Samakal:
2025-04-24@16:49:52 GMT

ভাগাড়ের দখলে মহাসড়ক

Published: 19th, January 2025 GMT

ভাগাড়ের দখলে মহাসড়ক

জায়গায় জায়গায় ময়লার স্তূপ। কোথাও আবার উপচে পড়ছে চলাচলের পথের ওপর। দেখে মনে হয়, ভাগাড় যেন দখলে নিয়েছে মহাসড়ক আর রেলপথ।
এমন পরিস্থিতিই নজরে পড়ে পটিয়া পৌর সদরের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কঘেঁষা শ্রীমাই ব্রিজ নামক এলাকায়। ময়লার স্তূপে ছোট ছোট টিলার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের এক পাশ পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে। প্রতি মুহূর্তে সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে গোটা এলাকায়। কাক আর কুকুর মুখে করে সেখানকার আবর্জনা ছড়িয়ে দিচ্ছে সর্বত্র। শ্রীমাই ব্রিজ এলাকা হয়ে মহাসড়কে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। ঝুঁকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কৃষিসহ স্থানীয় প্রাণ-প্রকৃতি।
জানা গেছে, পটিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২৪ বছরেও এ এলাকায় আদর্শ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়নি। ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত এই পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অন্যতম ব্যর্থতা হিসেবে প্রতীয়মান এ বিষয়টি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ধারিত কোনো ডাম্পিং না থাকায় বিপাকে পড়েছেন পৌরসভার বাসিন্দারা। এতে করে অপরিকল্পিতভাবে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পৌর সদরের শ্রীমাই এলাকায়। ব্যস্ততম এলাকার খোলা স্থানে ময়লার স্তূপ জমায় বাতাসে ছড়াচ্ছে রোগজীবাণু। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
রোববার শ্রীমাই ব্রিজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের এক পাশ দখল করে আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলরত লোকজন ওই স্থানে আসতেই দুর্গন্ধে অস্থির হয়ে পড়েন। রীতিমতো ভাগাড়ে পরিণত হওয়া এই এলাকার পাশেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ। বর্তমানে কক্সবাজারে আসা-যাওয়া করা পর্যটকরা এই ভাগাড়ের দুর্গন্ধ সঙ্গী করেই চলাচল করছেন।
কয়েক বছর ধরে ময়লা ফেলায় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড শ্রীমাই ব্রিজের পাশের জায়গাটি এমন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, কার্টন, ককশিট, কাগজ, পলিথিন, বস্তা, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য, উচ্ছিষ্ট খাবার সব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এলাকাজুড়ে। সড়কের পাশে ময়লা ফেলায় পথচারী ও রেলযাত্রীদের ভোগান্তি সীমাহীন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কয়েক বছর ধরে রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় এভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। দুর্গন্ধের জন্য চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। ভাগাড় বানিয়ে ফেলা হয়েছে মহাসড়কের পাশে।
স্থানীয় বাসিন্দা এস এম রিদোয়ান কবির জানান, মহাসড়ক দিয়ে পটিয়া পৌর সদর বা অন্য কোনো স্থানে যাওয়ার জন্য ময়লার স্থানে আসার আগেই নাক-মুখ চেপে ধরতে হয়। অনেকদূর পর্যন্ত দুর্গন্ধে অস্থির এলাকার মানুষ। পৌরসভার এদিকে নজর দেওয়া খুব দরকার। 
পথচারী তৌহিদুল ইসলাম জুয়েল জানান, এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ময়লার গন্ধে পথচারীদের চলাচলে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি গাড়ি চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে। এসব সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করা উচিত।
বাহুলী এলাকার বাসিন্দা শাহেদুল ইসলাম  মুন্না বলেন, এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। আস্তে আস্তে ময়লার পরিমাণ বেড়েই চলছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক পুলক দাশ জানান, যাত্রী নিয়ে এ রাস্তা ধরে যাতায়াত করাই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অনেকে এমন দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পৌরসভার সব বর্জ্য বা ময়লা ফাঁকা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা উচিত।
ময়লার স্তূপের অর্ধকিলোমিটার পরেই পটিয়া সরকারি কলেজ, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও এস আলম স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিত্য দুর্ভোগের কারণ এই ময়লার স্তূপ। শিক্ষার্থী ফয়সাল, নিগারসহ অন্যরা জানায়, স্কুলে যাওয়া-আসা করার পথে ময়লার গন্ধে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বে অনেকেই। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব জানান, মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় বাতাসের মাধ্যমে বিভিন্ন 
রোগ-জীবাণু ছড়ায়। শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে মানুষের মাঝে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান জানান, ময়লার স্তূপ থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান বৃষ্টির পানিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে খালে গিয়ে মেশে। সেই পানি সেচকাজে ব্যবহার করলে ফসল উৎপাদনে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। 
এই সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় ইউএনও ও পৌর প্রশাসক ফারহানুর রহমানের সঙ্গে। এ বিষয়ে তিনি পৌর প্রশাসকের কার্য সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের জন্য সমন্বয় কমিটির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প প রসভ র সড়ক র প এল ক য় র জন য এল ক র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’

অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।

সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ