পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুন্ন রেখে নাগরিকত্ব প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নারী শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শতাধিক পর্দানশীন ছাত্রী এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় দাবি আদায়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দেন তারা। 

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব না দেওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ। পর্দানশীন নারীদের ১৬ বছর ধরে নাগরিকত্ব না দেওয়ার প্রতিবাদে এবং এর সঙ্গে জড়িত স্বৈরাচারদের শাস্তির দাবিতে আমরা আজ এখানে সমবেত হয়েছি। গত ১৬ বছর ধরে ইসির কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধু মুখচ্ছবির অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে, যা এক প্রকার মানবতাবিরোধী অপরাধ। যারা পর্দানশীন নারীদের এ মানবাধিকার হরণ করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।”

তারা আরো বলেন, নাগরিকত্ব ছাড়া পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না। অথচ সম্পত্তি বিক্রি করতে পারলে তিনি চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারতেন। এতে অনেক পর্দানশীন নারী অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। অনেক বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা পর্দানশীন নারী এনআইডির অভাবে ত্রাণ নিতে পারছেন না, বাসাভাড়া নিতে পারছেন না এবং তাদের বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না। পর্দার সঙ্গে কোন চাকরি করে জীবন নির্বাহ করতে পারছেন না। 

পর্দানশীন শিক্ষার্থীরা বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। গত ১৬ বছর শুধু পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে নারীদের সঙ্গে যে বৈষম্য হয়েছে, আমরা তার সমাপ্তি চাই। অবিলম্বে পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুন্ন রেখে এনআইডি প্রদান করা হোক।

পর্দানশীন শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, এনআইডির মুখচ্ছবি পরিবর্তনযোগ্য। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। এ সমস্যা সমাধানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধী শনাক্তে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তির আশ্রয় নিচ্ছেন। যেমন- র‌্যাব ওআইভিএস প্রযুক্তি, সিআইডি এএফআইএস প্রযু্ক্তি ব্যবহার করছেন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, পর্দানশীন মহিলাদের এনআইডি প্রদানে আইনেও কোন বাধা নেই। বিশেষ করে, পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০ এবং ২০২৩-এ পরিচয় সনাক্তে চেহারার ছবির কথা উল্লেখ নেই। এমনকি বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে ফেসিয়াল রিকগনিশনকেও বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কিন্তু তারপরও স্বৈরাচারী মনোভাব থেকেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করে রেখেছিল সাবেক ইসি কর্মকর্তারা। 

এ সময় তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুন্ন রেখেই এনআইডি প্রদান করতে হবে; বিগত ১৬ বছর যাবত পর্দানশীন নারীদের মানবাধিকার হরণ করা ইসি কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে; পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ায় মহিলা অফিস সহকারী বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দেন। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে তাদের দাবিগুলো না মানলে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করা হবে।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে ভারতীয় এনআইডি-বিদেশি পিস্তলসহ নারী গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নাদিরা আক্তার হ্যাপি (৫০) নামে নারীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। 

এসময় তার কাছ থেকে ভারতীয় এনআইডি কার্ড, বিদেশি পিস্তল, খেলনা পিস্তল, রামদা, চাপাতি, হাসুয়া, ছুরি, চায়না চাপাতি, চাকু, হ্যামার, শিশা টানা পাইপ, বড় ত্রিশূল, ছোট ত্রিশূল, হুক্কা, কল্কি, ৫টি সৌদি রিয়াল ও ২ হাজার ৮০০ ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার নাদিরা আক্তার হ্যাপি পৌর শহরের শিলাসী এলাকার নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা হৃদয়ের বাসার ভাড়াটিয়া। তৃতীয় স্বামী আবু হোসেনের সাথে ওই বাসায় বসবাস করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪ টায় পৌর শহরের শিলাসী এলাকার নিষিদ্ধ ষোষিত ছাত্রলীগ নেতা হৃদয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।

গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিব্বিরুল ইসলাম ওই নারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, যৌথ বাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, পৌর শহরের শিলাসী এলাকার নিষিদ্ধ ষোষিত ছাত্রলীগ নেতা হৃদয়ের বাসায় অস্ত্রসহ এক নারী বসবাস করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে নাদিরা আক্তার হ্যাপিকে গ্রেপ্তার করে। ওই নারী অবৈধ অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সেবনকারী হিসেবে পরিচিত। গ্রেপ্তারের পর যৌথ বাহিনী ওই নারীকে গফরগাঁও থানায় হস্তান্তর করে।

ওসি মো. শিব্বিরুল ইসলাম বলেন, “ওই নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/মিলন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহে ভারতীয় এনআইডি-বিদেশি পিস্তলসহ নারী গ্রেপ্তার
  • মৃত ব্যক্তির এনআইডি সংশোধনের ক্ষমতা পেলেন মহাপরিচালক
  • ছবি নয়, ফিঙ্গারপ্রিন্টে এনআইডি চায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পর্দানশীন নারীরা