ঢাবিতে শেখ মুজিবের গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি
Published: 19th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিবের পুনরায় অঙ্কিত গ্রাফিতিতে ‘জুতা নিক্ষেপ ও কালিমা লেপন’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ‘এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন’ এর উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মসূচিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশের ইতিহাসে প্রথম স্বৈরাচার, বাকশালের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিলুপ্তকারী, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণকারী ও প্যারামিলিটারি রক্ষীবাহিনী দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যাকারী আখ্যা দিয়ে তার গ্রাফিতিতে জুতা ছুঁড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান।
এ সময় তারা ‘এক দুই তিন চার, মুজিব তুই স্বৈরাচার’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বাকশালের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি মুয়ায আবদুল্লাহ মজুমদার বলেন, “আমাদের ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৭৩ এর নির্বাচন, ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ, বাকশালের ইতিহাস। আমরা এতদিন জেনেছি, শেখ মুজিব হয়তো ফেরেশতাতুল্য মানুষ ছিল। প্রকৃতপক্ষে সে একজন খুনী, স্বৈরাচার। সে সব দলকে নিষিদ্ধ করে একক রাজনীতি কায়েম করেছিল, যা এ দেশের মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর ছাত্র সমাজ খুঁড়ে খুঁড়ে বের করেছে ৭২-৭৫ এর ইতিহাস। তারা শেখ হাসিনার অপকর্মকে বের করতে গিয়ে জেনে গেছে, কীভাবে ৭২ থেকে ৭৫ মধ্যে বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে তারা তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। সেই পর্যায় থেকে মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। একইভাবে শেখ হাসিনাকে এ দেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোন ফ্যাসিজমকে বাংলাদেশে সুযোগ দেব না। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যারা মুছে দিতে চায়, তাদের আর কোন সুযোগ দিতে পারি না “
মুয়ায আরও বলেন, “শেখ মুজিব স্বাধীনতার কথা বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে চলে গিয়েছিল। এখন আলাপ এসেছে কীভাবে সাত দফা দিয়ে বাংলাদেশকে গোলামীর জিঞ্জির পরানোর জন্য ভারত সেখানে কাজ করেছে।”
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এসএম তানিম বলেন, “এতদিন পর স্বৈরাচারকে স্বৈরাচার বলতে পারার যে তৃপ্তি ও আনন্দ, তার বহিঃপ্রকাশ হলো আজকের আয়োজনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মুজিব বাকশালের প্রবক্তা, যার মাধ্যমে দেশ থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিলুপ্ত করা হয়। ৫ আগস্টের আগেই এই স্বৈরাচারের প্রতিকৃতিতে জুতা ও রং নিক্ষেপ করে। আমরা শুধু সেই সিলসিলাতেই আজ আবার জুতা নিক্ষেপ করেছি। যাতে বার্তা দিতে পারি, বাংলাদেশের মাটিতে কোন ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জায়গা হবে না।”
এর আগে, টিএসসিতে মেট্রোরেলের আরেকটি পিলারে গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি হিসেবে ‘ঘৃণা স্তম্ভ’ ঘোষিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মুছে দেয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর পুনরায় শেখ হাসিনার গ্রাফিতি অঙ্কন করে গণজুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে ওই সময় শেখ মুজিবের গ্রাফিতি অঙ্কন করা না হলেও সম্প্রতি তা অঙ্কন করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এ গ্রাফিতি অঙ্কন করেছে তা জানা যায়নি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ক ষ প কর
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
কোনো মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনো মহামানব কোনো দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।