সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, বিচার বিভাগের যত ইম্প্রুভমেন্ট হয়েছে তা তিনিই করেছেন। 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানিকালে তিনি এ দাবি করেন।

এদিন আনিসুল হকের উপস্থিতিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ছিলো। এদিন সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় এজলাসে থাকা আসামির ডকে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আনিসুল হক। অন্যান্য মামলার শুনানি চলায় কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর বিচারক তাকে ডকে থাকা বেঞ্চে বসতে বলেন। এরপর তার গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর মামলার বিস্তারিত আদালতের সামনে তুলে ধরেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন।

এক পর্যায়ে বিচারক সাবেক এই মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিচার বিভাগের দৈন্যদশা তুলে ধরেন। এসময় তিনি মামলা জটের চিত্র তুলে ধরেন। বিচারক বলেন, “ঢাকায় লক্ষাধিক এনআই অ্যাক্ট মামলা পরিচালনা করার জন্য মাত্র সাতটি যুগ্ম দায়রা জজ আদালত রয়েছে, যা মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য অপ্রতুল। অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারককে টিনসেড বিল্ডিংয়ে বসে বিচার কাজ পরিচালনা করতে হয়। গত ১৫ বছরে বিচার বিভাগের তেমন কোনো সংস্কার হয়নি।”

এসময় আনিসুল হক আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, “আমি আইনমন্ত্রী থাকাবস্থায় প্রতি বছর লোকবল নিয়োগের জন্য রিকুইজিশন দিতাম। আইন মন্ত্রণালয়ের জন্য মাত্র ১৩ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ছিলো। বিচার বিভাগের যত ইম্প্রুভমেন্ট হয়েছে তা আমার করা। তবে আমার একটাই দুঃখ, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য আলাদা একটি ভবন করতে পারিনি। ইনশাআল্লাহ, সামনে ভবন নির্মিত হবে। এই সংকট আমরা কাটিয়ে উঠবো।” 

এরপর বিচারক আবারও বলেন, “সব কথা তো বলা যায় না। একটা টিভি সেন্টারের জন্য যে বাজেট সেই বাজেটও এই মন্ত্রণালয় পায়না। এছাড়া আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জন্য কাজ তেমন আগায় না। বিচার বিভাগের উন্নয়নে আমলাতন্ত্র একটা বড় বাধা। এখনো আমরা পুরনো আইন যেসব ব্রিটিশরা তৈরি করে দিয়েছিল সেসবের মধ্যে আটকে আছি। আইনগুলো আপডেট করা দরকার। দেওয়ানি কার্যবিধি এমন যে একটা দেওয়ানি মামলা দিয়ে ১০০ বছরও ঘুরানো যায়। সারাদেশে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক সিভিল মামলা চলমান। আর বিচারক মাত্র তিনশ জন।”

এরপর আদালত আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

এর আগে গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) একই আদালতে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ পরিচালক মো.

জাহাঙ্গীর আলম। ওইদিন আদালত আসামি আনিসুল হকের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। 

এর আগে গত ১ জানুয়ারি আনিসুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ  মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

ঢাকা/মামুন/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পাবনার সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে বাস-ট্রাকসহ অন্তত ৪০টি গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে ঘটে এ ঘটনা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান।

এ বিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত দেড়টার দিকে ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাতরা। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ৪০ থেকে ৫০ জন হাসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। এসময় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ তাণ্ডব।

ডাকাতির কবলে পড়া আব্দুস সালাম নামে এক ইসলামী বক্তা ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে বলেন, কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করেছে। হুট করে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। বারবার গাড়িতে আঘাতের পর আমরা ড্রাইভারকে গেট খুলে দিতে বললে ডাকাতরা ঢুকে ড্রাইভারের গলা ও পেটে চাকু ধরে। একইভাবে অন্যদেরও জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে যায়। আমরা বলেছি, ভাই যা আছে সব নেন, কিন্তু কাউকে আঘাত কইরেন না। আমাদের গাড়িতে কাউকে আঘাত করেনি। অনুরোধ করায় আমার দুটি মোবাইল ফেরত দিয়ে যায়।

তিনি বলেন, একটি মাইক্রোতে করে দেশে ফিরছিলেন এক প্রবাসী। ওই গাড়িতে আক্রমণ করে কয়েকজনকে মারধর করে সব লুটে নিয়ে গেছে। একইভাবে সব গাড়িতে পর্যায়ক্রমে ডাকাতি চালায়। গাড়ি ভাঙচুর ও অনেককেই মারধর করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো বিস্তারিত জানি না। তবে ওই রাস্তাটি খুব বেশি ব্যস্ত না হলেও বেড়া-বাঘাবাড়ি হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেশকিছু গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যায়। এটি ডাকাতরা জেনেই গাছ ফেলে ডাকাতি করেছে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে না পারলেও কয়েকটি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনজে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল, সালমানসহ ৬ জন
  • সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে
  • সাভারে চলন্ত বাসে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংঙ্কার লুট
  • ‘চিকিৎসক হিসেবে সম্মান চাই’
  • যশোরে ট্রাফিককে মারধর করায় ছাত্রদল নেতা আটক
  • তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ মামুন মাহমুদের 
  • গোদনাইল মেঘনা ডিপোতে আসলাম মন্ডলের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৪
  • বন্দরে বিধবা নারীর ভিটেবাড়ি দখল করে উচ্ছেদ, প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
  • শরীয়তপুরে ডাকাতির ঘটনায় আরো এক জনকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ
  • পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি