যুদ্ধবিরতি কার্যকর, বিরোধিতায় ইসরায়েলের ৩ মন্ত্রীর পদত্যাগ
Published: 19th, January 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভিরসহ তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পদত্যাগ করা ইতামার ইসরায়েলের কট্টর জাতীয়তাবাদী ধর্মীয় দল জিউইশ পাওয়ার পার্টির নেতা। তার দলের আরও দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে।
জিউইশ পাওয়ার পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আর ক্ষমতাসীন জোটের অংশ নয়। তবে দলটি বলছে, তারা সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করবে না। ইতামারের দল এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করে আসছে। তারা এটিকে ‘কলঙ্কজনক’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি বলে অভিহিত করেছে।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হ্যান্ডেলে এক পোস্ট দেন কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি। এর মধ্য দিয়ে টানা ১৫ মাস চলা এ যুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিরতি শুরু হচ্ছে।
পোস্টে মাজেদ আল-আনসারি বলেন, হামাস ও ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারীদের সমন্বয়ে স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
গাজাবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং সরকারি সূত্র থেকে নির্দেশনা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা শুক্রবার ছয় ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে গভীর রাতে চুক্তিটি অনুমোদন করে।
চুক্তি অনুযায়ী, ছয় সপ্তাহের প্রথম ধাপেই হামাস ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, তার বিনিময়ে ইসরায়েলও তাদের জেলে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে।
এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীতে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাও ছাড়তে হবে, আর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা পাবে বাড়ি ফেরার অনুমতি। এই সময়ে প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী লরিকে গাজায় ঢোকারও সুযোগ দেবে তেল আবিব।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে। এই ধাপেই মুক্তি পাবে পুরুষ ইসরায়েলি সেনারা। তৃতীয় ও শেষ ধাপে হবে গাজার পুনর্গঠন, যা শেষ হতে লাগবে কয়েক বছর।
তবে হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি স্থায়ী না হলে এবং ইসরায়েলি বাহিনী গাজা না ছাড়লে তারা প্রথম ধাপের পর আর কোনো জিম্মিকে ছাড়বে না।
চুক্তির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী কাতার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে যে জিম্মিরা মুক্তি পাচ্ছেন তাদের মধ্যে বেসামরিক নারী, শিশু, নারী সেনা, বয়স্ক ব্যক্তি, অসুস্থ ও আঘাতপ্রাপ্ত বেসামরিকরা রয়েছেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রোববারই তিন জিম্মির মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী, পরবর্তী ছয় সপ্তাহে নিয়মিত বিরতিতে এরকম ছোট ছোট দলে বাকিরাও মুক্তি পাবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় এক হাজার ২০০ নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করার প্রত্যুত্তরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্নে সামরিক অভিযানে নামে।
এরপর ১৫ মাসের অবিরাম যুদ্ধ গাজার প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বলছে। প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকাটির ২৩ লাখ বাসিন্দাকে হতে হয়েছে বাস্তুচ্যুত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল প রথম ধ প ইসর য় ল র পদত য গ মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কর্তৃপক্ষের আশ্বাস শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার
দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে একাডেমিক ভবনের ফটকের তালা খুলে কলেজে প্রবেশ করেন তারা।
আরো পড়ুন: সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন
আরো পড়ুন:
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুলেছে হল
আন্দোলনে ফিরছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা, ঢাকায় আসছেন প্রতিনিধিরা
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়াশ চন্দ্র দাস ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মৌনতা নাথ মিশি।
শিক্ষার্থীরা জানান, ওয়ার্ড ক্লাস সুবিধা ও হাসপাতাল চালুর দাবিতে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। গত ২০ এপ্রিল সড়ক অবরোধ করেন তারা। গত ২১ এপ্রিল দাবি না মানা পর্যন্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে শাটডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিভাগ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই দফা দাবি পূরণে আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কার্যক্রম চালুর আগ পর্যন্ত সপ্তাহে ছয়দিন সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস সুবিধা দিতে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেখানে পদায়ন।শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় বাস সরবরাহ। দ্রুত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ করে নতুন হাসপাতাল চালুতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়ায় আশ্বস্ত হন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। দাবি যথাযথ প্রতিফলন না হলে ভবিষ্যতে আন্দলোনে নামার কথাও জানান তারা।
গত কয়েকদিন ধরেই পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা না দেওয়ার প্রতিবাদ ও দ্রুত হাসপাতাল চালুর দাবিতে আন্দোলন করেছেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/মনোয়ার/মাসুদ