সাম্প্রতিক সময়ে এত সংখ্যক সংবাদকর্মী চাকরিচ্যুত হওয়ায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ব‌লে‌ছেন, ‘‘কাছাকাছি সময়ে এত বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীর চাকরি হারানোর ঘটনা নজিরবিহীন।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘চাকরি হারিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের পরিবারে ইতোমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। এতে একই সময়ে ব্যাপক সংখ্যক সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির ন্যক্কারজনক ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।’’     

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার দাবিও জানান তিনি।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘‘ব্রডকাস্ট জানার্লিস্ট সেন্টার (বিজেসি) থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, গেল কয়েক মাসে বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতায় ১৫০ জনের বেশি গণমাধ্যমকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রিন্ট ও অনলাইন পোর্টালে চাকরি হারিয়েছেন আরো অন্তত ২ শতাধিক। এভা‌বে সাংবাদিকদের জীবিকা অনিশ্চিত করে স্বাধীন সাংবাদিকতার বিকাশ অসম্ভব।’’

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘আমাদের দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্ন চাপে কখনোই স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করতে পারেনি। ফলে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন অনেক সময়ই বাধাগ্রস্ত হয়। সাংবা‌দিকদের পেশাজীবী সংগঠনসমূহের দায়িত্ব এ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সে প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকতার মান সমুন্নত রাখতে সহায়তা করা। সমস্যার সমাধানে মূল বিষয়কে এড়িয়ে অসহায় চাকরিজীবীদের সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির মত চরম শাস্তি অমানবিক ও ন্যায়বিচার পরিপন্থি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ কত র চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর সামনে ৪ জামায়াত নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতারা

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সামনে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে  মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি দুঃখজনক। যেহেতু, আমার কক্ষে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দানের ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪

শরীয়তপুরে ডাকাতির ঘটনায় আরো এক জনকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ

মারধরের শিকার জামায়াত নেতারা হলেন- উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের চার নেতা ইউএনও অফিসে যান কোনো একটি কাজে। ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে দলটির কয়েকজন নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে কেন জানতে ইউএনও’র কাছে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বলেন- এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে, এ কথা বলেই, বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়েই আরো কয়েকজনকে ডেকে আনেন।

এরপরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খা, মানিক খা, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন ইউএনওর কক্ষে ঢুকে  জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। পরে জামায়াত নেতাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

এদিকে, জামায়াত নেতাদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় উপজেলাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কেএম হেসাব উদ্দিন কয়েক’শ নেতাকর্মী নিয়ে ইউএনও অফিসে যান এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান। 

বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেন-দরবার চলে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস বলেন, “যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসব সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি- যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে। এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আলোচনা করা হবে।”
 
সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কেএম হেসাব উদ্দিন বলেন, “সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির এসব ক্যাডাররা ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গেছিল। এসময় জামায়াত নেতারা বাধা দিলে আমাদের চারজনকে তারা মারধর করেছে। ইউএনওকেও কয়েকদফা মারধর করতে গেলে ঠেকিয়ে দেওয়া হয়। পরে মারতে না পেরে অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করেছে ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “৫ আগস্টের পর এসব নেতারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির গডফাদার হয়েছে। চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, মাদক কারবারি, চুরি- ডাকাতি, অপহরণ-ছিনতাই থেকে শুরু করে সব অপকর্ম করে বেড়ালেও এদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে  না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

এ বিষয়ে জানতে প্রধান অভিযুক্ত মজিবুর রহমান ও মানিক খার মোবাইলে কল করা হয়। তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

সুজানগর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। আহতরা মামলা করেত আসেননি। তারা এলেই মামলা নেওয়া হবে। যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ