১৮ মাস ধরে ঘোরে না অ্যাম্বুলেন্সের চাকা
Published: 19th, January 2025 GMT
২০২৩ সালের ২২ জুলাই অ্যাম্বুলেন্সচালক মো. আব্দুস সালেক মিয়াকে বদলি করা হয়। এর পর আর নতুন চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে কম খরচে অ্যাম্বুলেন্সের সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজারো রোগী। অধিক ভাড়া দিয়ে বেসরকারি মালিকানার অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসে করে গুরুতর রোগীদের অন্য হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এমন চিত্র গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
জানা গেছে, প্রায় ১৮ মাস ধরে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতি মাসে গড়ে শতাধিক রোগী সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি সচল ও একটি অচল অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাড়া দিতে হতো ১ হাজার ১২০ টাকা। অথচ এখন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে দিতে হচ্ছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো.
স্থানীয় বাসিন্দা, রোগী ও স্বজনরা বলছেন, যোগদানের ছয় মাস না যেতেই বদলি হচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। চারজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। রোগীর স্বজন মো. সেলিম মিয়ার ভাষ্য, এখানকার শৌচাগার ব্যবহার করা যায় না। সুপেয় পানির অভাব, নলকূপ নষ্ট। খাবারের মান ভালো না। ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। দু’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় অধিক ভাড়া দিয়ে ব্যক্তিমালিকানার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর ভাইকে রংপুরে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, তিনি গত সপ্তাহে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেছেন। অ্যাম্বুলেন্সের চালকসহ মেডিকেল অফিসারের কয়েকটি পদ শূন্য থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে তাঁর চালক মাঝেমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছেন।
সারাদেশেই অ্যাম্বুলেন্সচালক সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধার সিভিল সার্জন কানিজ সাবিহা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে সিভিল সার্জনের কিছু করার নেই। তার পরও বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রহ্মপুত্রে যাত্রীবাহী নৌকায় ফের ডাকাতি
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক মাসের ব্যবধানে ব্রহ্মপুত্র নদে আবারো নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে কড়াই বরিশালের যুগ্নি ধোয়া নদের মোহনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চিলমারী নৌ-বন্দরের নৌ ঘাট মাষ্টার সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে নৌ মাঝি বদিউজ্জামানের নৌকাটি ৩৪ জন যাত্রী নিয়ে চিলমারী থেকে রাজিবপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নৌকাটি চিলমারী ইউনিয়নের ও গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জের নদের মোহনা এলাকায় পৌঁছালে নৌকাটি ডাকাতের কবলে পড়ে। এ সময় ১৫-১৬ জনের মুখোশধারী একটি ডাকাতের দল যাত্রীবাহী নৌকার গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা ও সকল যাত্রীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
রাজিবপুর নৌ-ঘাটের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ডাকাতি শেষে ইঞ্জিন চালু করার হ্যান্ডেল ও তেলের ট্যাঙ্ক খুলে নিয়ে ডাকাত দল সুন্দরগঞ্জের দিকে চলে গেলে ডাকাতির কবলে পড়া নৌকাটি যাত্রীসহ চরে আটকা পড়ে। পরে খবর পেয়ে চিলমারী নৌ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে রাজিবপুর থেকে আসা একটি নৌকায় তুলে দেয়।”
নৌকাটির যাত্রী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমি ১৬ দিন রংপুর মেডিকেলে ভর্তি ছিলাম। বুধবার বাড়ি ফেরার পথে নৌ-ডাকাতির কবলে পড়লাম। ডাকাতরা ১৫ জনের মতো ছিলো। তাদের হাতে বন্দুক, রামদা, শাবল ছিলো। আমাদের নৌকার সব যাত্রীদের জুতা, জ্যাকেট, টাকা-পয়সা, গয়না সব নিয়ে গেছে। কয়েকজনকে মারধর করেছে।”
ঘটনা এক ঘণ্টা পর চিলমারীর নৌ-থানার পুলিশ এসে ঘটনার বর্ণনা লিখে নিয়ে গেছে। পরে ডাকাতের কবলে পড়া নৌকাটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজিবপুর ঘাটে গিয়ে পৌঁছায়।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে ইজতেমায় আসার পথে অস্ত্রের মুখে একটি নৌ-ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সাক্ষী না পাওয়া ও কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
চিলমারী নৌ থানার উপ-পরিদর্শক সেলিম সরকার বলেন, “এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমরা বিষয়টি জানার পর যাত্রীদের জন্য আরেকটি নৌকায় ব্যবস্থা করে দিয়েছি।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “২১ ডিসেম্বর নৌ-ডাকাতির ঘটনার কোনো সাক্ষী বা ভুক্তভোগী পাওয়া যায়নি।”
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পুলিশ সুপার জানান, নৌ ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিয়মিত নৌ-পথ নিরাপদ রাখতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকা/বাদশাহ্/ইমন