জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মীর সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত অধিকাংশ ছাত্রদল নেতাকর্মীই পদবঞ্চিত ও সদ্য বহিষ্কৃত বলে জানা গেছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আটক ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শরীফুল ইসলাম সোহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম ব্যাচের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সম্মান শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শরীফুল ইসলাম সোহান। বেলা সাড়ে ১২টায় হলে প্রবেশ করে পরীক্ষায় বসেন। এ সময় খবর পেয়ে শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সোহানকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার প্রতিবাদ এবং তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিচারের দাবি জানান।

তবে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বললে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবির মুখে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের ছত্রছায়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর আগেও ৪৭তম ব্যাচের আরেক ছাত্রলীগ নেতা এভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। প্রায় ৬ মাস পার হয়ে গেলেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। এসব হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

ঘটনাস্থলের উপস্থিত ৪৬ ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, “আমরা খবর পাই ৪৯তম ব্যাচের ছাত্রলীগ কর্মী সোহান বিভাগের পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিভিন্ন হলে তদন্ত কমিটির দেখানো ফুটেজ থেকে ১৫ জুলাই রাতে সে হামলায় অংশগ্রহণ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

তিনি বলেন, “আমরা তার বিভাগে যাই এবং বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারকে জানাই, তার মতো এমন প্রত্যক্ষ হামলাকারীর জেলে থাকার কথা, সে কিভাবে পরীক্ষা দিতে আসে? তার ভিডিও ফুটেজও আছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, পরীক্ষার দেওয়ার সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত। এখানে হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাক্ষর দেওয়া লাগে। তারা কিভাবে এ রকম একজন হামলাকারীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিল? এটা আমাদের বোধগম্য নয়।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, “কে পরীক্ষা দিতে পারবে, কে দিতে পারবে না, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেনি। ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্যও বলা হয়নি, কারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। আর আমি ব্যাক্তিগতভাবেও সবাইকে চিনি না এবং জানি না, কারা হামলার সঙ্গে জড়িত। সব হামলাকারীকে তো আর একসঙ্গে মনে রাখা যায় না।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম ছ ত রদল উপস থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ‘সমন্বয়ক’ আখ্যা দিয়ে হামলা, আহত ৮

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় অন্তত ৮ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে শহরের নতুন স্কুল রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ক্যামেস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সেলিম রেজা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মুয়াজ বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইমরান, কৃষি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষের তাহমিদ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইয়াজদানী, আসাদুল্লাহ ও খালিদ। আহত একজনের নাম জানা যায়নি।

আহত শিক্ষার্থীরা জানান, শহরের নতুন স্কুল রোড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকেন তারা। গত রাতে একদল দুর্বৃত্ত সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে মেসে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। এতে আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে, গুরুতর পাঁচ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সমন্বয়কদের ওপর হামলা, তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন

ধামরাইয়ে মাজার ভাঙচুরের ঘটনা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

আহত শিক্ষার্থী ইয়াজদানী আলী বলেন, ‘‘গত রাতে মেসে প্রবেশের সময় একদল দুর্বৃত্ত পথ আটকিয়ে আমাদের পরিচয় জানতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানালে ‘তোরা সমন্বয়ক’ আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হামলা চালানো হয়। পরে সেখান থেকে পালিয়ে মেসে ঢুকলে তারাও মেসে প্রবেশ করে পুনরায় হামলা চালায়।’’

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘‘হামলার ঘটনায় সেলিম রেজা নামের এক ছাত্র মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’’

ঢাকা/বাদল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ‘সমন্বয়ক’ আখ্যা দিয়ে হামলা, আহত ৮