলা যাবে না কেন, প্রশ্ন অঞ্জন দত্তর

জানা গেছে, বেশকিছু দিন ধরে কার্যনির্বাহী সদস্য পদটি শূন্য ছিল। আরেক চিত্রনায়িকা শাহনূর পর পর ৩ মিটিংয়ের অধিক অনুপস্থিত থাকায় কার্যকরী পরিষদ তাকে কারণ দর্শানের নোটিশ দেন। তবে কোনো চিঠির উত্তর না মেলায় এবং সমিতির সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে তার যোগাযোগ বিছিন্ন থাকায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদটি শূন্য হয়ে যায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য শাহনূরের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মুক্তি।

এ প্রসঙ্গে শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ডি এ তায়েব বলেন, “বেশ কয়েক মাস ধরে সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার। আমরা নিয়ম অনুযায়ী শাহনূরকে কারণ দর্শানের চিঠি দেই। কিন্তু একটি চিঠিরও উত্তর পাইনি। তার অনুপস্থিতিতে পদটি শূন্য থাকে। সেখানে চিত্রনায়িকা মুক্তি কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদ। মিটিংয়ে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সর্বসম্মতিক্রমে ওই পদে মুক্তিকে নেওয়া হয়েছে।”

মুক্তি বলেন, “আগে থেকেই আমি সমিতির জন্য নিবেদিত ছিলাম। সমিতি সবসময় তাদের পাশে আমাকে পেয়েছে। আমিও চেষ্টা করেছি শিল্পীদের জন্য কিছু করতে। তবে কমিটিতে থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয়। সেই ভাবনা থেকে কমিটিতে যুক্ত হয়েছি। এরই মধ্যে শিল্পীদের কথা ভেবে বেশকিছু পরিকল্পনা করেছি। শিগগিরই সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব।”

খ্যাতিমান অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগমের মেয়ে চিত্রনায়িকা রুমানা ইসলাম মুক্তি। গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ সিনেমায় চম্পার মেয়ে গোপী চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় মুক্তির। ‘চাঁদের আলো’ সিনেমায় চিত্রনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। জনপ্রিয় লেখক ও পরিচালক হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় জমিদারের নাতনির চরিত্রে অভিনয় করে মন জয় করেন দর্শকদের। এরপর চাষী নজরুল ইসলামের ‘হাসন রাজা’ সিনেমাতেও অভিনয় করেন মুক্তি।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র সদস য কম ট ত র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নেতারা দেশে গণতন্ত্র চান, দলে চান না

অনেক বছর পর মুক্ত পরিবেশে বিএনপি একটি বর্ধিত সভা করতে পারায় নিশ্চয়ই দলের নেতা–কর্মীরা আনন্দিত। এই বর্ধিত সভাটি এমন এক সময়ে হলো, যখন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেনাসমর্থিত সরকারের আমল থেকে সেখানে অবস্থান করছেন। তাঁরা দুজনই ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়েছেন এবং দলীয় নেতা–কর্মীদের প্রতি দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতা দিয়েছেন। 

বর্ধিত সভায় বিভিন্ন স্তরের শ খানেক নেতা বক্তৃতা দিয়েছেন। তাঁদের বক্তৃতায় সরকারের সংস্কার ও দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের বিষয় উঠে এসেছে। বিতাড়িত আওয়ামী লীগ ও একদা জোটসঙ্গী জামায়াতের কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন নেতারা। আন্দোলনের সময়ে যেসব নেতা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তাঁরা যাতে নতুন করে নেতৃত্বে না আসতে পারেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, সে বিষয়েও আকুতি প্রকাশ পেয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের কথায়। 

তবে বিএনপির নেতারা রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন ও রাজনীতির গতিবিধি নিয়ে কথা বললেও দলের সংস্কার নিয়ে কিছু বলেননি। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংকটের মূলে দলীয় একনায়কত্ব। অন্তর্বর্তী সরকার অনেক বিষয়েও সংস্কার কমিশন গঠন করেছে; কিন্তু দলে গণতন্ত্র ফেরাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দলে গণতন্ত্র না এলে দেশেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা দৌড়ের ওপর ছিলেন। তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের নামে হাজার হাজার মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। মামলার কারণে অনেক নেতাকে দিনের পর দিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হতো । 

এখন সেই পরিস্থিতি নেই। কিন্তু মুক্ত পরিবেশে বিএনপিকে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। একশ্রেণির নেতা–কর্মী চাঁদাবাজি, দখলবাজিতে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। কোথাও কোথাও দলের নেতা–কর্মীরা অভ্যন্তরীণ সংঘাতেও লিপ্ত। এটা ভালো লক্ষণ নয়। 

বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে অনেক আগেই ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি দিয়েছে। দলের মিত্ররাও এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বিএনপির ৩১ দফায় বেশ কিছু ভালো প্রস্তাব আছে। যেমন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, এক ব্যক্তির দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। এ ছাড়া নির্বাহী বিভাগের ওপর আইনসভার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করা ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বায়ত্তশাসনের কথাও আছে তাদের প্রস্তাবে।   

কিন্তু ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দল সংস্কারের কোনো কথা নেই। তারা দেশে সংসদীয় শাসনপদ্ধতি চালু করেছে। কিন্তু দলীয় কাঠামোটি পুরোপুরি একনায়কতান্ত্রিক। এটা কেবল বিএনপিতে নয়। ছোট–বড় প্রায় সব দলেই। দলের প্রধানই সব। তিনি যা বলবেন, সেটাই আইন। 

এখানে তিনটি দল—বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র বিচার করলে আমরা দেখতে পাব, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়। 

বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারার খ উপধারায় চেয়ারম্যানের কর্তব্য, ক্ষমতা ও দায়িত্বের কথা বলা আছে যথাক্রমে:

১. দলের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে চেয়ারম্যান দলের সর্বময় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ, তদারক ও সমন্বয় সাধন করবেন এবং তদুদ্দেশ্যে জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, বিষয় কমিটিসমূহ এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত অন্যান্য কমিটিসমূহের ওপর কর্তৃত্ব করবেন এবং তাদের কার্যাবলির নিয়ন্ত্রণ, তদারক ও সমন্বয় সাধন করবেন। ২. উপরোক্ত কমিটিসমূহের সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও চেয়ারম্যান প্রয়োজন বোধে নিতে পারবেন। ৩. জাতীয় নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে উক্ত কমিটির কর্মকর্তাদের দায়দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কর্তব্য নিরূপণ করবেন। ৪. চেয়ারম্যান প্রয়োজন মনে করলে জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি, বিষয়ভিত্তিক উপকমিটিসমূহ এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত অন্যান্য কমিটিসমূহ বাতিল করে দিতে এবং পরবর্তী কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে পুনর্গঠন করতে পারবেন। 

দলের চেয়ারম্যানই যদি সর্বময় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ, তদারক ও সমন্বয় করেন এবং জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, বিষয় কমিটিসমূহের ওপর কর্তৃত্ব করেন, তাহলে অন্য কোনো পদ থাকা না থাকার মধ্যে খুব ফারাক থাকে না।   

জাতীয় পার্টির (এরশাদ) গঠনতন্ত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে বলা হয়েছে ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পার্টির সর্বপ্রধান কর্মকর্তা হইবেন। তিনি পার্টির ঐক্য, সংহতি ও মর্যাদার প্রতীক। গঠনতন্ত্রের অন্য ধারায় যাহাই উল্লেখ থাকুক না কেন—জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত থাকিবেন। এই ক্ষমতাবলে তিনি প্রয়োজনবোধে প্রতিটি স্তরের কমিটি গঠন, পুনর্গঠন, বাতিল, বিলোপ করিতে পারিবেন। তিনি যেকোনো পদ সৃষ্টি ও বিলোপ করিতে পারিবেন। চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির যেকোনো পদে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ, যেকোনো পদ হইতে যেকোনো ব্যক্তিকে অপসারণ ও যেকোনো ব্যক্তিকে তাহার স্থলাভিষিক্ত করিতে পারিবেন।’ 

চেয়ারম্যানের এই ক্ষমতা বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে দল ভেঙেছে। অনেক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু এরশাদ সাহেব যেই গঠনতন্ত্র রেখে গেছেন, সেটা এখনো বহাল আছে। 

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সভাপতির দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রসঙ্গে বলা আছে, ‘সভাপতি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে গণ্য হইবেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, জাতীয় কমিটির সব অধিবেশন, কার্যনির্বাহী সংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং প্রয়োজনবোধে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের যেকোনো ধারা ব্যাখ্যা করিয়া রুলিং দিতে পারিবেন। তিনি ১৯ ধারামতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের মনোনয়ন ঘোষণা করিবেন। সভাপতিমণ্ডলীর সহিত আলোচনাক্রমে তিনি বিষয় নির্ধারণী কমিটির সদস্যদের মনোনয়ন দান করিবেন।’

বিষয় নির্ধারণী কমিটির সদস্যদের মনোনয়নের বিষয়ে দলীয় প্রধান সভাপতিমণ্ডলীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। কিন্তু কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের মনোনয়নের বিষয়ে আলোচনা করবেন কি না, সেটা বলা নেই। 

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে কিছুটা গণতন্ত্রের কথা আছে। তারপরও দলটি ৪২ বছর ধরে একনায়কতান্ত্রিকভাবে চলেছে। আর বিএনপি ও জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রেই দলীয় প্রধানকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। 

আমাদের নেতারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান কিন্তু দলে গণতন্ত্র চান না। বিএনপি বা আওয়ামী লীগ বড় দল বলে এসব দলের ‘একক কর্তৃত্ব’ বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে ছোট-বড় প্রায় সব দলেই একনায়কত্ব আছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার আগে যে দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন, আমাদের বিজ্ঞ রাজনীতিকেরা এই সত্য কথাটি বুঝতে চান না। 

রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রসঙ্গে যখন একই ব্যক্তির দুবারের বেশি দলীয় প্রধানের পদে থাকা উচিত নয় বলে পণ্ডিতেরা মত দেন, তখন সব দলের নেতা তা ‘বাস্তবতাবর্জিত’ বলে নাকচ করে দেন। একই ব্যক্তির সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা কতটা সমীচীন, সেই বিষয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলা পছন্দ করেন না। কিন্তু একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা হলে যে দল ও সরকার একাকার হয়ে যায়, তা অস্বীকার করবেন কীভাবে? 

আমরা কি ভবিষ্যতে এমন গণতন্ত্র আশা করতে পারি, যেখানে দলীয় প্রধান ও সংসদপ্রধান ভিন্ন হবেন? যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি সংসদ নেতার আসনে বসবেন না।  

সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেতারা দেশে গণতন্ত্র চান, দলে চান না