ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিবের পুনরায় অঙ্কিত গ্রাফিতিতে ‘জুতা নিক্ষেপ ও কালিমা লেপন’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ‘এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন’ এর উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

কর্মসূচিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশের ইতিহাসে প্রথম স্বৈরাচার, বাকশালের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিলুপ্তকারী, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণকারী ও প্যারামিলিটারি রক্ষীবাহিনী দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যাকারী আখ্যা দিয়ে তার গ্রাফিতিতে জুতা ছুঁড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। 

এ সময় তারা ‘এক দুই তিন চার, মুজিব তুই স্বৈরাচার’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বাকশালের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি মুয়ায আবদুল্লাহ মজুমদার বলেন, “আমাদের ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৭৩ এর নির্বাচন, ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ, বাকশালের ইতিহাস। আমরা এতদিন জেনেছি, শেখ মুজিব হয়তো ফেরেশতাতুল্য মানুষ ছিল। প্রকৃতপক্ষে সে একজন খুনী, স্বৈরাচার। সে সব দলকে নিষিদ্ধ করে একক রাজনীতি কায়েম করেছিল, যা এ দেশের মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর ছাত্র সমাজ খুঁড়ে খুঁড়ে বের করেছে ৭২-৭৫ এর ইতিহাস। তারা শেখ হাসিনার অপকর্মকে বের করতে গিয়ে জেনে গেছে, কীভাবে ৭২ থেকে ৭৫ মধ্যে বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে তারা তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। সেই পর্যায় থেকে মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। একইভাবে শেখ হাসিনাকে এ দেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোন ফ্যাসিজমকে বাংলাদেশে সুযোগ দেব না। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যারা মুছে দিতে চায়, তাদের আর কোন সুযোগ দিতে পারি না “

মুয়ায আরও বলেন, “শেখ মুজিব স্বাধীনতার কথা বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে চলে গিয়েছিল। এখন আলাপ এসেছে কীভাবে সাত দফা দিয়ে বাংলাদেশকে গোলামীর জিঞ্জির পরানোর জন্য ভারত সেখানে কাজ করেছে।”

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এসএম তানিম বলেন, “এতদিন পর স্বৈরাচারকে স্বৈরাচার বলতে পারার যে তৃপ্তি ও আনন্দ, তার বহিঃপ্রকাশ হলো আজকের আয়োজনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মুজিব বাকশালের প্রবক্তা, যার মাধ্যমে দেশ থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিলুপ্ত করা হয়। ৫ আগস্টের আগেই এই স্বৈরাচারের প্রতিকৃতিতে জুতা ও রং নিক্ষেপ করে। আমরা শুধু সেই সিলসিলাতেই আজ আবার জুতা নিক্ষেপ করেছি। যাতে বার্তা দিতে পারি, বাংলাদেশের মাটিতে কোন ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জায়গা হবে না।”

এর আগে, টিএসসিতে মেট্রোরেলের আরেকটি পিলারে গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি হিসেবে ‘ঘৃণা স্তম্ভ’ ঘোষিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মুছে দেয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর পুনরায় শেখ হাসিনার গ্রাফিতি অঙ্কন করে গণজুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে ওই সময় শেখ মুজিবের গ্রাফিতি অঙ্কন করা না হলেও সম্প্রতি তা অঙ্কন করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এ গ্রাফিতি অঙ্কন করেছে তা জানা যায়নি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ক ষ প কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনীতি ছাড়ছেন না লো পেন, আইনি লড়াই করবেন

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ফ্রান্সের ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেন রাজনীতি ছাড়ছেন না। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম টিএফওয়ানকে মারিন লো পেন বলেন, ‘আমাকে সরিয়ে দেওয়া হলো ঠিকই; কিন্তু একই সঙ্গে অসংখ্য ফরাসি নাগরিকের কণ্ঠরোধ করা হলো।’ তিনি জানান ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের কোনো আইনি আবেদনের ওপর তাঁর ভরসা নেই।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সম্প্রতি লো পেনের সরকারি কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। আদালত জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর দল ন্যাশানাল র‍্যালি পার্টি (আরএন) তহবিলের প্রায় ৩০ লাখ ইউরো আত্মসাৎ করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই তহবিল একমাত্র পার্লামেন্টের কাজেই ব্যবহার করার জন্য বরাদ্দ থাকে।

আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন লো পেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখন রাজনীতি ছাড়ছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি আইনি পথ ছাড়ব না, আবেদন করব। আইনের যেটুকু রাস্তা খোলা আছে, তা সে যতই ছোট হোক, আমি সেই পথ ছাড়ব না।’

আদালতের রায়কে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন লো পেন। তিনি বলেন, ‘এই রায় গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ংকর। আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভ হয়নি। তাই দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না।’

লো পেন সাংসদ থাকতে পারবেন; কিন্তু তিনি পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।

লো পেনের বিকল্প কে?

লো পেনের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মধ্যে চার বছর তাঁকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার রায় ঘোষণার আগেই শুনানি চলাকালে উত্তেজিত লো পেনকে আদালতকক্ষ থেকে চলে যেতে দেখা যায়। এই রায়ের পর আগামী নির্বাচনে তাঁর লড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

লো পেনের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর তাঁর দলের প্রেসিডেন্ট ২৯ বছর বয়সী জর্ডন বারদেলাকে ২০২৭ সালের নির্বাচনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। জনপ্রিয়তার নিরিখে লো পেনের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন তিনি।

আদালত লো পেনের সঙ্গে তাঁর দলের আরও আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে ১২ জন পার্লামেন্টারি অ্যাসিস্ট্যান্টকেও দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত।

রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

এই রায়ের পর ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুসহ একাধিক রাজনীতিবিদ আদালতের ভোটে লড়তে দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে ‘খুব বড় বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন ‘লো পেনের ওপর পাঁচ বছর ভোটে লড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এ রকম হয়েছে।’

রাশিয়া এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে এই রায় ইউরোপের গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।

আরও পড়ুনদোষী সাব্যস্ত লো পেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা৩১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্রের মূলনীতি প্রশ্নে বিপরীত অবস্থানে বিএনপি ও জামায়াত
  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
  • ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
  • ইউরোপের শহরগুলোতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
  • নির্বাচনের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেই গণতন্ত্র হয় না: নুসরাত তাবাসসুম
  • নির্বাচনের কথা বলে ফেনা তুলে ফেললেই গণতন্ত্র হয় না: নুসরাত তাবাসসুম
  • ট্রাম্প, নেতানিয়াহু, মোদি ও এরদোয়ানের মধ্যে কেন এত মিল
  • নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায় ভারত
  • রাজনীতি ছাড়ছেন না লো পেন, আইনি লড়াই করবেন