৪৫ বছর আগে ভারতে যান চটগ্রামের মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া। সেখানকার নাগরিকত্ব নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বাংলাদেশের বাড়িতে পাসপোর্টের মাধ্যমে যাওয়া-আসা করেছেন। দেড় বছর আগে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে অবৈধপথে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ফেরার পথে ভারতের
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে। 

ভারতে কারাভোগ শেষে ইদ্রিস মিয়া দেশে ফিরেছেন। তার সঙ্গে দেশে ফেরেন ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়েও। তিনিও সেখানে কারাগারে ছিলেন। এই দুইজন রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

দেশে ফেরত আসা ইদ্রিস মিয়ার (৭০) বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বকতারপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবেদুর রহমানের ছেলে। ১৬ বছর বয়সী মেয়েটির বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায়। প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যান তিনি। 

আরো পড়ুন:

বিএসএফের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন: বিজিবি

অনিশ্চিত বুমরাহকে রেখেই ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা

চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসেন। ফেরার পথে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে। পরে সেখানকার আদালত তাকে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার নরসিংগরস্থ ক্ষণস্থায়ী আটক কেন্দ্রে পাঠান।

ফেনীর সোনাগাজীর ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরী প্রায় নয় মাস আগে অবৈধভাবে ভারতের যান। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে আদালতে নিয়ে যান। আদালত তাকে ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী জেলার উদয়পুরস্থ অবজারভেশন হোম ও স্পেশাল হোমে রাখার নির্দেশ দেন। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র হস্তান্তর শেষে তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। আজ সন্ধ্যায় তাদের আগরতলা-আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ইমিগ্রিশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ পাঠানো হয়। 

এসময় আখাউড়া সীমান্তে আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর শরীফ, স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো.

শফিকুল ইসলাম, বিজিবির নায়েব সুবেদার মো. মালেকুল ইসলাম, বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার অভিষেক শিং উপস্থিত ছিলেন।

কিশোরীর বাবা জানান, তার স্ত্রী বেঁচে নেই। সৎ মা কষ্ট দিতে পারে বলেই দ্বিতীয় বিয়ে করেননি তিনি। নয় মাস আগে কখন যে সে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কার সঙ্গে ভারতে গিয়েছে তা তিনি জানেন না। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মেয়ের কোনো সন্ধ্যান পাননি তিনি। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার সাতদিন পর তিনি জানতে পারেন যে, মেয়ে ভারতে আটক হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমি শ্বশুর বাড়িতে থাকি এবং পেশায় দিনমজুর। মেয়েকে নিতেই আখাউড়ায় এসেছি। আমার একটাই মেয়ে। মেয়েকে কাছে পেয়ে এখন অনেক খুশি আমি।”

আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, ‍“১৯৮০ সাল থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে ছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া। সেখানে চাকরিরত অবস্থায় তিনি ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র তিনি যোগাড় করেন।
ভারতের পাসপোর্ট দিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এক পর্যায়ে তার পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। সেসময় তিনি অবৈধ পথে বাংলাদেশে যাতায়াত শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরার পথে ত্রিপুরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হন। আদালতে হাজির করা হলে তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি বলে স্বীকার করেন। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার ভারতের নাগরিকত্বের সব নথিপত্র নিয়ে কারাগারে পাঠান “ 

তিনি আরো বলেন, “প্রেমের টানে বিয়ে করতে ভারতে চলে আসে ওই কিশোরী। ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আটক করে তাকে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাকে জেল জারিমানা না করে উদয়পুর অবজারভেশন হোমে রাখার সিদ্ধা নেন। পরে কিশোরীর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে তাকে দেশে পাঠানো হয়।”

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ক

এছাড়াও পড়ুন:

টঙ্গির মাজার বস্তি এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৬০

টঙ্গির মাজার বস্তি এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা মাদকবিক্রেতা, মাদকসেবী ও অন্যান্য অপরাধী বলে জানানো হয়েছে। এদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মাদক ও দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে ।

শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যার পর গাজীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যৌথবাহিনীর সহায়তায় টঙ্গির মাজার বস্তি এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে গাজীপুর ও উত্তরা ক্যাম্পের সেনাসদস্যরা, র‌্যাব, জিএমপি পুলিশ অংশ নেয়। তাদের ভাষ্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি রোধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই অভিযান চালানো হয়। 

গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম বলেন, “অভিযানকালে মাদক বিক্রি, সেবন ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় নগদ অর্থ, বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ও দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

ঢাকা/রেজাউল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা দৌড়াচ্ছে, ভারী বুট পরা পুলিশ তার পিছনে দৌড়াতে পারে না
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক: স্বরাষ্ট্র সচিব
  • নারীর ধূমপান, মব জাস্টিস এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ডেভিল দর্শন
  • রাজধানীতে ৭১ চেকপোস্টে গ্রেপ্তার ১৬০
  • রমজানে আরও জোরদার হচ্ছে অভিযান, থাকছে না ‘ডেভিল হান্ট’ নাম
  • বাড়ছে অপরাধ, কমছে প্রশাসনে আস্থা
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে ১৬ সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে যেসব সিদ্ধান্ত নিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৬ সিদ্ধান্ত
  • টঙ্গির মাজার বস্তি এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৬০