কেন্দ্রীয় সভাপতির উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশন এর কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর জেলা কার্যালয়ে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। 

জুলাই গণহত্যার বিচার, শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি শুধুমাত্র একটি দাবিই নয় এটি সমাজে ন্যায়বিচার ও ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ছাত্র সমাবেশ ও র‌্যালি সফল করার লক্ষ্যে এ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। 

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনার সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা মশিউর রহমান খান রিচার্ড। সভার শুরতে লড়াই সংগ্রামের সকল শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, এ আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ তৈরীর প্রথম ধাক্কা। এ ধাক্কায় যাদের জীবন গেছে,যারা এখনো মৃত্যুর সাথে লড়ছে তাদের সুচিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত না হলে এ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবে রুপ নেবে না।

জুলাই গণহত্যার বিচার, শহীদদের পূর্ণাঙ্গ  তালিকা,আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি শুধুমাত্র একটি দাবিই নয় বরং এটি সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে। এই দাবি বাস্তবায়নে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলার জন্য এবং ৩১ জানুয়ারির ছাত্র সমাবেশ ও র‌্যালী সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা বলেন, আমরা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। এই আন্দোলনে যাদের আত্মত্যাগের ফলে এই অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে এবং ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদীর পতন ঘটেছে, আমাদের উচিৎ সেসকল  আত্মত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করা।

নতুবা, এই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন কখনোই সম্ভব না! আমরা দেখবো অভ্যুত্থানের পর ৫ মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও এখনো এই আন্দোলনের সকল শহীদ এবং আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশিত হয়নি! শহীদ পরিবারকে এখনো নানান দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।

আমরা দেখবো শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমরা অঞ্চলগুলোতে যেই স্মৃতিস্মারক নির্মান করার কথা বলে আসছি তার কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না! আমরা আরো জোড় দাবি জানিয়ে আসছি আহতদের সুচিকিৎসা এবং পূণর্বাসন নিশ্চিত করার। এবং আন্দোলনে গণহত্যার সাথে জড়িত সকল সরকারী, প্রশাসনিক ব্যক্তিসহ সকল দোষীদের যথাযথ বিচারের আওতায় আনা।

আমরা দেখবো, এই ৫ মাসেও এই দাবীগুলোর কোনো যথাযথ দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না! অতএব, আমরা বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন থেকে ৩১ জানুয়ারীর মহা ছাত্রসমাবেশের মধ্য দিয়ে এই বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে স্পষ্টভাবে হুশিয়ার করতে চাই।

আমরা বলতে চাই, অভ্যুত্থানের পক্ষের সরকার হিসেবে তাদের প্রধান কাজগুলো এগুলোই হওয়ার কথা ছিলো যা বাস্তবায়নে তারা এখনো অবদি অক্ষম হয়েছে। ফলে দ্রুততম সময়ে যদি তারা এসকল কাজের বাস্তবায়ন করতে না পারে তাহলে তারাও অভ্যুত্থানের বিপক্ষের শক্তি হিসেবে নিজেদেরকে দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করবে। 

ফলে আগামী ৩১ তারিখের এই ছাত্রসমাবেশ অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারন সম্পাদক সৃজয় সাহার সঞ্চালনায় কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি সৌরভ সেন,সহ সাধারণ সম্পাদক ইউশা ইসলাম,সাংগঠনিক সম্পাদক মৌমিতা নুর, অর্থ সম্পাদক শাহিন মৃধা, রাজনৈতিক শিক্ষা বিষক সম্পাদক মুক্ত শেখ,কার্যকরি সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস নিসা। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সদস্য সচিব আবিদ রহমান, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল আহাদ,সদস্য ইসরাত জাহান মীম,তাহমিদ আনোয়ার, জয়ন্ত সরকার, তোলরাম কলেজের সংগঠক রাইসা ইসলাম,মুন্নি আক্তার প্রত্যাশা, সিয়াম হোসেন তপু, ভোলাইল শাখার আহ্বায়ক মাহাদি হাসান,যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপ্নীল শোভন,সদস্য রাকিব, সরকারি কদম রসুল কলেজের সংগঠক অনামিকা চৌধুরি,আরাফ হোসাইন সহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল উপস থ ত আহতদ র সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন ও গণ অধিকার পরিষদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণ অধিকার পরিষদ। আজ বুধবার বিকেল সোয়া চারটায় গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বৈঠক শেষে পৃথক বক্তব্যে এ বিষয়ে মতৈক্যের কথা জানান দল দুটির শীর্ষ নেতারা।

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদ তাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।

আরও কয়েকটি বিষয়ে দুই দল একমত হয়েছে বলে জানান মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে নারীর অধিকারবিষয়ক সংস্কার কমিশনের ‘ইসলাম ধর্মবিরোধী’ প্রস্তাব বাতিল, গণহত্যা, খুনসহ টাকা পাচারকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, ফ্যাসিবাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঠেকাতে আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটি ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র গঠন এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের আয়োজন ইত্যাদি।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘গত ৫৩ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের মাধ্যমে দেশে কোনো সুন্দর রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠা পায়নি। পেশিশক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচনের মাধ্যমে অযোগ্য লোকজন ক্ষমতায় বসে দেশকে বিভিন্ন কায়দায় অশান্ত করেছিল। সে জন্য আমরা পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছি।’

এ সময় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, কিছু মৌলিক সংস্কার না হলে দেশে আবার স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সৃষ্টিসহ নানা ধরনের সংকট তৈরি হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নির্মম গণহত্যা পরিচালনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাচ্ছি। তাদের রাজনীতিও এ দেশে হওয়া উচিত নয়। তাদের বিচারের বিষয়ে গতি আনার ক্ষেত্রে (ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে) একমত হয়েছি।’

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও গণ অধিকার পরিষদ অনেক আগে থেকেই একমত বলে জানান নুরুল হক। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে যাঁরা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও নির্বাচন বাতিল করা দরকার।

নুরুল হক বলেন, ‘গত আট মাসে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি না থাকায় সেবা পেতে মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কিছু মানুষ জোর করে আধিপত্য বিস্তার করছে। সে জন্য স্থানীয় নির্বাচন মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারে কিছু সময়ের প্রয়োজন। আবার জাতীয় ঐকমত্যেরও প্রয়োজন। অন্তত তার আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে।’

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ভৌগোলিক কারণে বিদেশি আগ্রাসন যাতে এ দেশের রাজনীতির কলকাঠি নাড়াতে না পারে, সে জন্য আধিপত্যবাদমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র তৈরির বিষয়ে বৈঠকে মতৈক্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি এমন রাষ্ট্র হবে, যেখানে ইসলামী আদর্শবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা হবে না।’

এর আগে বেলা তিনটায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন দুই দলের নেতারা। বৈঠকে গণ অধিকার পরিষদের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মুখপাত্র ফারুক হাসান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদের সভাপতি হাসিবুর রহমান, আইনজীবী নুরে এরশাদ ও সাকিব হোসেন।

অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইউম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
  • তিন সপ্তাহের মধ্যে আজহারের মুক্তি ও সব মামলা প্রত্যাহার না হলে মাঠে নামবে শিবির
  • পোপ ফ্রান্সিসের শেষ আহ্বান কেউ কি শুনবেন
  • জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন ও গণ অধিকার পরিষদ
  • চানখাঁরপুলে গণহত্যার মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ২৫ মে তারিখ ধার্য
  • স্ট্রোক করে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতাল যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল রোগীর
  • আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা
  • ছবি তুললেই লাঠিপেটা, বনানীতে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩৩