জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছিল সৌম্য সরকারের। দিনের পর দিন স্কিল নিয়ে কাজ করেও লাভ হচ্ছিল না। সেই সৌম্যকে লাইফলাইন দেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পাওয়ার পর ঢাকায় এসে ডেকেছিলেন বাঁহাতি এ ব্যাটারকে। সৌম্য সফল হলেন নিউজিল্যান্ডে। হাথুরুসিংহে বরখাস্ত হয়ে ফিরে গেলেও ওপেনারকে রেখে গেছেন আস্থার জায়গায় । গতকাল চট্টগ্রামে বিপিএল, জাতীয় দল, ভালো-খারাপ সময় ও হাথুরুসিংহের সুযোগ দেওয়া নিয়ে মন খুলে কথা বলেছেন সৌম্য সরকার। শুনেছেন সেকান্দার আলী।
সমকাল : আঙুলের চোটের আপডেট কী?
সৌম্য: হাতের আঙুলের চোট আস্তে আস্তে ভালোর দিকে। এখন ভাঁজ করতে পারছি। ব্যাট হাতে নিচ্ছি। নেট করছি। চোট পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করছি। দিনে দিনে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে কবে নাগাদ ম্যাচ খেলতে পারব, নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না।
সমকাল : রংপুর রাইডার্সের ম্যানেজমেন্ট বলেছে, পরের ম্যাচেই খেলবেন?
সৌম্য: ওই রকম নির্দিষ্ট না। যেহেতু এখনও ছয় দিন আছে, চেষ্টা করব খেলতে। না হলে ঢাকার দ্বিতীয় পর্ব থেকে খেলব।
সমকাল: সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। প্রস্তুতি তো আলাদা হবে-
সৌম্য: অবশ্যই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনেক বড় টুর্নামেন্ট। ওটার জন্য ভালো প্রস্তুতি থাকবে। তবে ওটা নিয়ে এখনই ভাবছি না। যেহেতু ইনজুরিতে ছিলাম, কীভাবে সুস্থ হবো, তাই প্রথম লক্ষ্য। বিপিএল দিয়ে ম্যাচে ফিরব। টুর্নামেন্ট শেষ হলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি শুরু করব।
সমকাল : চোট পরিচর্যার সময়ে কী কী করেন?
সৌম্য: আমি যেমন চেষ্টা করেছি নিজের আগের ব্যাটিংগুলো দেখার। কারণ হলো ব্যাট তো হাতে নিতে পারতাম না। খেলোয়াড় হিসেবে বাসায় বসে খেলা দেখা অনেক কঠিন ও কষ্টের। আগে তো এসব নিয়েই চিন্তা করতাম।
সমকাল : বিপিএলে ৮টি ম্যাচ মিস করেছেন।
সৌম্য: ঈশ্বর যেটা করে, ভালোর জন্যই করে। সবকিছু আমার জন্য ভালোও হতে পারে। হ্যাঁ, কষ্ট তো লাগেই। খেলোয়াড় সব সময় খেলতে চায়। চোট পেয়েছি, এটাও খেলার অংশ।
সমকাল: সৌম্য নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। হাথুরুসিংহে এসে তাঁকে ফিরিয়েছেন। সাবেক কোচের কাছে কি একটু কৃতজ্ঞ?
সৌম্য: অবশ্যই। তিনি এসে আমাকে ডেকেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমার খেলাকে খুব ভালো বোনে তিনি। মাঝখানে আমি অনেক কোচের সঙ্গে কাজ করেছি। হয়তোবা কোনো একটি জায়গা মিসিং ছিল। মেন্টালি হতে পারে, স্কিলে হতে পারে। স্কিলে কোনো কিছু পরিবর্তন করা হয়নি। তাঁর কথাগুলো আমাকে জাগিয়ে তুলেছে। আমার ব্যাটিংয়ের জন্য যেটা অনেক ভালো হয়েছে। আমি আগে কী ছিলাম, ওটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য কথাবার্তা বলেছেন। তিনি আমাকে উজ্জীবিত করেছেন, কিন্তু কাজগুলো তো আমাকেই করতে হয়েছে। আসলে আমি প্রসেসগুলো অনুসরণ করেও সফল হতে পারিনি। হয়তো মানসিক চাপ নিয়ে ফেলেছিলাম। এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করাতে ছন্দে ফিরতে পেরেছি। আসলে আমি হয়তো আমার জিনিসগুলো না নিয়ে অন্য জিনিস নিয়ে বেশি চিন্তা করতাম।
সমকাল: নিউজিল্যান্ডে বড় সেঞ্চুরি করাই কি নিজেকে ফিরে পাওয়ার ইনিংস?
সৌম্য: আমি বলব, আগে যে দুই ইনিংসে শূন্য করেছি তার ভূমিকা বেশি ছিল। রান করাটা তো সবাই দেখেছে। কিন্তু রান যে করিনি, সেখানে উপলব্ধি ছিল। একজন কোচ এসে আমাকে সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু রান করতে পারিনি। একটা সুযোগ দেওয়ার পরও আমাকে নিউজিল্যান্ডে নিয়ে গেছে। সেখানেও শূন্য করেছি প্রথম ম্যাচে। পরের ম্যাচে যে আমাকে খেলানো হয়েছে, সেটা বিরাট ব্যাপার ছিল। আমি
ওখানে বসে গেলে খেলতেই পারতাম না। আমার শেষ ইনিংস ছিল। কোচের সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, ‘তোমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ। আমার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমি তোমাকে নিয়েছি এবং খেলাচ্ছি।' এ জন্যই বলছি- ওই রানের থেকেও বেশি টার্নিং পয়েন্ট ছিল দুটি শূন্য।
সমকাল : ওয়ানডে দিয়ে দলে ঢুকে এখন তো টি২০ও খেলছেন। দলে থিতু হতে পারবেন?
সৌম্য: দেখেন, দলে থিতু হওয়ার জন্য খেললে স্বার্থপর গেম খেলতে হবে। আমি আমার মতো করে খেলতে পারলে,
সব সংস্করণে খেলতে পারব। চার দিনের ক্রিকেটেও ভালো খেলছি। ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে সবই খেলতে চাই। আগে খেলেছিও। হ্যাঁ, টেস্ট ক্রিকেটে আমার গড় হয়তো অত ভালো না, ৩০-এর কাছাকাছি। কিন্তু দেখবেন আমি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচগুলো খেলেছি মিরপুরে। এখানে দলের রানই হয়েছে ১০০। ওখানে খেলে তো ব্যাটারের গড় বাড়বে না। ওখানে খেলে যে কোনো ব্যাটার বাদ পড়তে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম য সরক র র জন য সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই
দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’
এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’