জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার করে এ অনুদানের চেক প্রদান করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে ও জনসংযোগ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এমদাদুল হকের সঞ্চালনায় আহতদের হাতে এ চেক প্রদান করা হয়। 

এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ এবং আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী, সমন্বয়ক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ মিয়া কাউসার বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিপ্লবকে সম্পূর্ণ ধারণ করতে পারেনি। তারা এখন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বহিষ্কার করলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে পারেনি। এখনো সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, আর ভয়ে থাকে বিপ্লবীরা।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাম্মেল হোসেন আবির বলেন, “দেরিতে হলেও আহতদের স্মরণ করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ। তবে আমরা বিপ্লব পরবর্তী যেমন ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম, তা এখনো হয়ে উঠেনি। বলা হয়েছিল, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, মাদককে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে; কিন্তু তা হয়নি। প্রশাসন এখনো কোন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পায়। তারা তাদের সিদ্ধান্ত বারবার পরিবর্তন করে কিসের ভয়ে? আমরা কথা দিচ্ছি, আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনাদের পাশে থাকবে।”

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. হায়দার আলী বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করছি। আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আহতদের সাহায্য করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তোমাদের দাবি দাওয়া গুলো শুনেছি, সেগুলো যৌক্তিক। তবে আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলোকেও ভাবতে হবে। একজনের সিদ্ধান্তে সবকিছু হতে পারে না, যা কিছু হবে আলোচনার ভিত্তিতে। আমাদের সব কাজ হবে সম্মিলিতভাবে।”

তিনি আরও বলেন, “আগে অনেকেই স্বৈরাচারের দলের হয়ে কাজ করেছেন। এখন একাধিক সমন্বয়ক দল তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের এগিয়ে যাওয়া কঠিন। আমাদের কাছে অনেকেই আসে কথা বলতে। তাদের অতীত ইতিহাস শুনলে বিশ্বাস হয় না। আবার সুযোগ পেলে যে আগের চরিত্রে ফিরে যাবে না, তার কী গ্যারান্টি? নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সব জায়গায় আমরা ঝামেলায় পড়ে যাচ্ছি।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ছিল চেকগুলো তোমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া। অবিশ্বাস্য ও অভূতপূর্ব ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে এই জেন-জির হাত ধরে। তারাই বুঝিয়ে দিয়েছে সংগ্রামের পথেই মুক্তি। তোমরাই জাতির সূর্য সন্তান। তোমাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এটা বলব না, শুধু তোমাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।”

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শরীফুল করিম, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছা. শামসুন্নাহার, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাকসুদুল করিম, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান রাহাত প্রমুখ।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণমাধ্যম এখন নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখন নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্যের বন্যা বয়ে গেছে।’ 

ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স সোরোস সাক্ষাৎ করতে এলে বুধবার ড. ইউনূস এ কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন, পাচার করা সম্পদ সন্ধান, ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন।

বাসসের খবরে বলা হয়েছে, ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স সোরোস ও প্রেসিডেন্ট বিনাইফার নওরোজির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।

বৈঠককালে অ্যালেক্স সোরোস ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এবং দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়ায় অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান দেশের জন্য একটি নতুন যাত্রাপথ নির্ধারণের সুযোগ তৈরি করেছে।’

তারা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলনে হতাহতদের জন্য ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক সংস্কার, গণমাধ্যম, পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার, নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন ও এটিকে উন্নত করার উপায় এবং রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।

অ্যালেক্স সোরোস বলেন, ‘আমরা এসব ক্ষেত্রে আপনার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার উপায় অনুসন্ধান করব।’ অধ্যাপক ইউনূস ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এলডিসি উত্তরণে সহায়তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে ফাউন্ডেশন। এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কোনো সমস্যা ছাড়াই কীভাবে উত্তরণ করা যায়, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফার খবরে দরবৃদ্ধির শীর্ষে এনার্জিপ্যাক
  • চাঁদপুরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, নিহত ২
  • লাল, কালো, সাদার মন্ত্রে এবারের অমর একুশে বইমেলা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সবুজের লাশ উত্তোলন 
  • গণমাধ্যম এখন নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে: প্রধান উপদেষ্টা
  • কেউ বললেই যেন আমরা বিদেশে দৌড় না দেই : শামীম আজাদ
  • ভারতে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে নিহত ১৫ 
  • কোটি টাকা সহায়তা দাবি শহীদ পরিবারের
  • ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকতে পারে কালও