তিতুমীর কলেজে সাংবাদিক হেনস্তার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
Published: 19th, January 2025 GMT
ছাত্রদল পরিচয়ে নারী সাংবাদিকসহ তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের হেনস্তার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় নিজেদের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করে সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি (সতিকসাস)।
এ সময় সতিকসাসের সভাপতি সাহেদুজ্জামান সাকিব বলেন, “কার্যালয়ে ঢুকে নারীসহ সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের হেনস্তার ঘটনায় আজ আমাদের মানববন্ধন করার কথা ছিল। তবে এরইমধ্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ ও তিতুমীর কলেজ প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করায় মানববন্ধন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে, এ ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।”
কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের হেনস্তার ঘটনা সাংবাদিকতার জন্য হুমকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোনো সংবাদের বিষয়ে কারো আপত্তি থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিবাদলিপি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু দলবল নিয়ে সাংবাদিকদের জিম্মি করে জবাবদিহি চাওয়া ও জোরপূর্বক ভিডিও ডিলিট করানো গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরার শামিল।”
এসময়, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে রাজনৈতিক সুশৃঙ্খল থাকতে ও সঠিক তথ্য পরিবেশনে ক্যাম্পাস রিপোর্টারদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের প্লাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’ এর কার্যক্রমে ছাত্রদলপন্থীদের হট্টগোলের ভিডিও সতিকসাসের পেইজে প্রকাশ করা হয়। এতে সতিকসাসের কার্যালয়ে হট্টগোল ও নারী সাংবাদিকসহ অন্য সদস্যদের হেনস্তা করেন ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতাকর্মী।
পরে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ অভিযুক্ত দুজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে। একইসঙ্গে তিতুমীর কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ঢাকা/সিয়াম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ত ম র কল জ ছ ত রদল সদস য তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী