ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান সিইসির
Published: 20th, January 2025 GMT
সপ্তমবারের মতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ভোটের দিন যাতে কেউ আপনার অধিকার হনন করতে না পারে, কেউ যাতে ভোটকেন্দ্র দখল করতে না পারে, ভোটের বাক্স কেড়ে নিতে না পারে সেজন্য ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সোমবার দুপুরে সাভারে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের অধিকার রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেব, আমরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল হতে দেব না। ভোটারদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লব আমাদের একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগটা হচ্ছে নাগরিকদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ। ভোটের অধিকার কিন্তু প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি অপরচুনিটি পেয়েছি। এখন প্রতিষ্ঠার কাজটি করতে হবে আমাদের। এই প্রতিষ্ঠার কাজটা করতে প্রথম ধাপ হচ্ছে সুষ্ঠু ভোটার তালিকা।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের ভোটের ট্রেন যখন যাত্রা করল, এ যাত্রার মধ্যে প্রথম কাজটা হলো ভোটারদের সঙ্গে নিতে হবে। আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দেশবাসীকে পাশে চাই। আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা নিয়ে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। যেদিন মানুষ ভোট দিতে পারবে, বিনাদ্বিধায় ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে, সেদিন আমরা মনে করবো ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসি প্রধান বলেন, জাতীয় নির্বাচন হলো জাতীয় দায়িত্ব। যারা সরকারি চাকরি করে তারা সবাই জানেন। আমাদের সমাজের আপামর জনসাধারণের প্রতি আমার আপিল বেশি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন এবং পুরো প্রক্রিয়াতে পদে পদে সহযোগিতা করুন। আপনারা নারী ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করুন, তারা যাতে ভোটের মূল্য বোঝে এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে তাদের সঙ্গে নিন। যাতে তারা ভোট দিতে পারে।
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ ও তাহমিদা আহমদ এবং আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।