রাতে চুরি হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুতের মিটার। মিটারের স্থানে রেখে যাওয়া হচ্ছে চিরকুট, যেখানে বিকাশ নম্বর ও টাকার পরিমাণ লেখা। সেই নম্বরে যোগাযোগ করে টাকা পাঠালেই ফেরত দেওয়া হচ্ছে মিটার। গত রোববার রাতে এভাবেই নাটোরের গুরুদাসপুরে পাঁচ গ্রাহক তাদের  চুরি যাওয়া মিটার ফিরে পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন গ্রাহক ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

রোববার রাতে পৌরসভার চাঁচকৈড় কাঠহাটা এলাকা থেকে ১৩টি বাণিজ্যিক মিটার চুরি হয়। চুরি যাওয়া মিটার গ্রাহক আল মামুন, আলাল উদ্দিন, শামীম হোসেন, জামাল আলী, ভাদু সরকার, মাহতাব সরকার, আতিক হোসেন, তাজ সরকার, মোস্তফা, ময়েন উদ্দিন ও মহসিন চাঁচকৈড় বাজারপাড়ার বাসিন্দা। চোরচক্র তাদের মিটারের পাশে চিরকুটে বিকাশ নম্বর লিখে রেখে গেছে। সেই নম্বরে পাঁচজন টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত পেয়েছেন। 

পৌরসভার বাণিজ্য নগরী চাঁচকৈড় বাজারের কাঠহাটা এলাকায় ২০টি ‘স’ মিল রয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে ১৩টি ‘স’ মিলের বাণিজ্যিক মিটার চুরি হয়। সকালে মিল মালিক ও শ্রমিকরা এসে দেখেন মিটার নেই। পাশেই দেওয়া আছে চোর চক্রের মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে কল দিলে প্রতিটি মিটারের জন্য ১০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়। পরে পাঁচ হাজার টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। টাকা পাঠানোর পর চোরচক্র মিটারের সন্ধান দিলে সেখান থেকে তা উদ্ধার করা হয়। 

গ্রাহক আল মামুনের দুটি বাণিজ্যিক মিটার চুরি হয়েছে। মিটারের পাশে থাকা নম্বরে কল দেওয়ার পর কলার একটি বিকাশ নম্বর দেয়। সেই নম্বরে দুই মিটারের জন্য ১০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর চোর চক্রের সদস্যরা জানায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনের একটি খড়ের পালার নিচে একটি ও এক কিলোমিটার দূরে পুকুর পাড়ের কচুরিপানার নিচে আরেকটি মিটার রাখা আছে। সেখানে মিটার দুটি খুঁজে পেয়েছেন আল মামুন।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (গুরুদাসপুর জোনাল অফিস) এর ডিজিএম মমিনুর রহমান বিশ্বাস বলেন, প্রতিটি মিটার লোহার খাঁচা করে তালাবদ্ধ করে রাখলে চুরি কমবে। তা ছাড়াও চোর চক্রকে পাঁচ হাজার টাকা না দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ৬ হাজার টাকা খরচ করলেই তারা নতুন মিটার নিতে পারবে। চোরদের টাকা দেওয়া বন্ধ করলেই আর চুরি করবে না।’

একের পর এক মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ কেন নিতে পারছে না, জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। দ্রুত এ চক্রকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র হক

এছাড়াও পড়ুন:

মুজিবনগর সরকার গঠন দিবস আজ

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন আজ। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের এই দিনে গঠিত হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার। আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও পাঠ করা হয় সরকার গঠনের পর।

এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে দেওয়া হয় অনুমোদন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।

শপথ গ্রহণের পর ওই সরকারে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন সাতজন। এ সময় মুজিবনগর সরকারের কাঠামো ছিল– রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (পাকিস্তান সামরিক শাসকদের হাতে বন্দি), উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম (বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং পদাধিকারবলে সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ), প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী এম মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান, পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, প্রধান সেনাপতি কর্নেল (অব.) এমএজি ওসমানী এবং চিফ অব আর্মি স্টাফ লে. কর্নেল (অব.) আবদুর রব। 

সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এই বৈদ্যনাথতলাকেই তখন ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর’ হিসেবে নামকরণ করেন। সেই থেকে কলকাতায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার মানুষের কাছে ‘মুজিবনগর সরকার’ নামে পরিচিত ছিল। এ সরকারের নেতৃত্বেই পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মুজিবনগর সরকার গঠন দিবস উদযাপন করা হয়। 

তবে এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সরকারি উদ্যোগে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে বলে জানা গেছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ