পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাক্ষ্য দিচ্ছেন সেই দিনের প্রত্যক্ষদর্শী মেজর সৈয়দ মো. ইউসুফ।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালতে তিনি জবানবন্দি দিচ্ছেন।

এর আগে এদিন বেলা ১১টার পর আদালতের বিচারকাজ শুরু। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ পারভেজ সাক্ষ্য পেছানোর আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর আলহাজ মো.

বোরহান উদ্দিন সাক্ষ্য নেওয়ার প্রার্থনা করেন। এ নিয়ে চলে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক। পরে ১১ টা ৪৭ মিনিটে আদালতে সাক্ষ্য দিতে ওঠেন মেজর সৈয়দ মো. ইউসুফ। সেদিন কী ঘটেছিলো, তিনি কীভাবে সেদিন সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছেন এসব বিষয় সাক্ষ্যে তুলে ধরছেন তিনি। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করছেন।

এরআগে মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।


এদিন, আসামিদের জামিন শুনানি হবে। এ জন্য সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে হজির হন স্বজনরা। স্বজনদের যেন জামিন হয় এ জন্য তারা মোনাজাত করেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।

হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।

অন্যদিকে, হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজও শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।

ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেধে দিয়েছে সরকার।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নাচোলে খাসজমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় খাসজমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত তরিকুল ইসলাম বকুল (৫০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। 

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নাচোল থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন । 

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে আহত হন গোমস্তাপুর উপজেলার হোগলা এলাকার মৃত তামিজ উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম বকুল।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় বিএনপির দু’ গ্রুপে সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাচোল উপজেলার হাজারদীঘী বিলের প্রায় ৬০ বিঘা খাস জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করছেন একই উপজেলার চন্দ্রনা গ্রামের লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে খাসজমি দখল নিতে আসে গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ি এলাকার ২৫-৩০ জন ব্যক্তি। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়ায়। এ ঘটনায় চারজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে। তাদের মধ্যে তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই তিনজনের মধ্যে ছিলেন তরিকুল ইসলাম বকুলও।

নাচোল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, “জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তরিকুল ইসলাম বকুল গুরুতর আহত হন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ দেননি নিহতের স্বজনরা। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ