যোগদানের ১০ দিনের মাথায় ওএসডি হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খোন্দকার কামাল হাসান। আজ রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি যশোর শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসাবে পদায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

এদিকে, কামাল হাসানের স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড.

আসমা বেগমকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পৃথক আদেশে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ড. আসমা ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।

ড. খোন্দকার কামাল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর আশির্বাদপুষ্ট, শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। দুই মাস আগে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন ওএসডি হন খোন্দকার কামাল হাসান। সেই বিতর্কিত ব্যক্তিকে দুই মাসের ব্যবধানে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করে পুরস্কৃত করা হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষক নেতারা।

জানা যায়, ১৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ব্যাচের খোন্দকার কামাল হাসান ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে মেহেরপুর সরকারি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালের নভেম্বরে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে বদলি হন। ২০১১ সালে বগুড়ার গাবতলী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। ৫ বছর পর সরকারি আজিজুল হক কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে বদলি হন। ২০১৮ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন।

অভিযোগ রয়েছে, মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন এমপি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী পরবর্তীতে মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি পান। তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তৎকালীন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশেই ২০২৩ সালে ১৪ নভেম্বর বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন খোন্দকার কামাল হাসান। যোগদানের পর ১৮ নভেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ওই সময় শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারতের ছবি কলেজের অফিসিয়ালি ফেসবুক আইডি ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন খোন্দকার কামাল হাসান। ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ওপর ককটেল হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। কামাল হাসান ছাত্রলীগের পক্ষে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১১ মাস অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিতর্কিত ভূমিকা ও আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তাদের তোপের মুখে শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেন। দুই মাস পরেই তাকে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে পদায়ন করে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ বিএনপি-জামায়াতের ত্যাগী শিক্ষকরাও। অবশেষে আজ যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি করা হলো ড. কামাল হাসানকে।

যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর খোন্দকার কামাল হাসান বলেন, বদলি এটা চাকরির নিয়ম। এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমার দুই ছেলেও অংশ নিয়েছিল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওএসড র সরক র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

তেল ছাড়াই মিনিবাস চলছে নন্দীগ্রামের রাস্তায়  

তেল মবিল ছাড়াই বগুড়ার নন্দীগ্রামের রাস্তায় চলছে ব্যাটারিচালিত ছোট আকারের মিনিবাস। গাড়িটি চার চাকার হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক কম বলে জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা। শুক্রবার সকালে নন্দীগ্রাম-দাসগ্রাম রাস্তায় এই মিনিবাস দেখা যায়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১২ সিটের এই মিনিবাসটিতে যাত্রী বসার জন্য ১১টি ও ডাইভারের জন্য রয়েছে একটি সিট। গাড়িতে উঠানামার জন্য রয়েছে পাঁচটি আলাদা আলাদা গেট। আলো-বাতাস চলাচলের জন্য জানালার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে ওই গাড়িতে। গাড়ির সিটগুলো বেশ আরামদায়ক। এজন্য যাত্রীরা খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই যাতায়াত করতে পারছেন। 

ছোট আকারের মিনিবাসে যাতায়াত করা যাত্রী সাব্বির হোসেন বলেন, আমি এ রকম ছোট মিনিবাস কোথাও দেখিনি। এই গাড়ি চলার সময় কোনো শব্দ নাই। গাড়িতে বসার সিটগুলো খুব ভালো। যাতায়াতের জন্য এই মিনিবাস অনেক আরামদায়ক। 

গাড়ির চালক ও মালিক আবু মুছা জানান, নন্দীগ্রামে আমিই প্রথম ছোট মিনিবাস এনেছি। এই গাড়ি বানিয়ে নিতে আমার ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। ঠিকমতো গাড়ি চালালে প্রতিদিন দেড় হাজার টাকার বেশি ভাড়া আসে। একবার ব্যটারিতে চার্জ দিলে ১শ ২০ কিলোমিটারের বেশি চলে। ভালো রাস্তা হলে ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলে। ব্যাটারিতে চার্জ দিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকার বিদ্যুৎ লাগে। এ গাড়ি দেখতে অনেকেই আসছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ