এক ব্যাগ রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে তিন ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি
Published: 19th, January 2025 GMT
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে এক ব্যাগ রক্ত চুরির সময় ধরা পড়েছেন দুই ব্যক্তি। শনিবার বিকেলে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। সেখানে তারা জানান, এক ব্যাগ রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে তিন ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করতেন তারা।
আজ রোববার দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে স্যালাইন মিশিয়ে বিক্রি করত এ প্রতারকচক্রটি। তাদের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ছিল।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- তারাকান্দা উপজেলার গোয়াইলকান্দি গ্রামের আবদুর রহমান খানের ছেলে মো.
সংবাদ সম্মেলনে ওসি বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মো. সেলিম মিয়া বাদী হয়ে এ ঘটনায় শনিবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর তারা জানান, বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে তারা রক্ত সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। তারা অনেক বড় চক্রের সঙ্গে জড়িত। নগরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে তারা মানুষের ক্ষতি করছেন। মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে, এমন ব্যক্তিদের রক্ত সংগ্রহ করে, সরকার অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত না নিয়ে তারা ভুয়া ব্লাড ব্যাংকের কথা বলে এসব রক্ত বিক্রি করেন।
একটি সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের অসাধু কর্মচারীদের মাধ্যমে রোগীর স্বজনদের দেওয়া অপ্রয়োজনীয় রক্ত এই প্রতারক চক্র সংগ্রহ করে। এছাড়া মাদকসেবীদের কাছ থেকেও রক্ত সংগ্রহ করে কৌশলে তা ব্যাগে ভরে। পরে এ সব রক্ত গ্রুপ হিসেবে স্যালাইনে পুশ করে একাধিক ব্যাগ তৈরি করে। পরে এ সব রক্ত ব্লাড ব্যাংকের ওই সব অসাধু কর্মচারীদের মাধ্যমে হাসপাতালে রোগীদের কাছে ও বিভিন্ন ক্লিনিকে বিক্রি করে। এভাবে তারা একটি বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল রক্ত বিক্রি করে আসছেন।
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবাইলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো.শহিদুল ইসলাম খান বলেন, রক্তের ভেতরে স্যালাইন মেশানোয় নানা ধরণের ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করে। ফলে মানবদেহে বড় ধরণের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য রক্ত পুশ করার সময় সতর্ক হতে হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক (প্রশাসক) ডা. মাঈন উদ্দিন খান বলেন, প্রতারকদের কাছে যে রক্ত পাওয়া গেছে, এসব রক্ত হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের না। বাইরে থেকে সংগ্রহ করে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজনদের কাছে বিক্রির চেষ্টা করেছে। রোগীর স্বজনরাই কৌশলে প্রতারকদের আটক করে তাদের কাছে জানান। পরে থানা-পুলিশের কাছে তাদের সোপর্দ করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ
এছাড়াও পড়ুন:
মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।
এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।
ঢাকা/কাওছার/রফিক