জিম্মিদের তালিকা না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না যুদ্ধবিরতি: নেতানিয়াহু
Published: 19th, January 2025 GMT
জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশে হামাসের দেবির কথা শুনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, মুক্তি দেওয়া হবে এমন জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা হামাস প্রকাশ না করা পর্যন্ত পূর্বনির্ধারিত সময়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে না। রোববার এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা। এর আগে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, ‘কারিগরি সমস্যার’ কারণে মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে জানিয়ে দিয়েছে, সকাল সাড়ে আটটার দিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। হামাসের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মুক্তি দিতে যাওয়া জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা যতক্ষণ পর্যন্ত না দেওয়া হবে, ততক্ষণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে না।’
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।চুক্তির প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। যার মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ইসরায়েল প্রথম ধাপে কারাগারে আটক সমস্ত ফিলিস্তিনি নারী ও ১৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তি দেবে। বন্দিদের সংখ্যা ৯৯০ থেকে ১,৬৫০-এর মধ্যে হতে পারে।
তবে এই যুদ্ধবিরতির আগেও গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বর্বর ইসরায়েল। হামলায় আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ হাজার ৮৯৯ জনে পৌঁছেছে। চলমান এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ১০ হাজার ৭২৫ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ২৩ জন নিহত এবং ৮৩ জন আহত হয়েছেন।অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল ক র যকর ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’