পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশচেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশুসহ আটজনকে আটক করেছে বিজিবি। রোববার গভীর রাতে বোদা উপজেলার কাজীপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে। আজ সোমবার দুপুরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। 

আটকরা হলেন- দিনাজপুরের পার্বতীপুর চন্ডীপুর গ্রামের বিষ্ণজিত রায় (২৭), তার স্ত্রী খুশি রায় (২৩) ও ছেলে প্রানাভি রায় (৩), কাহারোল উপজেলার তেলিয়ান গ্রামের শ্রী রতন রায় (৩০), তার স্ত্রী চন্দনা রাণী রায় (২৮), ছেলে শ্রী সমর রায় (১০), মেয়ে চুমকা রাণী রায় এবং পঞ্চগড়ে বোদা উপজেলাধীন উৎকুড়া গ্রামের শ্রী সুজন রায় (২১)। 

বিজিবি জানায়, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে যান আট বাংলাদেশি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবির একটি টহলদল কাজীপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৭৭ এর ৬ নং সাব পিলার এলাকার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান চালায়। এসময় তিন শিশু ও দুই নারীসহ ৮ জনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা ভারতে তাদের স্বজনদের বাড়িতে যেতে দালালের সঙ্গে এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয় বলে জানায় বিজিবি। 

নীলফামারী ৫৬ বিজিবির অধিনায়ক শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা জানান, আটক ব্যক্তিদের বোদা থানায় সোপর্দ করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে মুচলেকা নিয়ে শিশুদের তাদের স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল গৃহবধূর লাশ

রাতে শাশুড়ি ও স্বজনদের নিয়ে স্বামীর জন্মদিনের কেক কাটেন আঞ্জুমান মায়া। এরপর মধ্যরাত থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে পদ্মা নদীতে তাঁর ভাসমান লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের কালোয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

দুপুরে সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় নৌ পুলিশ। আঞ্জুমান মায়া ওই এলাকার আজিজ শেখের ছেলে আসিফ শেখের (১৮) স্ত্রী। আসিফ কয়া মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও একটি বেসরকারি কোম্পানির খাদ্য পরিবেশক। আঞ্জুমান কুষ্টিয়া পৌরসভার ত্রিমোহনী এলাকার আজিম উদ্দিনের একমাত্র মেয়ে।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভাষ্য, আঞ্জুমান প্রায়ই রাতের বেলা আনমনা হয়ে বের হয়ে যেতেন। শুক্রবার রাতে বের হলে আর পাওয়া যায়নি। তবে বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ব্যবসার টাকা না পেয়ে আঞ্জুমানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী আসিফ।

স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় আঞ্জুমানের নানাবাড়ি। প্রায় সাত মাস আগে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আসিফের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ সম্পর্কের প্রায় দুই মাস পর পালিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা। এক সপ্তাহ পর বউ নিয়ে নিজ বাড়িতে যান আসিফ। পারিবারিকভাবে মেনে নেওয়ার পর ভালো চলছিল তাঁদের সংসার।

স্বজনেরা জানান, গতকাল আসিফের জন্মদিন ছিল। বাড়িতে ছিল বন্ধু ও স্বজনদের আনাগোনা। বিকেলে আঞ্জুমান তাঁর স্বামীকে নিয়ে বাজার থেকে কেক কিনে আনেন। রাত আটটার দিকে স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে কেক কাটেন। রাতে স্বজনদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে ১০টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন স্বামী। এরপর রাত একটার দিকে আসিফ জেগে দেখেন, স্ত্রী ঘরে নেই। দরজা খোলা। তখন স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে রাতভর সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রীকে পাননি। পরে আজ সকাল ছয়টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীতে তাঁর ভাসমান লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী।

আঞ্জুমানের শাশুড়ি ফেরদৌসি খাতুন বলেন, ‘প্রেম করে বিয়ে করলেও সংসারে কোনো অশান্তি ছিল না। শুক্রবার রাতেও সবাই মিলেমিশে জন্মদিন উদ্‌যাপন করল। সবাই একসঙ্গে রাতে খেয়েছিলাম। পরে রাত একটার দিকে ছেলের কাছ থেকে শুনি বউ ঘরে নেই। এরপর সবাই মিলে সারা রাত খুঁজেও কোথাও পাইনি। পরে সকালে নদীতে লাশ পাইছি। আঞ্জুমানের উপসর্গজনিত রোগ ছিল। প্রায়ই ঘর থেকে হারিয়ে যেত। উপসর্গই তাঁকে মারেছে।’

স্বামী আসিফ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংসার খুবই ভালো চলছিল। রাতে ধুমধাম করে আমার জন্মদিন উদ্‌যাপন করি। খাবার খেয়ে রাত ১০টার দিক শুয়ে পড়ি। এরপর রাত একটার দিকে জেগে দেখি, আঞ্জুমান নেই। রাতে খোঁজাখুঁজি করে না পেলেও সকালে নদীতে লাশ পেয়েছি। স্ত্রীর উপসর্গজনিত রোগ ছিল।’

কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতে নিখোঁজ ছিলেন ওই গৃহবধূ। সকালে নদীতে স্থানীয় লোকজন দেখতে পান, মাছ ধরা জালের সঙ্গে আটকে আছে তাঁর লাশ। কী ঘটেছে, তা ময়নাতদন্ত করলেই জানা যাবে।

মেয়ে হারানোর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আঞ্জুমানের মা পারভিন খাতুন। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আসিফ আমার মেয়েকে ছলাকলা করে বিয়ে করেছে। তিন দিন আগে ব্যবসা করার জন্য তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না পেয়ে মেয়েকে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে। আমার মেয়ের কোনো উপসর্গ ছিল না। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নৌ পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলতে গিয়ে নিখোঁজ, এক দিন পর পুকুরে পাওয়া গেল লাশ
  • রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল গৃহবধূর লাশ