গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে ভোগান্তি গ্রীষ্মে ভোগাবে আরও
Published: 19th, January 2025 GMT
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন ও চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে বছরখানেক ধরে আন্দোলন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা। আলোচনা-বিক্ষোভের মাধ্যমে চলতে থাকা আন্দোলন গত অক্টোবরে চরম আকার ধারণ করে। বিদ্যুৎ শাটডাউনের মতো ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে কঠোর অবস্থানে যায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত, তাৎক্ষণিক বদলি ও মামলা করা হয়। শেষ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে সরকার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে আরইবি ও পবিসির মধ্যে এখনও দ্বন্দ্ব মেটেনি। এতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা না হলে গ্রীষ্মে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা খাত-সংশ্লিষ্টদের। কারণ গরমে ঘন ঘন ট্রান্সফরমার পুড়ে, বিতরণ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়। সময়মতো এসব দুর্ঘটনার সুরাহা না হলে গরমে দীর্ঘ সময় ভুগতে হবে গ্রাহককে। ৮২টি সমিতির মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহক তথা প্রায় ১২ কোটি জনগণকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আরইবি।
বোর্ড ও সমিতি একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং স্থায়ী পদের বিপরীতে চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করার দাবিতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরু করেন সমিতির কর্মীরা। বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রেখে কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন তারা। বোর্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর কোনো সমাধান না হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগ গত আগস্টে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করে। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, আরইবির অসহযোগিতা ও বিদ্যমান সিস্টেম বহাল রাখার ইচ্ছার কারণে ওই কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আগের দাবিতেই ৩০ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মানববন্ধন এবং প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন পবিসের কর্মীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদের দমাতে ১৬ অক্টোবর সমিতির ১০ কর্মকর্তাকে নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত এবং সেদিন রাতেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে আরইবি। পরদিন সমিতিগুলোর বিক্ষুব্ধ সদস্যরা বিভিন্ন পবিসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়ে। অনেক অঞ্চলে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন আলোচনা এবং তাৎক্ষণিক কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে আরইবি আরও ১৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে। সংস্থাটির তিন মামলায় ১৭১ জনকে আসামি এবং ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্ট্যান্ড রিলিজ ও ওএসডি করা হয় আরও অর্ধশতাধিক কর্মীকে। গ্রেপ্তার কর্মীদের মধ্যে বর্তমানে দু’জন ছাড়া বাকিরা জামিনে মুক্ত আছেন।
এ ঘটনার পর অন্তর্বর্তী সরকার ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে আহ্বায়ক করে ৫ সদেস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটি ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে পবিসগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছে। এখন আরইবির সঙ্গে আলোচনা করছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত নভেম্বর থেকে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল আজিম বিভিন্ন সমিতি পরিদর্শন করেন এবং কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কর্মীদের পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিচ্যুতদের স্বপদে বহালের অনুরোধ জানানো হয়। চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। গত ১২ ডিসেম্বর কারাবন্দি ৯ কর্মকর্তা জামিনে মুক্তি পান। পরে সমিতির পক্ষ থেকে আরইবির চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। পরে গত ৭ জানুয়ারি চেয়ারম্যান বরখাস্ত করা কর্মীদের চাকরি পুনর্বহালের আবেদন চিঠির মাধ্যমে নাকচ করে দেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত এক মাসে কয়েক ধাপে বিভিন্ন সমিতির প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে। সদ্য বদলি হওয়া কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (আইটি) জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমি জানান, তাঁর বাড়ি শরীয়তপুরে। আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কিছুদিন আগে তাঁকে মাদারীপুর থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট সমিতিতে বদলি করা হয়। নারী হওয়া সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানের এ আচরণ প্রতিহিংসামূলক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরইবির কেনাকাটায় দুর্নীতি
আরইবির কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নিম্নমানের মিটার কেনার কারণে গ্রাহক প্রায়ই ভূতুড়ে বিলের শিকার হচ্ছেন। বিতরণ লাইন ও এর মালপত্র কেনাকাটায়ও সংস্থাটি অনিয়ম করে বলে জানা গেছে। মাঠ পর্যায়ের পবিসের কর্মীরা বলেন, ট্রান্সফরমার, বিতরণ লাইনের বিভিন্ন মালপত্র এতই নিম্নমানের হয় যে প্রায়ই সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এতে গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে সমিতির লোকজনের ওপর হামলা করে। কিন্তু কেনাকাটা তো বোর্ড করে, তা গ্রাহক বোঝে না।
সূত্র জানিয়েছে, একটি প্রকল্পের আওতায় ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পণ্য সরবরাহ করেছে দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ডব্লিউজিএল পাঁচটি ও এইচইএল ছয়টি সমিতিতে পণ্য সরবরাহ করেছে। একই প্রকল্পের আওতায় একই কাজের জন্য পণ্য সরবরাহ করলেও প্রতিষ্ঠান দুটির দামে বিস্তর ফারাক। ডব্লিউজিএল প্রতিটি কম্পিউটার ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকায় দিয়েছে; এইচইএল সরবরাহ করেছে ৫৭ হাজার টাকায়। এভাবে প্রিন্টার, নেটওয়ার্ক রাউটার, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ডব্লিউজিএল এইচইএলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দামে আরইবিকে গছিয়ে দিয়েছে।
সূত্র বলেছে, গত ১৫ বছরে আরইবির কেনাকাটায় এমন পুকুরচুরি হয়েছে। বিশেষ করে প্রিপেইড মিটার সরবরাহে বড় ধরনের জালিয়াতি হয়েছে। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের আত্মীয়স্বজনের সিন্ডিকেটসহ কয়েকটি কোম্পানি মিটার, ট্রান্সফরমার ও পোল সরবরাহ করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে।
এসব বিষয়ে আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল আজিম জানান, সমিতির সমস্যা ও দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকার গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে। তারা যে সুপারিশ করবে, সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড.
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, সমিতির সদস্যরা যেমন বৈষম্যের শিকার, তেমনি আন্দোলনের কারণে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার খবর মিলছে। আরইবি আর সমিতির দ্বন্দ্ব চলতে থাকলে গরমে গ্রাহকের ভোগান্তি আরও বেড়ে যেতে পারে।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আরইবি সবচেয়ে বড় বিতরণ কোম্পানি। আমরা তার কর্মীদের উৎকণ্ঠা নিয়ে অবহিত। একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পেলে সরকার সে অনুসারে ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ সরবর হ সরবর হ ব কর ম দ র ত র কর ম কর ম র গ র হক সরক র ব তরণ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজি ও মজুতদারি বন্ধ করতে না পারায় নিত্যপণ্যের দাম কমাতে ব্যর্থ সরকার
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি বন্ধ ও মজুতদারি বা অযৈাক্তি মূল্য নির্ধারণের মতো অনিয়ম মোকাবিলা করতে পারেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই নিত্যপণ্যের দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ না নিলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।
আজ বুধবার ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫: সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ফাহমিদা বলেন, সিপিডির পর্যবেক্ষণে পেঁয়াজ, আলু, বেগুন, ডিম, রুই মাছ, হলুদ, গম, মসুর ডাল, চিনি, গরুর মাংস, রসুন, আদা, সয়াবিন তেল এবং পাম তেলসহ ১৪টি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খল বিশ্লেষণে দামের ওঠানামা এবং অদক্ষতার জন্য বেশ কিছু বাধা দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে, প্রাথমিক বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে মজুতদারি, কমিশন এজেন্ট বা গুদাম পরিচালনাকারীদের আধিপত্য, অপর্যাপ্ত কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা এবং কৃষি পদ্ধতি, উচ্চ উপকরণ খরচ, নিম্নমানের সংরক্ষণ এবং পরিবহন সুবিধা এবং সামগ্রিক সরবরাহকে প্রভাবিত করে এমন অপ্রত্যাশিত আবহাওয়া।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, চালের বাজার ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত জটিল। সে কারণে সিপিডি চালের সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা নিরূপণের জন্য মাঠ পর্যায়ে একটি অনুসন্ধানমূলক জরিপ পরিচালনা করে, বিশেষ করে মাঝারি-পাইজাম চাল। যার লক্ষ্য ছিল প্রধানত দামের যে অস্থিরতা তার মূল কারণগুলো সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করা।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, চাল সরবরাহ ব্যবস্থায় অসংখ্য বাজার এজেন্ট রয়েছে। বাজার মূল্যের ওপর গুদাম মালিকদের বা অটো রাইস মিলারদের উল্লেখযোগ্য আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। ফলস্বরূপ ধান চাষীরা প্রায়শই সঠিক দাম পান না। কিন্তু ভোক্তারা অযৌক্তিকভাবে উচ্চ মূল্যের সম্মুখীন হন, যার ফলে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে সিপিডি বলছে, বাংলাদেশে পূর্ববর্তী কর্তৃত্ববাদী সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে একটি অকার্যকর অর্থনীতি রেখে গেছে, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঠিক করতে হবে। বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলের বিশ্লেষণে মধ্যস্থতাকারীদের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
সিপিডি বলছে, অর্থনীতিতে মুল্যস্ফীতির চাপ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধির অনুমতি দিয়েছে এবং নীতি সুদহারও বৃদ্ধি করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির বোঝা কমাতে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সরবরাহ-পক্ষীয় ব্যবস্থাও বাস্তবায়ন করেছে, যেমন ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের মাধ্যমে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করা এবং ঢাকার ভেতরে ও বাইরে ন্যায্য মূল্যের বাজার প্রতিষ্ঠা করা। তবে দুঃখের বিষয় হলো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে চাঁদাবাজি, মজুদদারি বা অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের মতো অনিয়ম মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলি এখনও পর্যন্ত বাজারে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সংস্থাটি আরও বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার যদি প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী এবং জরুরি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।
রাজস্ব প্রসঙ্গে সিপিডি বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩.৭ শতাংশ যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৭.৭ শতাংশ অর্থাৎ এখানে উল্লেখযোগ্য অবনতি দেখা গেছে।
২০২৫ অর্থবছরের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অর্থবছরের বাকি সময় ৪৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে যা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। সামগ্রিকভাবে কর রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক। কর রাজস্বের দুটি উৎসেই (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত ও বহির্ভূত) একই চিত্র দেখা গেছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ওই সময়ে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক আহরণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে শ্লথগতি এর বড় কারণ। কর রাজস্ব আহরণের পরিস্থিতি বহুলাংশেই সরকারকে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে ধাবিত করেছে। তবে আইএমএফের শর্তপূরণের চাপও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান উচ্চ-মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ মোটেই কাম্য নয়। কারণ পরোক্ষ কর সকল ধরনের আয়ের মানুষের জীবনেই প্রভাব ফেলে।