ঢাকার যানজট নিয়ন্ত্রণে চলতি মাসে সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ২০০ সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া এই সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ভাতা বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ২ কোটি ৩ লাখ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ অর্থের সংস্থান চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স। এদিকে এসব সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের জন্য প্রতি চার ঘণ্টার ভাতা ১১০ টাকা বাড়িয়ে ৫৬০ টাকা করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 
 
বাংলাদেশ পুলিশের চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে যানজট ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার করতে ট্রাফিক বিভাগকে সহায়তায় নিয়োজিত ৬০০ সহায়ক পুলিশের সেবা গ্রহণে ব্যয়ের জন্য ইতোমধ্যে ৬ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নিয়োজিত সহায়ক পুলিশের ভাতা প্রতিপালায় (চার ঘণ্টা করে) জনপ্রতি ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৬০ টাকা করা হয়েছে। ভাতা বাড়ায় এ খাতে বাড়তি ১ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন হবে। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আরও জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত ও যানজট নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অভিজ্ঞ অতিরিক্ত ২০০ সদস্য জানুয়ারি মাস হতে নিয়োজিত রয়েছেন। এসব সদস্যরাও একই হারে ভাতা পাবেন। সে হিসাবে এ ২০০ সহায়ক পুলিশের জন্য আগামী জুন পর্যন্ত ২ কোটি ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা প্রয়োজন। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এ খাতে বাড়তি প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লাগবে।    

এদিকে বেশকিছু শর্তে সম্প্রতি সহায়ক পুলিশের ভাতা বাড়িয়ে সাকুল্যে ৫৬০ টাকার করার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। শর্তগুলো হচ্ছে– সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে নিয়োজিতকরণ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে হবে। শুধু জরুরি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এসব সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যই এ ভাতা পাবেন। সহায়ক পুলিশের জন্য এ ভাতা তাদের কর্মে নিয়োজনের তারিখ হতে কার্যকর হয়ে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

সম্মতিপত্রের শর্তে আরও বলা হয়, সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ব্যাংক একাউন্ট বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা দিতে হবে। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করবে। ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এ ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
 
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজধানীতে যানবাহন চলাচলে অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। টানা বেশ কিছুদিন অনেক এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে যানজট নিরসনের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার ৭০০ শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়। এর মধ্যে ৬০০ জনকে সহায়ক পুলিশ হিসেবে খণ্ডকালীন নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ২০০ সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য য নজট সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইজতেমায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র‌্যাব

বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব। ইজতেমা এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল জোরদার ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে পর্যাপ্ত র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব হেডকোয়ার্টার থেকে জানানো হয়, সার্বিকভাবে সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে সার্বক্ষণিক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। 

রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে তুরাগ নদীর তীরে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মুসলমানসহ সারা দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করে থাকেন। প্রতি বছর ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য দেশি-বিদেশি মুসল্লির আগমন ঘটে। 

এ বছর তিন ধাপে ৩ দিন করে ইজতেমা মোট ৯ দিন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় ধাপে ৩-৫ ফেব্রুয়ারি এবং তৃতীয় ধাপে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। 

সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিশ্চিতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে র‌্যাব ফোর্সেস অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় করে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। 

র‌্যাব জানায়, সামগ্রিকভাবে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর, র‌্যাব-১ সহ ঢাকাস্থ ৫টি ব্যাটালিয়ন আগামী ৩০ জানুয়ারি হতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি হতে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে। ইজতেমা এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করতে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া র‌্যাব সদর দপ্তর হতে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। 

ইজতেমা মাঠ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ইউনিফর্মে টহল বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি সুইপিং টিম দ্বারা তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য র‌্যাবের স্পেশাল টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং পর্যাপ্ত স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমগ্র ইজতেমা ময়দান ঘিরে উঁচু ভবনসমূহে বাইনোকুলারসহ র‌্যাব সদস্য নিয়োগ এবং র‌্যাবের অবজারভেশন পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। 

এ ছাড়াও, র‌্যাব কর্তৃক ইজতেমাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে সমগ্র ইজতেমা এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। নৌ-পথে যে কোনো বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধকল্পে চলমান টহলের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক নৌ-টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে তিন ধাপে আয়োজিত ইজতেমা মধ্যবর্তী সময়ে কঠোর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ইজতেমা এলাকার আশপাশে উচ্ছৃঙ্খলতা, মাদকসেবন, ছিনতাই, পকেটমার, মলমপার্টি ইত্যাদির দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য বিদেশি খিত্তা এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে সতর্ক দৃষ্টি ও নজরদারি রাখা হয়েছে। 

মুসল্লিদের গাড়ি পার্কিং এলাকাসহ ইজতেমা এলাকায় অবৈধ টোল বা চাঁদা আদায় করতে না পারে, সে বিষয়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইজতেমামুখী যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশির জন্য চেরাগআলী বাসস্ট্যান্ড, টঙ্গী কালীগঞ্জ রোড, উত্তরা নর্থ টাওয়ারের সম্মুখে এবং আশুলিয়া কামারপাড়া এলাকায় নিয়মিত চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। 

ইজতেমা এলাকায় র‌্যাবের চিকিৎসাকেন্দ্র সার্বক্ষণিকভাবে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। র‌্যাবের পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম এবং অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিকভাবে আগত মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে নিয়োজিত থাকবে। 

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের দিনে আগত ও ঘরমুখী মুসল্লিরা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য র‌্যাবের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা চলমান থাকবে। বিশ্ব ইজতেমা কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র ও ধর্মবিরোধী অপপ্রচার/গুজব রোধে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে নজরদারি অব্যাহত রাখছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে কোনো ব্যক্তি/স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টা/অপপ্রচার কঠোরহস্তে দমন করতে প্রস্তুত রয়েছে র‌্যাব। 

এ ছাড়াও যে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে র‌্যাবের সহযোগিতা পেতে টহল ইনচার্জ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাব ব্যাটালিয়নকে অবহিত করণসহ র‌্যাবকে (র‌্যাব কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বরে মোবাইল: ০১৭৭৭৭২০০২৯) জানানোর জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোহাম্মদপুরে অভিযানের মধ্যেই ঘটছে অপরাধ
  • ইজতেমায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র‌্যাব
  • ‘ইজতেমার নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ হাজার সদস্য’
  • বাসে বিএম কলেজছাত্রী লাঞ্ছিত, বাস শ্রমিক-শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাংচুর