হত্যা মামলার আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষীদের কোপানোর অভিযোগ
Published: 20th, January 2025 GMT
ঢাকার সাভারে একটি হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জেরে ছয়জনকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে জামিনে বের হয়ে আসা আসামিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে হেমায়েতপুরের জাদুরচর পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
আহতরা হলেন- সাভার উপজেলার হেমায়েতপুরের যাদুরচর এলাকার মোসা.
এর মধ্যে, আহমেদ সানিকে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, রবিবার বিকেল ৫টার দিকে হেমায়েতপুরের জাদুরচর পশ্চিমপাড়ায় অবস্থান করছিলেন সেলিনা আহমেদ। এ সময় আগের একটি হত্যা মামলার সাক্ষী হওয়াকে কেন্দ্র করে জামিনে মুক্ত হওয়া আসামি রকিবুল ইসলাম ফয়সাল (২৮) ও তার বাবা কিয়াম উদ্দিনের (৫৮) সহযোগিতায় রিপন (২৮), জিয়া (৪৬), সুজন (২০), জাহাঙ্গীর আলম (৩৬), আশরাফুল ইসলাম (১৯), রাফিউল ইসলাম (২০), মুরাদ হোসেনসহ (২৮) আরো ১০ থেকে ১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেলিনা আহমেদের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার বাঁ হাত জখম হয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তার ছেলে সানি, ভাই ফারুক, দেলোয়ার, শাহীন ও ভাতিজা আবিদ এগিয়ে গেলে তাদেরও চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেলিনা আহমেদ বলেন, ‘‘হেমায়েতপুরে সাহাবুদ্দিন হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বের হয়ে এসেছেন। ওই মামলার সাক্ষী আমার ছেলে আহমেদ সানি ও ভাই মো. শাহীন। এ কারণে তারা আমাদের কুপিয়েছে।’’
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/সাব্বির/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’