বলব না, টি-টোয়েন্টির জন্য খুব খুব ভালো উইকেট: তামিম
Published: 19th, January 2025 GMT
‘এটা ২০০ রানের উইকেট ছিল না। ১৫০ রানের উইকেট।’ - ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচ হারের পর চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলেছেন। ঢাকার পর সিলেট। সিলেটের পর বিপিএল এখন চট্টগ্রামে। একদিনের বিরতির আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আবারও ২২ গজে বল গড়ালেও রান উৎসব হয়নি। বরং ব্যাটসম্যানদের জন্য আজ ছিল কঠিন পরীক্ষার মঞ্চ।
তবে চিটাগংয়ের ওপেনার উসমান ইনিংসের প্রথম ওভারে এলোপাথাড়ি শটে ১৫ রান তুলে যেভাবে শুরু করেছিলেন মনে হচ্ছিল রান ফোয়ারা ছুটবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। ২০ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে চিটাগং শেষ পর্যন্ত করতে পারে মাত্র ১২১ রান। ওই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে বরিশালও হারায় ৪ উইকেট। দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ডেডিভ মালান ফিফটি তুলে দলকে বিপর্যয়ে পড়তে দেননি। জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।
তবে উইকেট যে কঠিন ছিল তা বলতে দ্বিধা করেননি ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া মালান, ‘‘দিনের ম্যাচ হিসেবে সহজ ছিল না (উইকেট), ধীরগতির। ভালো দিক যে আমরা তাদেরকে ১২০ রানে আটকে দিতে পেরেছিলাম। আমাদেরকে যদি ১৪০-১৫০ রান তাড়া করতে হতো তাহলে শুরু থেকেই ঝুঁকি নিতে হতো। এজন্য বোলারদের ক্রেডিট দিতে হবে যে তারা ১২০ রানে আটকে রাখতে পেরেছিল।’’
আরো পড়ুন:
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে খুলনা
বরিশালকে বিপদে পড়তে দেননি মালান
উইকেটে সময় দিয়ে রান তুলেছেন মালান। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ না দিয়ে থিতু হয়েছেন। এরপর রান তুলেছেন অনায়েসে। ৪১ বলে ৫৬ রান করেছেন ৩ চার ও ২ ছক্কায়। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারায় খুশি মালান, ‘‘এটা (উইকেট) নিশ্চিতভাবেই প্রবল ধীর গতির উইকেট। এবং স্কিড করছিল। আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছিলাম। এজন্য আমাদেরকে সময় দিতে হয়েছে এবং খেলাটাকে গভীরে নিয়ে যেতে হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে যেখানে বাউন্ডারিগুলো ছোট নয়, এখানে ছন্দ পেলে এবং জুটি গড়ে উঠলে সেটা ভাঙা ততটা সহজ নয়।’’
জয়ের জন্য মালান কৃতিত্ব দিয়েছেন নবী ও মাহমুদউল্লাহকে। দুজনই জুটি গড়ে তার থেকে চাপ সরিয়ে নিয়েছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, নবী চাপ কমিয়ে দিয়েছিল। শুরুতে মাহমুদউল্লাহ কয়েকটি বাউন্ডারি মেরেও আমার থেকে চাপ নিয়ে নিয়েছিল। যা আমার কাজ সহজ করেছিল। পরবর্তীতে নবী ভাই এসে একই কাজ করেছিলেন। ভালো সুযোগগুলো নিয়ে রান তুলছিলেন। যখন আমি শান্ত হয়ে ব্যাটিং করছিলাম তখন তিনি বাউন্ডারি মেরে স্কোর বোর্ডটাকে এগিয়ে নিয়ে যান।’’
জয়ের জন্য বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল বোলারদের কৃতিত্ব দিলেও উইকেট টি-টোয়েন্টির জন্য ‘যুৎসই’ ছিল না এমন কথাও বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি প্রথমত বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছেন। টসের সময় কনফিউজ ছিলাম ব্যাটিং করবো নাকি বোলিং। এরপর বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেই। বোলিংয়ে বোলাররা কন্ডিশনের দারুণ ব্যবহার করেছেন।’’
উইকেট নিয়ে তামিমের মূল্যায়ন, ‘‘এটা অনেকটাই কঠিন উইকেট ছিল। আমি বলবো না যে, এটা টি-টোয়েন্টির জন্য খুব খুব ভালো উইকেট। প্রথম ইনিংসে উইকেট ‘প্যাচি’ ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো অবস্থায় ছিল।’’
‘‘এ ধরণের ১২০ রানের ম্যাচে আপনি যদি সুযোগগুলো নিয়ে নেন…২০-২৫ রান তুলে নেন প্রথম ৩ ওভারেই তাহলে ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়। আমরা সেটা পারিনি। আমরা একাধিক উইকেট হারিয়েছি। তেমন রান পাইনি। এজন্য চাপে পড়েছিলাম।’’
আজকের ম্যাচের উইকেট নিয়ে তামিম আলোচনা করলেও, সব মিলিয়ে এবারের উইকেটে দারুণ খুশি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। তার মতে, অতীতের কয়েক আসরের চেয়ে এবারই সবচেয়ে ভালো উইকেটে খেলছেন তারা, ‘‘নিশ্চিতভাবেই (ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা হয় এসব উইকেটে)। গ্রাউন্ডসম্যান এবং কিউরেটর পুরো টুর্নামেন্টে ভালো কাজ করেছেন। এক দুইটি ম্যাচ এদিক সেদিক হবে, সেটা হতেই পারে। আমি মনে করি, এবার যে ধরণের উইকেটে আমরা খেলছি তা শেষ কয়েক বছরের মধ্যে সেরা। তারপরও আপনি যদি নিজের পুরো সামর্থ্যকে কাজে লাগান তাহলে এ ধরণের উইকেটেও রান করা সম্ভব। আমি মনে করি আমাদের ব্যাটসম্যানরা সেটা করতে পারেনি বলে আউট হয়েছে। তবে দলটা এই মুহূর্তে ভালো অবস্থায় আছে।’’
সাত ম্যাচে পাঁচ জয়ে তামিমের বরিশাল ১০ পয়েন্ট নিয়ে প্লে’ অফের পথেই আছে। পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে তাদের অবস্থান। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নিজেদের দলটাকে বেশ ভালোভাবেই গুছিয়ে নিয়েছেন তামিম।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র উইক ট কর ছ ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।