টাকার দাবিতে আ.লীগ নেতার বাড়ি ও কলেজে ভাটা মালিকদের অবস্থান
Published: 19th, January 2025 GMT
পাওনা প্রায় দেড় কোটি টাকার দাবিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বাড়ি ও কলেজে অবস্থান নেন কয়েকজন ইটভাটার মালিক।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা শহরের মাস্টারপাড়ায় ছাদিকুজ্জামানের বাড়িতে অবস্থান নেন ইটভাটার মালিকরা। এরপর তারা ছাদিকুজ্জামান যে কলেজের অধ্যক্ষ সেই কলেজে গিয়ে অবস্থান নেন। এসময় তারা কলেজটির শিক্ষকদের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান।
ইটভাটার মালিকেরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারি কাজ করতেন ছাদিকুজ্জামান খান সুমন। তিনি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পাকাকরণ কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিলাস বহুল বাসভবন নির্মাণ করেছেন। গত ৮ থেকে ১০ বছরে ঠিকাদারি কাজ ও বাসভবন নির্মাণের জন্য দৌলতপুরের বিভিন্ন ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে বাকিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার ইট কিনে নেন ছাদিকুজ্জামান। এদের মধ্যে কয়েকজন ইটভাটার মালিককে চেক দেওয়া ব্যাংক থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ছাদিকুজ্জামান আত্মগোপনে চলে যান।
আরো পড়ুন:
বায়ুদূষণ রোধে অভিযান: জরিমানা ২৪ লাখ টাকা, ৯ ভাটা বন্ধ
শেরপুরে জনবহুল এলাকায় ইটভাটা বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর
টাকা না পেয়ে ইটভাটার মালিকেরা ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বাড়িতে যান। এ সময় ইটভাটার মালিকরা সুমনের বাবা মো.
রিফায়েতপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, বিগত কয়েক বছরে তার ভাটা থেকে বাকিতে ৩২ লাখ টাকার ইট কেনেন ছাদিকুজ্জামান। নানা অজুহাত দেখিয়ে টাকা দিতে গড়িমসি করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাদিকুজ্জামান পালিয়ে যান। টাকার জন্য তাকে খোঁজা হচ্ছে। কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
একই অভিযোগ করেন সাদীপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক মামুনুর রহমান। তিনি বলেন, “আমার ভাটা থেকে ২২ লাখ টাকার ইট নেন ছাদিকুজ্জামান। আজ না কাল করে টাকা না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করছেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে আমরা তার ও তার বাবার বাড়ি এবং কলেজে গিয়ে অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।”
স্বরূপপুর গ্রামের ইটভাটার মালিক নুরুল ইসলামও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “ছাদিকুজ্জামানের কাছে ১৬ লাখ টাকা পাব। টাকার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল ধরেন না। টাকা না পেয়ে হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে আজ অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।”
আব্দুস সাত্তার নামে অপর ইটভাটার মালিক জানান, ছাদিকুজ্জামানের কাছে তিনি ইট বিক্রির ৮ লাখ টাকা পাবেন। শুধু তিনি একাই নন, দৌলতপুরের অন্তত ১১ জন ইটভাটার মালিক ছাদিকুজ্জামানের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাবেন।
ইটভাটার মালিকদের অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. আলাউদ্দিন বাদল বলেন, “ইটভাটার মালিকরা দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাবেন। এ বিষয়ে তারা অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
ইটভাটার মালিকদের পাওনা টাকা না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য কয়েকবার ছাদিকুজ্জামানের মোবাইলে কল করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইট ভ ট আওয় ম ল গ ছ দ ক জ জ ম ন খ ন স মন র ইটভ ট র ম ল ক ন ইটভ ট র ম ল ক অবস থ ন স মন র কল জ র র জন য কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীর হাত কেটে ‘প্রতিশোধ’ স্বামীর
পরকীয়ার সন্দেহে গত বছরের ১৬ এপ্রিল স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন স্ত্রী। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীর ডান হাত কেটে প্রতিশোধ নিয়েছেন স্বামী। এ ঘটনায় স্বামী ফিরোজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। তারা টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
স্বামী ফিরোজ মিয়া রাউৎবাড়ী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে এবং তার স্ত্রী জাকিয়া বেগম একই ইউনিয়নের পাশের জিগাতলা গ্রামের জামিলের মেয়ে।
গত বছর ১৬ এপ্রিল রাতে পরকীয়া সন্দেহে জাকিয়া তার স্বামী ফিরোজের পুরুষাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেন। পরে ফিরোজের মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে জাকিয়ার বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর কিছুদিন পর জাকিয়া জামিন পেয়ে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এদিকে স্ত্রীর চাকরির সংবাদ পেয়ে ফিরোজ মিয়া প্রতিশোধ নিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আশুলিয়া গাজীরচর এলাকার বাসা ভাড়া নিয়ে আবারও সংসার শুরু করেন তারা। এরপর সুযোগ বুঝে সোমবার রাতে জাকিয়ার ডান হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করেন ফিরোজ মিয়া। এসময় স্ত্রী জাকিয়ার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তার স্বামীকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন এবং জাকিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশ এসে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম সিদ্দিকী জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জাকিয়ার বাবা বাদী হয়ে ফিরোজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।