পরিচালক গর্ভপাতে বাধ্য করায় অভিনয় থেকে দূরে চলে যান মান্দানা
Published: 19th, January 2025 GMT
ইরানি অভিনেত্রী-মডেল মান্দানা করিমি চর্চায় উঠে এসেছিলেন বলিউডের ‘কেয়া কুল হ্যায় হাম ৩’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে। তার আগে বিগ বসে অংশগ্রহণ করে লাইমলাইটে উঠে আসেন তিনি। তবে শোবিজ জগত ছেড়ে এখন অন্য পথ বেছে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ৩৬ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বলেন, ‘অভিনয় এমন একটি কাজ ছিল যা আমি কখনই পছন্দ করিনি, এই শিল্পও নয়। আমি সেখানে যে সময় কাটিয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তবে এটি এমন কিছু ছিল না যার জন্য আমি ক্ষুধার্ত বা পাগল ছিলাম।’
অভিনয় ছেড়ে তিনি মন দিয়েছেন ইন্টেরিয়ার ডিজাইনিং এবং শিক্ষকতা পেশায়। তার কথায়, ‘এখনও আমার কাস্টিং ডিরেক্টর বন্ধুরা আমাকে অডিশনের জন্য ডাকে এবং আমাকে বলতে হবে যে আমার এত সময় নেই। আমার প্রকল্প, ইভেন্ট এবং আমার স্কুল রয়েছে যার উপর আমি বর্তমানে ফোকাস করছি।’
লক আপের মঞ্চে মান্দনা জানিয়েছিলেন, স্বামী গৌরব গুপ্তার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই এক বলিউড পরিচালকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। সম্পর্কে থাকাকালীন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মান্দনা। নায়িকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বেঁকে বসে পরিচালক প্রেমিক। তবে সেই পরিচালকের নাম মুখে আনেননি মান্দানা।
তিনি বলেন, ‘ওই পরিচালক আমাকে বলেন, ফের বাবা হওয়ার জন্য আমি তৈরি নই। তুমি ৩৩ বছর বয়সে এত জলদি গর্ভবতী হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি। তখন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। আমার নিজের বাড়ি বলেও কিছু ছিল না। তখন গৌরবের সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদও হয়নি। প্রেমিক সন্তানকে মেনে নিতে রাজি ছিল না আমার আর কোনও উপায় ছিল না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অস্তিত্ব সংকটে বাঘ ভেবে ভুল বোঝা প্রাণীটি
বছর তিনেক আগের ঘটনা। ঢাকার ধামরাইয়ের কালিঘাট এলাকায় কৃষকরা জমিতে ধান কাটতে যান। এ সময় ধান ক্ষেতে বাঘের মতো একটি প্রাণী দেখে তারা চিৎকার করে ওঠেন। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন লাঠি নিয়ে ধাওয়া করে প্রাণীটিকে মেরে ফেলেন। ছোপ ছোপ দাগ দেখে বাঘ বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু বন বিভাগ জানিয়েছে, বাঘের থেকে অনেক ছোট এই প্রাণীটি আসলে মেছো বিড়াল। এভাবে না জেনে মানুষ প্রায়ই মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। নিরীহ নিশাচর এ বন্যপ্রাণীকে মানুষ ‘মেছোবাঘ’ নামে ডাকে। আর এ নামের কারণে ভুল ধারণার শিকার হয়ে প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সংগঠন (আইইউসিএন) মেছো বিড়ালকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। প্রাণীটি বাংলাদেশেও বিপন্ন। প্রাকৃতিক জলাভূমি কমায় প্রাণীটির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। পরিবেশ-প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণীটির অবদান গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাসস্থান সংকুচিত হওয়া ও মানুষের সচেতনতার অভাব প্রাণীটির জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ শনিবার দেশে প্রথমবারের মতো নানা আয়োজনে বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস-২০২৫ উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জনগণ যদি হয় সচেতন, মেছো বিড়াল হবে সংরক্ষণ’।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের বন অধিদপ্তরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বন্যপ্রাণী গবেষকরা বলছেন, মেছো বিড়াল জলে ও স্থলে সমানভাবে তুখোড় শিকারি। সাধারণত খাল, বিল, নদী, পুকুর ও জলাভূমি আছে– এমন জায়গাতেই এদের বসবাস। সুন্দরবনে বেশ ভালো সংখ্যক আছে। মেছো বিড়াল মাছ, সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, পাখি, খরগোশ, গুইসাপসহ মাঝারি আকারের অনেক প্রাণী শিকার করে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশ বলেন, ২০০৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংগৃহীত ৩৬১টি সংবাদ পর্যালোচনা করে বাংলাদেশে ১৬০টি মৃত মেছো বিড়ালের খোঁজ পেয়েছিলাম। সবই মনুষ্য সৃষ্ট কারণে। ৮৩ শতাংশ সংবাদ মেছো বিড়ালকে ভুল প্রাণী ভেবেছে। কোথাও বলা হয়েছে বাঘ, কোথাও চিতা বাঘ, কোথাও বাঘের বাচ্চা।
তিনি বলেন, মেছো বিড়াল জনরোষ থেকে উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা বনের প্রাণী নয়। ভুলভাবে ধরা আর ভুল জায়গায় ছাড়ার কারণে এই বিড়ালরা খুব কম দিনই বাঁচে। মেছো বিড়াল অবমুক্ত করার অত্যন্ত জনপ্রিয় জায়গা বাইক্কা বিল।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, মেছো বিড়াল সংরক্ষণে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। মেছো বিড়াল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। মেছো বিড়ালের জন্য বাসস্থান রক্ষা, বন সংরক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে।