Samakal:
2025-03-03@17:32:17 GMT

খানাখন্দে বেহাল সড়ক

Published: 19th, January 2025 GMT

খানাখন্দে বেহাল সড়ক

সংস্কারের অভাবে কমলগঞ্জ-আদমপুর বেহাল সড়কে দুর্ভোগ বেড়েছে। সড়কটির ৫ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সড়কটি মেরামতের জন্য দুই বছর আগে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও আর্থিক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে  কাজটি করা হয়নি। ফলে সড়কটি মেরামত না হওয়ায় দিন দিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির অর্থায়নে উপজেলার চৌমুহনী থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছরে রাস্তাটিতে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, ততই বিশাল হচ্ছে সড়কের ভাঙা অংশ।
রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে এলজিইডি, মৌলভীবাজার সড়কটি মেরামতের  জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। ওই ঠিকাদার বাজারে পাথর ও বিটুমিনের দাম বাড়ার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাজটি না করে সরকারি বিধি অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে চলে যান। ফলে রাস্তাটি মেরামত করতে হিমশিম খাচ্ছে এলজিইডি বিভাগ।
আদমপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শাব্বির এলাহী ও নীলু সিংহের অভিযোগ, প্রায় ৩ বছর আগে থেকেই কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আদমপুর, ইসলামপুর, কমলগঞ্জ সদর ও আলীনগর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি জেলা ও উপজেলা সদরে চলাচল করে। ছয় বছর আগে সড়কটি একবার সংস্কার করা হয়েছিল। এর পর মেরামত না করায় সড়কের অনেক স্থানে বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটির আলেপুর নামক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আদমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার  এলাকাজুড়ে সড়কে কার্পেটিং উঠে গেছে। সড়কজুড়ে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।
অটোরিকশাচালক হোসেন আলী জানান, এই রাস্তার জন্য কিছু একটা না করলে তারা না খেয়ে মরবেন। রাস্তার দুরবস্থার কারণে যাত্রী পাচ্ছেন না। উপার্জন প্রায় বন্ধ। এই রাস্তায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। মাইক্রোবাসের চালক রহিম জানান, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে গাড়ির ক্ষতি হয়। প্রায়ই যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করতে হয়। এতে খরচ বেড়েছে, যা রোজগার হয় সবই গাড়ি সারাতেই খরচ হয়ে যায়।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন জানান, রাস্তাটি মেরামতের জন্য বারবার সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন। এর পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সাঈফুল আজম জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেশি থাকায়  ঠিকাদার কাজ করতে রাজি হননি। পরে আবারও রাজস্ব খাত থেকে মেরামতের চেষ্টা করলেও টাকা বেশি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

এডিপি বাস্তবায়নে সুপারিশ উপেক্ষিত, ৩ বছরে ব্যয়ের লক্ষ্য ৯,০৮,৬০০ কোটি টাকা

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি)-এর গতি বাড়াতে অর্থ বিভাগ ২০১৮ সালে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছিল। গত ছয় বছরেও সেগুলোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ফলে এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উন্নয়নখাতে তিন বছরে ৯,০৮,৬০০ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়াতে ২০১৮ সালে  অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং কমিটির সভায় বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছিল অর্থ বিভাগ। এ সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল- অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগের অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পের বিপরীতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা; নতুন অগ্রাধিকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান না হলে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে বা স্থগিত রেখে নতুন প্রকল্পে অর্থায়ন করা; সর্বোচ্চ বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্ত ১০০টি প্রকল্পে বৈদেশিক সাহায্যের ছাড় ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক নিয়মিত পরিবীক্ষণ সভা করা; দক্ষ প্রকল্প পরিচালকের অভাব পূরণে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে চুক্তিভিত্তিক প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা এবং প্রবৃদ্ধি সহায়ক ১০টি বড় প্রকল্প সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা। 

জানা গেছে, এই সুপারিশগুলো এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন লক্ষ্য অনুযায়ী হচ্ছে না।

এদিকে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য আগামী তিন অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) খাতে ৯ লাখ ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খরচ করার প্রাথমিক লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এরমধ্যে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে এডিপির আকার হবে দুই লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে তা সামান্য বাড়িয়ে প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এরপর ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে তা ৪৩ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে তিনলাখ ৪১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন বেশ খারাপ। এটি অর্থবছরের পুরোটা জুড়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে । কারণ চলতি অর্থবছরে জুলাই- জানুয়ারি পর্যন্ত ( সাত মাস) এডিপি বাস্তবায়ন হার অর্ধেকের কাছকাছি যাওয়া সম্ভব হয়নি। এ পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরের এডিপি আকার খুব কম করে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন আগামী অর্থবছরে এডিপির আকার চলতি অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগে কখনো ঘটেনি। সব সময় এডিপির আকার অন্ততপক্ষে ৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জন্য যে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি হাতে নেওয়া হয়েছিল বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে এর সিংহভাগ অর্থই খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চলতি অর্থবছরের এডিপি মোটা অঙ্কের কাটছাট করা হচ্ছে। কাটছাটের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপি’র আকার নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে মূল এডিপি থেকে সংশোধিত এডিপি’র আকার কমেছে ১৮ শতাংশ। এটিও একটি রেকর্ড। এর আগে খুব কম সময়ই এডিপি এতো পরিমাণ কমানো হয়েছে।

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের জন্য একটি বড় আকৃতির এডিপি হাতে নিয়েছিল বিগত রাজনৈতিক সরকার। এই এডিপিতে অনেক রাজনৈতিক প্রকল্প ছিল, যা তত্বাবধায়ক সরকার কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বাস্তবায়ন স্থগিত করে রেখেছে। ফলে এডিপি বাস্তবায়ন হারও বেশ কমে গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এডিপি চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মূল এডিপি তো নয়ই, সংশোধিত এডিপিও পুরোটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সংশোধিত এডিপি’র সর্ব্বোচ্চ ৯৫ ভাগ বাস্তবায়ন করা গেছে। অর্থ বিভাগের করা ‘অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২২’ তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে সবচেয়ে বেশি এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে, ২০১৭-২০১৮ এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে। এই দুই অর্থবছরে সংশোধিত এডিপি’র বাস্তবায়ন হার ছিল ৯৫ শতাংশ। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম বাস্তবায়নের বছর ছিল ২০১৯-২০২০ অর্থবছর। এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল মাত্র ৮০ শতাংশ।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংশোধিত এডিপি ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমল
  • ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
  • পাওনা আদায়ে রিংশাইন টেক্সটাইলের ৬টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল
  • প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ
  • ফেব্রুয়ারির ইতিহাসে রেকর্ড রেমিট্যান্স
  • রোজার আগের মাসে প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • রিং সাইনের অর্ধবার্ষিকে লোকসান বেড়েছে ৬ শতাংশ
  • মৌলভীবাজারে লোকালয়ে হরিণ আটক
  • এডিপি বাস্তবায়নে সুপারিশ উপেক্ষিত, ৩ বছরে ব্যয়ের লক্ষ্য ৯,০৮,৬০০ কোটি টাকা
  • রিংসাইন টেক্সটাইলের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ