ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরে অন্যান্য স্টল-প্যাভিলিয়নের চেয়ে অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি (ক্রোকারিজ) পণ্যের প্রতি একটু বেশিই ভিড় দেখা গেছে। মেলায় এবার অন্যান্য পণ্যের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে অ্যালুমিনিয়ামের। 
ক্রেতারা জানালেন, বাজারের তুলনায় পণ্যের সমারোহ বেশি থাকায় এসব স্টল-প্যাভিলিয়নে আসছেন তারা। তবে দাম ও মান নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখা যায়, অ্যালুমিনিয়ামের দোকানগুলোতে স্তরে স্তরে সাজানো তৈজস। নতুন নতুন ডিজাইনের বৈচিত্র্য নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। গৃহস্থালির জিনিসপত্র হওয়ায় আনাগোনা বেশি নারীদেরই। এক ছাদের নিচে নানা ধরণের আসবাবপত্রের সমারোহ থাকায় তাদের আগ্রহ বেশি। নানান বয়সের ক্রেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী দেখছেন জিনিষপত্র।
মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের অন্যতম আগ্রহের পণ্যের মধ্যে আছে প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, ইন্ডাকশন চুলা, নন স্টিক ফ্রাইপ্যানসহ গৃহস্থালির দেশী-বিদেশি সামগ্রী। মাইক্রোওয়েভ ওভেন, প্রেসার কুকার, ওয়াশিংমেশিনসহ গৃহস্থালির ১০ থেকে  ২০টি পণ্যের প্যাকেজে মূল্যছাড় ঘোষণা করেন আমদানিকারকরা। কিয়াম, এসকেবি, টপার, নোয়া, আরএফএলের কুক স্টারসহ দেশীয় কোম্পানিগুলোও মূল্যছাড়সহ নানা উপহার ঘোষণা করেছে নিজেদের পণ্যে।


বাণিজ্য মেলায় অ্যালুমিনিয়াম পণ্য, নন-স্টিক কড়াই, সসপেনের পাশাপাশি তিন স্তরের স্টিলের গৃহস্থালি পণ্য নিয়ে এসেছে এসকেবি কুকওয়্যার। দুই বছর ধরে এসএ স্টিলের তৈরি ব্যয়বহুল এসব পণ্য বাজারজাত করছে এসকেবি।


বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, বিশেষ ক্ষেত্রে মূল্যছাড়সহ সব ধরণের পণ্য বিক্রি হচ্ছে পাইকারি দামে। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ডিজাইনের জিনিসপত্র দেখা যায়। তবে দাম একটু বেশি। অনেক দর্শনার্থী বলেন, এখান থেকে আসল পণ্য পাওয়া সম্ভব বলে তারা মেলায় আসেন।


বিক্রেতারা বলছেন, বেশিরভাগ পণ্য পাইকারি দামে বিক্রি করছেন তারা। সেই সঙ্গে আছে নির্দিষ্ট পণ্যে মূল্যছাড়। তাই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। কারো কারো মত, শুধু বিক্রি নয়, ক্রেতাদের কাছে নিজেদের নতুন পণ্যের পরিচয় করানোটাই আসল উদ্দেশ্য।


তবে অনেকের অভিযোগ, নামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হলেও, অনেক স্টল-প্যাভিলিয়নেই বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের অনেক পণ্য সামগ্রী। অনেক পণ্যসামগ্রী বিদেশি বলা হলেও তা দেশে তৈরি হচ্ছে।


২৪তম আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও ৭টি দেশের ৪৬টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলার গেট ও বিভিন্ন স্টল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা। এবারই প্রথম মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ