অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
Published: 20th, January 2025 GMT
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে প্রকাশিত ‘বিতর্কিত’ প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন একদল ব্রিটিশ এমপি। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই প্রতিবেদন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট– এমন অভিযোগ আসার পর তারা সেটি সরিয়ে নেন।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সাংবাদিক ও সাবেক কর্মকর্তাদের দমন করতে দেশের আইন ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি ইসলামি উগ্রপন্থিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবও তুলে ধরা হয়।
আরো পড়ুন:
টিউলিপকে দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যা দিলেন ইলন মাস্ক
টিউলিপ সিদ্দিকের স্থলাভিষিক্ত হলেন এমা রেনল্ডস
সেই প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়ার পর কর্মকর্তারা বলছেন, “এটি আর প্রকাশ করা হচ্ছে না এবং একজন লেবার এমপি হাউস অব কমন্সে এ সম্পর্কে অভিযোগ করার পরে এটি ‘পর্যালোচনার অধীনে’ রয়েছে। এটি ব্যাপকভাবে প্রচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি এবং এপিপিজি বিষয়টিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে না বা কোনো ফলো-আপ করবে না।”
এর আগে, এপিপিজির এই ‘বিতর্কিত’ প্রতিবেদন নিয়ে সমালোচনা করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সংসদ সদস্য (এমপি) রূপা হক।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “এপিপিজি ফর দ্য কমনওয়েলথের নামে বাংলাদেশের ইউনুস সরকার সম্পর্কে প্রকাশিত ‘একতরফা বর্ণনা’ ভুল তথ্য প্রচার করেছে এবং এটি যুক্তরাজ্য সরকারের নীতিকেও বিভ্রান্ত করেছে।”
স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার তিন মাস পর গত নভেম্বরে 'দ্য অনগোয়িং সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। ওই বিক্ষোভে আনুমানিক ১ হাজার জন নিহত হয়েছিল।
প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার উত্তরসূরি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে একের পর এক সমালোচনা করা হয়। এপিপিজির কনজারভেটিভ চেয়ার অ্যান্ড্রু রোজিনডেল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছেন, “বাংলাদেশের একটি চমৎকার ভবিষ্যৎ থাকা উচিত যেখানে সবার জন্য সুযোগ উন্মুক্ত থাকবে। তাৎক্ষণিক পরিবর্তন না হলে নতুন সরকার আন্তর্জাতিকভাবে যে সুনাম অর্জন করছে তা উড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।”
প্রতিবেদনে ড.
প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে, সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা, এমপি, সাবেক বিচারক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ওপর এত বেশি সংখ্যক হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা এসবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”
মূলত নয়াদিল্লিভিত্তিক একটি থিংকট্যাংকের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় ওই প্রতিবেদনটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভে মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে ৫ আগস্টের পর, যখন লাখ লাখ মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রাস্তায় নেমে আসে।
এই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারের পূর্ববর্তী একটি প্রতিবেদনের বিপরীত। গত আগস্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “বেশিরভাগ মৃত্যু ও আহতের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র সংগঠন দায়ী।”
সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন লেবার পার্টির এমপি রূপা হক। চলতি সপ্তাহে কমন্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সমালোচনা করে একে ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। রূপা হক দাবি করেন, প্রফেসর ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে প্রতিবেদনটি উত্থাপন করে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আপনার সরকার সংসদের নামে এসব মিথ্যাচার প্রকাশ করছে?’
লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক নাওমী হোসেন এ বিষয়ে বলেন, “প্রতিবেদনটি হয় মারাত্মক পক্ষপাতদুষ্ট কিংবা অত্যন্ত খারাপ বিশ্লেষণ। জবাবদিহিতার হাতিয়ার হিসেবে এটি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ।”
এপিপিজি’র একজন মুখপাত্র বলেছেন, “এই দলটি একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমনওয়েলথ অব নেশনসের দিকে একচেটিয়াভাবে মনোযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর সেজন্য, দেশ-নির্দিষ্ট প্রতিবেদন তৈরি করবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
শুক্র-শনিবার খোলা ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের প্রয়োজনে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএসসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান থাকায় নাগরিকত্ব সনদ এবং জন্ম-মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার ও শনিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা থাকবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক