পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার মাধ্যমে পৃথিবীতে পশ্চিমারা জুলুমতন্ত্র কায়েম করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘‘পৃথিবীজুড়ে পশ্চিমা সভ্যতা যে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যে পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, এ ব্যবস্থা ভোগবিলাসের অর্থব্যবস্থা, এ অর্থব্যবস্থা গরিবের রক্তশোষণ করে বড়লোকদের আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা করার অর্থব্যবস্থা। আর এ অর্থব্যবস্থা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে পশ্চিমারা গোটা পৃথিবীতে জুলুমতন্ত্র কায়েম করছে।’’

এ ব্যবস্থাকে উৎখাত করার জন্যে একমাত্র বিকল্প ইসলাম ও খেলাফত বলে জানান তিনি।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ইটা ইসলামিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে ইটা চা-বাগান ঈদগাহ ময়দানে ১৪তম বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘‘বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। যারা রাজনীতির চর্চা করেন, সংগঠন করেন, নেতৃত্ব দেন; তাদের অবস্থা হলো, ৫-১০-১৫ বছর ইনভেস্ট কর, ক্ষমতায় আসতে পারবে। সব ইনভেস্ট সুদে-আসলে উশুল করে নেবে। যারা রাজনীতি করে তাদের সকলের ইচ্ছা থাকে পার্টি ক্ষমতায় গেলে সব উশুল করে নেবো।’’

তিনি বলেন, ‘‘প্রচলিত শাসন ব্যবস্থার মাঝে কিছু মানুষের স্বার্থ উদ্ধার হয়, প্রকৃতঅর্থে জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন হয় না। কারণ এ ব্যবস্থার সিস্টেমের মধ্যে সেটা নাই। জনগণের অধিকার হনন করে, রাষ্ট্রীয়সম্পদ চুরি করে এক দলের উপর আরেকদল লালিত পালিত হয়।’’

মামুনুল হক আরো বলেন, ‘‘প্রশ্ন হলো, পার্টি ক্ষমতায় গেলে যে সব উশুল করবেন,  এই সম্পদ আপনাকে কে দেবে? কোথাও থেকে বৈধ উপায়ে দেওয়ার কেউ নেই। উপায় একটাই, রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করতে হবে, জনগণের সম্পদ চুরি করতে হবে, মানুষের অধিকার হনন করতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘সম্পদ চুরি করে যারা খায়, এটা বৈধ সম্পদ নয়, এ সম্পদ হলো জাহান্নামের আগুন। প্রচলিত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে এভাবে এক শ্রেণির মানুষ, তারা হারামখুরি করে জনগণের সম্পদ চুরি করেন। তারা ক্ষমতায় গেলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেন। আবার ক্ষমতা হারিয়ে গেলে শুরু হয় তাদের ইনভেস্টমেন্ট।’’

ইসলামী মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় অভিভাবক পরিষদের সদস্য মাও.

শেখ ফরিদ আহমদ খান, কেদ্রীয় সদস্য মাও. জালাল উদ্দীন আহমদ, সিলেট মহানগর সভাপতি গাজী রহমতুল্লাহ, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমি, সাধারণ সম্পাদক মাও. মুফতি হেলালুর রহমান হেলাল প্রমুখ।
 

ঢাকা/আজিজ/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষমত য় ব যবস থ জনগণ র র জন ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাকবিতণ্ডা: বিশ্বনেতারা কে কোন পক্ষে

হোয়াইট হাউসে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকটি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় আর বিশৃঙ্খলার মধ্যে শেষ হয়। এ ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। খবর রয়টার্স

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার পরই এক্স পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ধন্যবাদ আমেরিকা, ধন্যবাদ আমাদের সমর্থন করার জন্য, ধন্যবাদ আমাদের দেখে রাখার জন্য। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস এবং জনগণের প্রতি। ইউক্রেনের শান্তি দরকার। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক্স পোস্টে বলেন, রাশিয়া অবৈধ এবং অন্যায়ভাবে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন সাহস এবং ধৈর্যের সঙ্গে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। তাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই লড়াই আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কানাডা সব সময় তার সঙ্গে রয়েছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, ইউক্রেনের জনগণের থেকে আর কেউ অধিক শান্তি চাইতে পারে না। এজন্য আমরা একসঙ্গে ন্যায় সংগত শান্তির পথ খুঁজতে যুক্ত হয়েছি। এক্ষেত্রে ইউক্রেন জার্মান এবং ইউরোপের ওপর নির্ভর করতে পারে।

পর্তুগালে সফররত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়েছে, ফলে দেশটির জনগণ ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। তিন বছর আগে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। যা এখনও চলছে। সুতরাং আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা এবং জাপানসহ যারা ইউক্রেনকে সহযোগিতা করেছে তাদেরকে অবশ্যই সস্মান করতে হবে। কারণ এসব দেশ ইউক্রেনের স্বাধীনতা, তাদের সম্মান এবং সন্তানদের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, পশ্চিমাদের প্রতিটি বিভাজন আমাদের সবাইকে দুর্বল করে এবং তাদের সুবিধা বাড়ায়, যারা আমাদের সভ্যতার পতন দেখতে চায়। ক্ষমতা বা প্রভাবের নয় বরং সেই নীতিগুলোর— বিশেষ করে স্বাধীনতার। যার ভিত্তিতে আমাদের সভ্যতা গড়ে উঠেছে। এই বিভাজন কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়।

তিনি আরও বলেন, এই সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং মিত্রদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করা উচিত। ইউক্রেনে নিয়ে যে সংকট শুরু হয়েছে, তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এ নিয়ে ইতালি দ্রুতই প্রস্তাব রাখবে।’

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত কিয়েভের জন্য শান্তির পথ খুঁজে বের করতে আমরা পাশে রয়েছি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, আমরা যতদিন প্রয়োজন, ততদিন ইউক্রেনের পাশে থাকব। কারণ এটি একটি গণতান্ত্রিক জাতির লড়াই, যা একটি স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়ছে।

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, শক্তিশালী নেতারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন, দুর্বলরা যুদ্ধ বাঁধান। আজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির জন্য সাহসী অবস্থান নিয়েছেন। ধন্যবাদ, মিস্টার প্রেসিডেন্ট।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোককে রাসমুসেন বলেন, এটি ইউক্রেনের জন্য কঠিন আঘাত। বন্ধুদের মধ্যে দৃঢ় আলোচনা হতে পারে, কিন্তু যখন তা ক্যামেরার সামনে ঘটে, তখন একমাত্র বিজয়ী হয় ক্রেমলিন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন জেলেনস্কিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, আপনার মর্যাদা ইউক্রেনীয় জনগণের সাহসিকতার প্রতিফলন। আপনি কখনো একা নন, প্রিয় প্রেসিডেন্ট।

মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু বলেন, সত্যটা খুব সহজ। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়েছে। ইউক্রেন তার স্বাধীনতা রক্ষা করছে এবং আমাদেরও। আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, প্রিয় জেলেনস্কি, প্রিয় ইউক্রেনীয় বন্ধুরা, আপনারা একা নন।

বিশ্বনেতাদের এই প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দেয় যে, ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন এখনো সুদৃঢ়, যদিও হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক ঘটনা নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ নিয়ে অমর্ত্য সেনের বক্তব্য নিয়ে যা বলছেন জামায়াতের আমির
  • অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার
  • অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার: আনু মুহাম্মদ
  • স্বৈরাচারী শাসনামলের নৃশংসতা নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
  • রবীন্দ্রনাথ-নজরুল কেউই ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না!
  • নতুন দলকে নতুন যে রাজনীতি দিতে হবে
  • রাজনীতি থেকে নেয়ার কোন সুযোগ নাই, দেয়ার সুযোগ আছে : স্বপন চৌধুরী
  • ১২নং ওয়ার্ড কমিটিতে ফ্যাসিবাদী দোসরের জায়গা হবে না : সজল
  • ট্রাম্পের সঙ্গে ‘সিংহের মতো লড়েছেন’ জেলেনস্কি
  • ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাকবিতণ্ডা: বিশ্বনেতারা কে কোন পক্ষে