নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে আব্দুর রহমান হৃদয় নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার চৌমুহনী পৌর ভূমি অফিসের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুর রহমান হৃদয় উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকার মো. সেলিমের ছেলে। তিনি পেশায় ফার্নিচার মিস্ত্রি। 
হৃদয়ের ছোট ভাই মো.

রিফাতের ভাষ্য, কিছুদিন আগে হৃদয়ের বন্ধু আশিকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ধার নেন চৌমুহনী পৌরসভার গোলাবাড়িয়া এলাকার শাহ আলমের ছেলে বাবু। এর পর টাকা ফেরত চাইলে বাবু টালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে আশিক বিষয়টি বাবুর বড় ভাই রনিকে জানান। এতে বাবু ক্ষিপ্ত ও প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার রাতে আশিকের বন্ধু হোসেন ও সাগরকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করেন। রাত সোয়া ১১টার দিকে বিষয়টি জানতে পেরে তাদের উদ্ধার করতে সমবয়সী চাচা রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন হৃদয়। পরে পৌর ভূমি অফিসের সামনে পৌঁছলে বাবুর সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবু হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে। তখন হৃদয়কে রক্ষায় এগিয়ে এলে রাসেলকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে চৌমুহনী 
লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মোহাম্মদ ইব্রাহিম সমকালকে বলেন, মামলা দায়েরের পর জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করবে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে 
পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীর ৪ গ্রামে রোজা শুরু

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রথম তারাবির নামাজ আদায় ও সাহরি খেয়ে পবিত্র রমজানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার চার গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামগুলোতে প্রায় শত বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা-ঈদ পালন হচ্ছে। 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তারাবি ও সাহরি খান গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। আজ শনিবার (১ মার্চ) থেকে প্রথম রোজা রেখেছেন তারা।

গ্রামগুলো হলো- নোয়াখালী সদর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিণারায়নপুর, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রাম।

আরো পড়ুন:

চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে রোজা শুরু

ছোলার দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা

জানা গেছে, বড় পীর আবু মুহম্মদ মহিউদ্দীন সৈয়দ আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) এর মতাদর্শে তৈরি হয় কাদেরিয়া তরিকা। কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিণারায়নপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগেই রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। 

কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী নোয়াখালী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আবদুল আজিম বলেন, ‍“আমার বাড়িতে দরবার শরীফ। প্রতি বছর আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা শুরু করি। ঈদ একদিন আগেই পালন করি  হোক সেটা ঈদুল ফিতর কিংবা ঈদুল আজহা। আমরা সবাই আনন্দ করি এবং একে অন্যের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি।”

হাসেম নামে অপর একজন বলেন, “ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত প্রথম চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজ রাখি। আমরা বিশ্বের যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করি। আমরা পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার খবর পেয়েছি। আমরা নিজেরাও খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। তারাবির নামাজ আদায় করেছি। ভোররাতে সাহরি খেয়ে রোজা শুরু করেছি।”

রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফে ঈদুল ফিতরের জামায়াতের ইমামতি করেন রহিমিয়া রশিদিয়া আল কাদেরিয়া দরবার শরীফ চট্টগ্রামের খাদেম আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, “পূর্বপুরুষদের থেকে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদ উদযাপন করি। রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফে এটা উদযাপনের ইতিহাস প্রায় ১০০ বছরের বেশি হবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীর ৪ গ্রামে রোজা শুরু