জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের একটি কক্ষ থেকে আটক বহিরাগত যুবক আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের এক আবাসিক ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) জেফরুল হাসান চৌধুরী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযুক্ত যুবক আশরাফুল ইসলাম পারভেজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি থানা হেফাজতে আছে। আগামীকাল সোমবার তাকে আদালতে চালান করে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় অর্পা খন্দকারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ-২০১৮ এর ৪(১)(খ) ধারা অনুযায়ী  সাময়িক বহিষ্কার করে তাকে পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড.

এ বি এম আজিজুর রহমান। 

এর আগে,  শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে হলে প্রবেশ করেন আশরাফুল। এ সময় তার কপালে টিপ, পরনে পালাজ্জো ও ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে হলের কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হলে বিষয়টি হল সুপারকে জানানো হয়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অর্পা খন্দকার চাঁদনীর কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানার বাসিন্দা। আটকের পর রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, রাত ১১টার দিকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সাথে কপালে টিপ, মুখে ঘোমটা দিয়ে প্রবেশ করে ওই যুবক। এসময় তার পোশাক ও হাঁটা দেখে আশেপাশের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সন্দেহ হয়। পরে তারা হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপারসহ ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত পারভেজসহ একসাথে দেখতে পান তারা। 

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা জানান,'হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তৎক্ষনাৎ আমি হলের রুমে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের উপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। তৎক্ষণাৎ আমি হল প্রভোস্টকে জানাই।' 

ঘটনা স্বীকার অভিযুক্ত পারভেজ বলেন,'আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। অনুষ্ঠান দেখা শেষ করে আমি কপালে টিপ পড়ে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি। আমরা শুধুই ভালো বন্ধু।' 

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অর্পা খন্দকার বলেন, রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। তবে আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, হল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। এরপর আটক ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।' 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হল স প র

এছাড়াও পড়ুন:

ভক্তদের ডাকে ফিরছে ‘অড সিগনেচার’

সিলেটে এক কনসার্টে যাওয়ার পথে গত বছর নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ব্যান্ড অড সিগনেচারের। এতে ব্যান্ডটির গিটারিস্ট ও ভোকাল আহাসান তানভীর পিয়াল ও মাইক্রোবাসের চালক আবদুস সালাম মারা যান। দুর্ঘটনায় আরও তিন ব্যান্ড সদস্য আহত হন। এরপর ব্যান্ডটির সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
বেশ কয়েক মাস ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংগীতবিষয়ক বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে ভক্তরা নিয়মিতই ‘অড সিগনেচার’কে ফেরার আকুতি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু মানসিক ট্রমা ও পরিবার থেকে অনুমতি না পাওয়ায় ফেরা হচ্ছিল না সদস্যদের। তবে এবার ভক্তদের জন্যই ফিরছে ব্যান্ডটি। চলতি মাসেই নতুন কিছু নিয়ে হাজির হচ্ছে ‘অড সিগনেচার’।

ব্যান্ডটির কি–বোর্ডিস্ট ও ভোকাল অমিতাভ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ মাসেই ফিরছি। কবে ফিরছি, তা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে এখন থেকে নিয়মিতই আমাদের পাওয়া যাবে। চলতি মাসের শেষেই সবকিছু জানা যাবে।’

গত পরশু ফেসবুক পোস্টে ‘অড সিগনেচার’–এর ফেরার ঘোষণা আপ্লুত করেছে ভক্তদের। মন্তব্যের ঘরে এক ভক্ত লিখেছেন, ‘উদ্‌গ্রীব হয়ে অপেক্ষায় আছি, আমার প্রথম আবেগ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনাদের আবারও মঞ্চে দেখার অপেক্ষা ফুরাচ্ছে না।’ প্রয়াত ব্যান্ড সদস্য পিয়ালকে নিয়ে একজন লিখেছেন, ‘পিয়াল ভাইকে অনেক মিস করব।’

২০১৭ সালে যাত্রা করে অড সিগনেচার, বিশেষ করে তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে ব্যান্ডটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ‘আমার দেহখান’ গান অড সিগনেচারের অনুরাগীদের ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের মুখে মুখেও ফেরে। এর বাইরে ‘ঘুম’, ‘প্রস্তাব’, ‘দুঃস্বপ্ন’, ‘মন্দ’ শিরোনামের গানগুলোও শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ