বাংলাদেশের আইসিটি খাতে সাফল্য, সম্ভাবনা ও আগামীর গতিশীল বিশ্বের বৈশ্বিক ডিজিটাল হাবে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা উপস্থাপনে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
আইসিটি খাতের বক্তারা ‘বাংলাদেশ : দ্য ইমার্জিং আইসিটি পাওয়ার হাউস’ শিরোনামে সেমিনারে এসব নিয়ে কথা বলেন।
সভায় বেসিস প্রশাসক ড.

মুহম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসিস ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮টি সদস্য থেকে শুরু করে বর্তমানে ২ হাজার ৬৫০টি সদস্য প্রতিষ্ঠানের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠনে রূপান্তর হয়েছে। সুদীর্ঘ যাত্রায় কয়েক লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির সঙ্গে বিশ্বমানের স্থানীয় উদ্ভাবনী পণ্য ও পরিষেবা তৈরি করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩৭টির বেশি দেশে ৮ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার আইসিটি পরিষেবা রপ্তানি করেছে।
নতুন উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করতে, সহযোগিতা বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সব স্টেকহোল্ডারকে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
মূল বক্তব্যে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বাস্তবায়নে সুদক্ষ জনশক্তি তৈরি সবচেয়ে জরুরি। দেশে বিপুল পরিমাণ মেধাবী যুবশক্তি রয়েছে, যাদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। লক্ষ্য অর্জনে বেসিস সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্ব নিশ্চিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলতি বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেটা আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) নকশা বাস্তবায়ন, সঠিক আইসিটি মাস্টারপ্ল্যানের রূপকল্প প্রণয়ন ও সবকটি অপরিকল্পিত হাইটেক পার্কের সংস্কার করে তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোকে মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। ভাবমূর্তি বিনির্মাণ, আগের গৃহীত সব প্রকল্পের পর্যালোচনা ও শক্তিশালী ডেটা গভর্ন্যান্স কাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে ৫ শতাংশ অবদান রাখার লক্ষ্য অর্জন করার কথা বলেন বক্তারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস ট

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে। 

আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
 
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
 
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
 
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
 
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
 
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
 
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ