ঢিমেতালে চলছে কাজ, গতি বাড়ানোর তাগিদ কৃষকের
Published: 19th, January 2025 GMT
ছাতক উপজেলায় হাওরে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) এসব বাঁধের কাজে যথাযথ গতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকের।
স্থানীয় বোরো চাষিরা বলছেন, প্রকল্পগুলোর কোথাও ২০ ভাগ, আবার কোথাও মাত্র ২৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে পিআইসির দাবি, পুরো উপজেলায় শনিবার পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ।
কমিটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, কিছু কিছু এলাকায় মাটি সংগ্রহ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে পিআইসিকে।
এসব প্রকল্পের অধীনে চলমান কয়েকটি
কাজই কেবল দৃশ্যমান। এর বাইরে অধিকাংশ বাঁধের কাজের গতি একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হাওর অঞ্চলের কৃষকদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বাঁধ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হোক।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নভেম্বরের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠনের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় এ অঞ্চলে কমিটি গঠনে বিলম্ব হয়। বাঁধের কাজের জন্য এলাকার স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে পিআইসি গঠন করার কথা থাকলেও এবার অধিকাংশ পিআইসি গঠন করা হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়– এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় অনেক কৃষক।
জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়কাপন এলাকার বাসিন্দা পিআইসির প্রকল্পের সভাপতি এলাক উদ্দিন জানান, কমিটি গঠন শেষে কার্যাদেশ পাওয়ার পর হাওরে বাঁধের কাজ দ্রুতগতিতেই চলছে। মাটি ভরাটের কাজ প্রায় ৪০ ভাগ শেষ। এরপর মাটি স্তূপ ও ড্রেসিংয়ের কাজ শুরু হবে।
ছাতক উপজেলা ছাড়াও দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর পর্যন্ত বোরো ফসল রক্ষায় ডেকার হাওরের বাঁধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি ক্লোজার হিসেবে পরিচিত। এর মুখ দিয়ে বন্যার পানি ঢুকতে পারলে সব ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। কমিটির সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে পারবেন।
একই ইউনিয়নের দেবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা পিআইসি সভাপতি মমশ্বর আলী ফোরকান জানান, কুড়িবিলের ক্লোজারটির কাজ দ্রুতগতিতেই চলছে। স্থানীয় পাউবো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রকল্পের কাজ তদারকি করা হচ্ছে। তাদের দাবি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।
দক্ষিণ বড়কাপন এলাকার বাসিন্দা পিআইসি সভাপতি তাজউদ্দিন জানান, প্রকল্পের মাটি অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করতে গিয়ে ভরাটের কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এখানে বাঘারাই মেইন রাস্তার পাশে একটি কবরস্থান থাকায় বাঁধ নির্মাণকাজে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। মাটি ভরাট শেষ হলে বাকি কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।
উপজেলার ২৮টি পিআইসির মধ্যে নোয়ারাই ইউনিয়নের অতিগুরুত্বপূর্ণ নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় মাছুখাল ক্লোজারটির কাজ এখন পর্যন্ত শুরু করা যায়নি। মূলত এখানে খালের মুখ দিয়ে পানিপ্রবাহ বেশি থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডেকার হাওরের একাধিক কৃষক বাঁধের কাজের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক বাঁধের কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। এসব কাজে নিয়মিত তদারকিও করা হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ পুরোনো বাঁধে কোনোমতে মাটি দিয়ে তড়িঘড়ি কাজ শেষ করার পাঁয়তারা চলছে। বাঁধের কাজ ভালো না হলে পানিতে কৃষকের কষ্টের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো.
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কাবিখা কমিটির সদস্য সচিব মাসুম চৌধুরী জানান, হিসাব অনুযায়ী সবক’টি প্রকল্পে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে ফিনিশিং, ডাম্পিং ও ড্রেসিংয়ের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাবিখা কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম জানান, পিআইসিগুলোর প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতেই। উপজেলা কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির পক্ষ থেকে নিয়মিতই কাজ দেখভাল করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সবক’টি বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রমতে, কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিভিন্ন হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ ১৫ ডিসেম্বর শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। পাউবো কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে মোট ২৮টি প্রকল্পের অধীনে বোরো ফসল রক্ষার জন্য নোয়ারাই, জাউয়াবাজার, চরমহল্লা, দক্ষিণ খুরমা ও সিংচাপইড় ইউনিয়নে ৩ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প র ক জ ক জ শ ষ কর র ত সময় র কম ট র স এল ক র উপজ ল প আইস
এছাড়াও পড়ুন:
শুক্র-শনিবার খোলা ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের প্রয়োজনে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএসসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান থাকায় নাগরিকত্ব সনদ এবং জন্ম-মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার ও শনিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা থাকবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক