বিএম কলেজে গ্রাফিতি মুছে ফেলায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
Published: 19th, January 2025 GMT
ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ শিক্ষার্থীদের আঁকা জুলাই অভ্যুত্থানের বেশ কিছু গ্রাফিতি মুছে দিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল নিয়ে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এসময় বিএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের রঙে লেখা নাম ও গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়। এ ঘটনার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা। এসময় তারা কলেজ অধ্যক্ষ ড.
বিএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুজয় সরকার বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে বিএম কলেজের বাম সংগঠনের নেতাদের নামে মামলা করে কার্যক্রম বন্ধ করতে চেয়েছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি ও দুই সংগঠনের নাম রাতের আঁধারে মুছে দেওয়া সেই ফ্যাসিস্ট আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ। ভিন্নমত দমনের প্রচেষ্টা। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা পরিপন্থী কাজের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান নষ্টের পাঁয়তারা চলছে। তাই দ্রুত এই ন্যাক্কারজনক কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসনের কাছে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিএম কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক বিজন শিকদার বলেন, “এই কর্মকাণ্ড স্বৈরাচারী আচরণেরই নামান্তর। ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রগতিশীল সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এবং ছাত্র ইউনিয়ন বিগত ১৭ বছরে ছাত্রলীগের এসব আচরণ, হামলার শিকার হয়েছে। এই সময়েও এসেও ফ্যাসিবাদী আচরণের মুখোমুখি হতে হবে তা ভাবিনি।”
বিএম কলেজ ছাত্রদল নেতা ওয়ালিদ বিন সালাউদ্দিন বলেন, “ক্যাম্পাসে শতভাগ রাজনৈতিক সহঅবস্থান চায় ছাত্রদল। আমরা চাই নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ বাদে সব দল তাদের স্বাধীন মত প্রকাশ করুক। এ জন্যই জুলাই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছি। জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতিসহ দুই ছাত্রসংগঠনের নাম মুছে ফেলা রাজনৈতিক অধিকার হরণ। এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।”
বিএম কলেজ অধ্যক্ষ ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত দুই জনের নাম জানিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শনাক্তে কাজ শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে যে যার মত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, অন্যের কাজে কেউ বাঁধা দিতে পারবে না। এমন কাজ কোন শিক্ষার্থী যেন না করে।”
ঢাকা/পলাশ/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠন র ন ত র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাফিয়া বসদের মতো’ আচরণ করেছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ঘটনা বৈশ্বিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে ইউরোপের গণমাধ্যমেও।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই ইউরোপীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রধান সংবাদ এখন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠক। জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা করে ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ওভাল অফিসে রাষ্ট্রনায়কের মতো আচরণ করেননি, বরং ‘মাফিয়া বসদের’ মতো আচরণ করেছেন।
ফরাসি দৈনিক লে ফিগারো ট্রাম্পকে একজন রুশ শাসকের সঙ্গে তুলনা করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, ‘আমেরিকাতে এখন একজন জারের খেলা খেলছেন, যিনি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ভুলেছেন এবং পশ্চিমাদের পতন চান।’ ফরাসি দৈনিকটি আরও বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগামী শাসনামল সম্পর্কে এখান থেকে ধারণা পাওয়া যায়।
যুক্তরাজে্যর সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ বলেছে, ‘পশ্চিমা ঐক্য অপরিহার্য বলেই মনে হচ্ছে।’ পত্রিকাটি আরও লিখেছে, এই উত্তপ্ত বাগ্বিতণ্ডার ভয়াবহ দৃশ্য দেখে ব্রিটেন এবং ইউরোপের যে কেউ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে।
ইতালির সংবাদপত্র কোরিয়ের ডেলা বলেছে, ‘ইউরোপ এখন নিজেদের সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কাকে সত্য হতে দেখছে। কিয়েভকে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আটলান্টিকের অপর পারে যাদের বন্ধু ভাবা হতো, তারা আদতে বন্ধু নয়।’
স্প্যানিশ সংবাদপত্র এল পাইস লিখেছে, ‘ওভাল অফিস থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা এসেছে, তা হলো যদি আমাদের জরুরি প্রয়োজন ও নিরাপত্তা সম্পর্কে কোনো সংশয় থাকে, তাহলে বিশ্বে আমাদের বন্ধু কারা, সেই বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’
সুইজারল্যান্ডের সংবাদপত্র নিউ জুরচার জেইতুং পরামর্শ দিয়ে লিখেছে, ‘যদি ইউরোপীয়রা সত্যিই ইউক্রেনে টেকসই শান্তি চায়, তাহলে সম্ভবত তাদের নিজেদেরই নেতৃত্ব নিতে হবে, আমেরিকান আশ্বাসে ভরসায় থেকে নয়।’
জার্মানির ডের স্পিগেল পত্রিকা লিখেছে, ‘ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আলোচনা দেখে মনে হয়েছে, আমরা একটি নতুন বিশ্বে বাস করছি। পশ্চিমা বিশ্বে এখন তার পুরোনো শীর্ষ বন্ধুর কবল থেকে বের হয়ে আসার সময় হয়েছে।’