জাবিতে পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগ কর্মী
Published: 20th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই রাতের আঁধারে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার সময় শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মীদের সহায়তায় তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটক হওয়া ছাত্রলীগ কর্মীর নাম শরীফুল ইসলাম সোহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (৪৯ ব্যাচ) এবং আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শরীফুল ইসলাম সোহান। বেলা সাড়ে ১২টায় হলে প্রবেশ করে পরীক্ষায় বসেন। খবর পেয়ে শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সোহানকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার প্রতিবাদ জানান এবং তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিচারের দাবি জানান। তবে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বলেন। এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবির মুখে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষকদের ইন্ধনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর আগেও ৪৭ ব্যাচের আরেক ছাত্রলীগ নেতা এভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলার ঘটনার বিচারের আশ্বাস ৬ মাস ধরে দিয়ে আসলেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে পারেনি৷ এসব হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
এ নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো.
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘গত জুলাই মাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা অভিযুক্তদের যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি, সেই প্রতিবেদনে সোহানের নাম আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ ও ১৭ জুলাই হামলার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলা তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব শ ব জ ঞ ন ব ভ গ কর ম দ র ন ত কর ম ছ ত রদল পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
জামালপুরে বাস সেবা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধীদের মহাসড়ক অবরোধ
জামালপুরের প্রতিনিয়ত রাজীব পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রতিবাদ ও বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী শহরের বাইপাস এলাকায় জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশের আশ্বাসে বেলা ৩টা ২০ মিনিটে আজকের মতো অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাইপাস এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর সামনে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একদল শিক্ষার্থী রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের সামনেই রাস্তায় আড়াআড়িভাবে দুটি মোটরসাইকেল রাখা। তাঁদের পেছনে বসার বেঞ্চ রাখা। এতেই সড়কের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন যানবাহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজীব পরিবহনের বাস জামালপুর-ঢাকা যাতায়াত করে। ওই পরিবহনটি বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট। তারা উন্নত মানের সেবার কথা বললেও ন্যূনতম সেবাও যাত্রীরা পান না। এই পরিবহনের বাস লক্কড়ঝক্কড়, বাসের সিট ভালো না, অনেক বাসের জানালা ভাঙা, চালকদের লাইসেন্স নেই, অদক্ষ চালক, চালক-হেলপারসহ শ্রমিকদের ব্যবহার খুব খারাপ। বাসগুলো জামালপুর শহর থেকে মুক্তগাছা পর্যন্ত বেপরোয়া চলাচল করে। এর পর থেকে বাসগুলো কচ্ছপগতি চলাচল করে। যেখানেই যাত্রীরা হাত উঠাবে, ওই বাস সেখানেই থেমে যাবে। মাত্র চার ঘণ্টার পথ এই বাসে লাগে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। জামালপুরবাসীর গলার কাঁটা এই বাস সার্ভিসটি। কোনো ধরনের সেবা না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া ঠিকই নিয়ে থাকে। কারণ, তারা একক বাস সার্ভিস। এই সিন্ডিকেটের কারণে বড় বড় বাস কোম্পানি জামালপুরে চলতে পারে না।
সড়ক অবরোধের সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আফরিন জান্নাত ও মুকুল হোসাইন এবং সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আবিদ।
বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই পরিবহনের চালক ও শ্রমিকদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বাস সার্ভিসের সংস্কার করতে হবে। প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বাসের ভাড়া কমাতে হবে। লক্কড়ঝক্কড় বাস বাতিল করে ভালো বাস দিতে হবে। এসব দাবি মানা না হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা সড়কটি ছেড়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর এলাকায় জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজীব পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।