দুর্দান্ত জয়ের পর দল নিয়ে হোটেলে ফিরে উৎসবে মেতে ছিলেন চিটাগং কিংসের পেসার খালেদ আহমেদ। নিজে পারফর্ম করেছেন, দল জিতেছে। আর কি চাই? কিন্তু ওই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

একটু পরই জানতে পারেন, পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন মা। ১৬ জানুয়ারি রাতটা খালেদের জন্য বিভীষিকাময় হয়ে উঠে। মাকে নিয়ে কিছু আর বলতে পারলেন না খালেদ, ‘‘মা তো মা-ই…।’’

তার বাড়ি সিলেটে। রাতেই চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেন সিলেটের উদ্দেশ্যে। পরদিনের ম্যাচে খেলার অবস্থাতে ছিলেন না। শোককে শক্তিতে পরিণত করে খালেদ আজ রবিবার ফেরেন ২২ গজে। দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে আজ মাঠে নামেন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। 
৬ ম্যাচে ১০ উইকেট পাওয়া খালেদ আজ মাঠে ফিরে পেয়েছেন তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট। নিজ থেকে বরিশালের বিরুদ্ধে খেলতে চেয়েছিলেন। জিততে না পারায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি নন। তবে তাকে মাঠে পেয়ে গর্বিত চিটাগং কিংস।

আরো পড়ুন:

বলব না, টি-টোয়েন্টির জন্য খুব খুব ভালো উইকেট: তামিম

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে খুলনা

দলের কোচ এনামুল হক জুনিয়র টি স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘‘ও আমাকে গতকাল ফোন দিয়েছিল। জানতে চেয়েছিল কি করবে। আমি ওকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, ‘‘সিলেটে থাকলে মন খারাপ হবে। আত্মীয়-স্বজন আসবেন। স্মরণ করিয়ে দেবেন। আমাদের কাছে আসলে একটু দূরে থাকতে পারবে।’’

‘‘ও আসলে এই ম্যাচটা খেলতে চাচ্ছিল। বললো যে, ‘আমি বরিশালের সঙ্গে খেলতে চাই।’ এজন্য আমি নিজে খুব গর্বিত ওকে নিয়ে। আমাদের পুরো দল ওকে নিয়ে গর্বিত।’’

‘‘আসলে এরকম একটা পরিস্থিতি থেকে উঠে এসে এই ম্যাচটা খেলেছে। আমি শুধু কোচ হিসেবে নয়, পুরো দল ওর প্রতি কৃতজ্ঞ। যেভাবে এসে এভাবে পারফর্ম করেছে।’’

এদিকে বরিশালের জয়ের নায়ক ডেভিড মালানকে দেখা যায় ম্যাচ শেষে খালেদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে। দুজনের কথোপকথনে বোঝা যাচ্ছিল, খালেদকে বিশেষ কিছু বলছিলেন।

তাদের কথোপকথন নিয়ে খালেদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘‘মালান নিজ থেকে আমার দিকে এগিয়ে এসেছিলেন। খেলার পর তো নরম্যাল হ্যান্ডশেক হয়। আমি মনে করেছিলাম সেরকমই। এরপর কয়েক সেকেন্ড কথা হয়। আমার খোঁজ-খবর নিলেন। মায়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছিল। বললো, আমাকে মাঠে দেখে খুশি হয়েছে। শক্তি রাখতে বললো। ধৈর্য ধরতে বললো। আমি থ্যাংকস জানালাম।’’

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা

সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।

সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ