ট্রাম্পের আশ্বাসে যুক্তরাষ্ট্রে আবারও চালু টিকটক
Published: 20th, January 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর টিকটককে ছাড় দিতে নির্বাহী আদেশ জারি করবেন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপটির সেবা চালু হয়েছে।
আজ সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি টিকটক নিষিদ্ধ করার আইন কার্যকর বিলম্বিত করতে নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে উদ্যোগ নেবেন।
গত শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় টিকটক। এর আগে গত বছরের এপ্রিলে মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটক নিষিদ্ধ করার আইনটির বিষয়ে টিকটক, বাইটড্যান্স ও কিছুসংখ্যক ব্যবহারকারী চ্যালেঞ্জ করেন।
কিন্তু টিকটক নিষিদ্ধ করার একটি আইন গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। এরপর চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। কেননা, আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে টিকটকের মালিকানা বিক্রি না করলে কোম্পানিটির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
ট্রাম্প আগে টিকটক নিষিদ্ধের পক্ষে ছিলেন। গতকাল রোববার নিজের সোশ্যাল ট্রুথে তিনি বলেন, ‘আমি কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ করছি যেন টিকটক বন্ধ না হয়। আইনি বাধ্যবাধকতায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আমি সোমবার (আজ) একটি নির্বাহী আদেশ জারি করব, যাতে আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি চুক্তি করতে পারি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট কটক ট কটক ন ষ দ ধ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চেহারা নিখুঁত করতে ১০০ বার অস্ত্রোপচার করিয়েছেন চীনা এই নারী
প্রথমবার যখন অ্যাবি উর অস্ত্রোপচার হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর।
হরমোনজনিত অসুস্থতার জন্য চিকিৎসা নেওয়ার পর অ্যাবির ওজন দুই মাসে ৪২ কেজি থেকে বেড়ে ৬২ কেজি হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় অ্যাবি তাঁর নাট্য ক্লাসের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার এই যে পরিবর্তন, সেটা তাঁর নাট্য শিক্ষকের চোখ এড়ায়নি।
তখনকার কথা মনে করে অ্যাবি বলেন, ‘আমার শিক্ষক বলেছিলেন, “তুমি তো আমাদের তারকা শিল্পী। কিন্তু এখন তুমি অনেক মোটা হয়ে গেছ। হয় ছেড়ে দাও, নয়তো দ্রুত ওজন কমাও।”’
অ্যাবির মা তখন তৎপর হলেন। তাঁকে পেট ও পা থেকে চর্বি অপসারণের জন্য লাইপোসাকশন করাতে নিয়ে গেলেন।
অ্যাবি যখন হাসপাতালের গাউন পরে অস্ত্রোপচারের জন্য বিচলিতভাবে অপেক্ষা করছিলেন, তখন তাঁর মা তাঁকে বলেছিলেন, ‘মনে সাহস রাখো এবং ভেতরে যাও। বের হওয়ার পর তোমাকে দারুণ দেখাবে।’
অস্ত্রোপচারটি ছিল যন্ত্রণাদায়ক। অ্যাবিকে কেবল আংশিক অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়েছিল এবং পুরো সময়টাতেই তাঁর জ্ঞান ছিল।
অ্যাবি বলেন, ‘আমার শরীর থেকে কতটা চর্বি বের করা হচ্ছে এবং আমি কতটা রক্ত হারাচ্ছি, তা আমি দেখতে পাচ্ছিলাম।’
এখন অ্যাবির বয়স ৩৫ বছর। এ সময়ের মধ্যে তিনি ১০০টির বেশি অস্ত্রোপচার করিয়েছেন, যার খরচ পাঁচ লাখ ডলার।
অ্যাবি এখন বেইজিংয়ের একটি বিউটি ক্লিনিকের অংশীদার। চীনে প্লাস্টিক সার্জারির উত্থানের ক্ষেত্রে অবদান রাখা উল্লেখযোগ্য মানুষের একজন হয়ে উঠেছেন তিনি।
তবে এতগুলো অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে তাঁর শরীরকে অনেক ধকল সইতে হয়েছে।
বেইজিংয়ে অ্যাবির বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, তিনি একটি আয়নার সামনে বসে মুখে কনসিলার লাগাচ্ছেন। সম্প্রতি মুখ পাতলা করার ইনজেকশন নেওয়ার কারণে তৈরি হওয়া দাগ ঢাকার চেষ্টা করছেন তিনি।
এ ইনজেকশনটি অ্যাবি প্রতি মাসে নেন যেন মুখ আরও টানটান ও কম মোটা দেখায়। এর আগে অতিরিক্ত হাড় কমাতে চোয়ালে তিনটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।
তবে এসব অস্ত্রোপচারের জন্য অ্যাবির মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই। তিনি মনে করেন, সে সময় তাঁর মায়ের সিদ্ধান্তটিই সঠিক ছিল।
অ্যাবি বলেন, ‘অস্ত্রোপচারগুলো কাজে দিয়েছে। আমি দিন দিন আরও আত্মবিশ্বাসী ও সুখী হয়ে উঠেছি। আমি মনে করি, আমার মা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন।’
অ্যাবি উর নাকজুড়ে পুরু করে বাদামি প্লাস্টার লাগানো এবং মুখের বড় একটা অংশ ঢেকে রাখা। তাঁর চিবুক পর্যন্ত সাদা ব্যান্ডেজ মোড়ানো আর মুখের কিছু অংশে ক্ষত ও রক্তের চিহ্ন।
ট্যাবু ভেঙে গত ২০ বছরে চীনে প্লাস্টিক সার্জারি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আয় বৃদ্ধি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বদল আসার কারণে এমনটা হয়েছে।
প্রতিবছর চীনের দুই কোটি মানুষ কসমেটিক সার্জারির জন্য অর্থ খরচ করেন।
চীনে প্লাস্টিক সার্জারির প্রতি আগ্রহ সবচেয়ে বেশি তরুণীদের মধ্যে। পরিসংখ্যান বলছে, যাঁরা এ ধরনের অস্ত্রোপচার করাচ্ছেন তাঁদের ৮০ শতাংশই নারী। তাঁদের গড় বয়স ২৫ বছর।
চীনা সংস্কৃতিতে সৌন্দর্যের গুরুত্ব বরাবরই ছিল, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে সৌন্দর্য নির্ধারণের মানদণ্ডে পরিবর্তন আসছে।
বছরের পর বছর ধরে চীনে সৌন্দর্যের মানদণ্ডগুলো পশ্চিমা আদর্শ, অ্যানিমে কল্পনার সৌন্দর্য এবং কে-পপ তারকাদের অনুপ্রেরণার একটি মিশ্রণ ছিল। এই সৌন্দর্য ধারণার মূল বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল—ডাবল আইলিড, ছাঁটা ও খাঁজকাটা চোয়াল, চোখে পড়ার মতো নাক এবং নিখুঁত মুখাকৃতি।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে কষ্টকর প্রক্রিয়াগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অবাস্তব ও অতিরিক্ত নারীসুলভ এবং বয়স কম দেখানোর মতো সৌন্দর্যের ধারণার পেছনে ছোটা হচ্ছে।
এখন কানের পেছনে বটক্স ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, যেন কান সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়ে এবং মুখ ছোট ও কোমল দেখায়।
নিচের চোখের পাতায় অস্ত্রোপচারও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চোখ বড় ও উজ্জ্বল দেখাতে এমনটা করা হয়। এটা একধরনের নিষ্পাপ ও শিশুসুলভ চেহারা তৈরি করে।
তবে এ সৌন্দর্যের অনেকটাই তৈরি করা হয় পর্দায় প্রদর্শনের জন্য। ফিল্টার ও রিং লাইটের আলোয় এসব রূপান্তরকে নিখুঁত ও দৃষ্টিনন্দন বলে মনে হয়। তবে বাস্তব জীবনে এই মুখগুলোকে অদ্ভুত মনে হয়। এমন এক মুখ, যা মানুষের মতো নয়, আবার শিশুর মতোও নয়।
প্রথমবারের মতো অ্যাবি উর যখন অস্ত্রোপচার হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর