ঝালকাঠির নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের ওপর হামলা ও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিরা। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলখানা সড়কের সামনে অভিভাবক ও স্থানীয়দের ব্যানারে একটি মানববন্ধন করা হয়। 

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে জেলার সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ।

ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- প্রধান শিক্ষক আকছেদ আলী খন্দকার, কলেজ শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব উপাধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির জেলা শাখার সভাপতি আনিচুর রহমান পলাশ ও আহত প্রধান শিক্ষকের মেয়ে নিপু আক্তারসহ আরো অনেকে।

এ সময় বক্তারা বলেন, “বর্তমানে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে অ্যাডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছে।”

এ সময় প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা। মানববন্ধন শেষে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামালার বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষকরা।

অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলখানা সড়কের সামনে অভিভাবক ও স্থানীয়দের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান শিক্ষককে আওয়ামী লীগের দোষর আখ্যা দিয়ে তার বিচার চান তারা।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পূর্ব প্রস্তুতি চলাকালে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন ১৫ জন ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেন এমন অভিযোগে তাকে মারধর করে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.

সাইফুল ইসলাম ও সদর থানা পুলিশের একটি দল প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ির মধ্যে বসেই পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন। পরে তাকে বরিশাল শেরেই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢাকা/অলোক/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ওপর হ ম এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।

এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।

এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”

আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ দাবিতে নোবিপ্রবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • সেন্টমার্টিনে পর্যটক উন্মুক্ত রাখার দাবি
  • সাদ্দা‌মের ফাঁসির দাবিতে দে‌বিদ্বা‌রে বি‌ক্ষোভ