জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক অ্যাপের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়েছে। দেশটিতে এখন অ্যাপল ও গুগল অ্যাপ স্টোরেও অ্যাপটি পাওয়া যাচ্ছে না। রবিববার (১৯ জানুয়ারি) বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা আগে অ্যাপটি অফলাইনে চলে গিয়েছে। মার্কিন ব্যবহারকারীরা আর টিকটকে ঢুকতে পারছেন না।
মার্কিন ব্যবহারকারীরা অ্যাপটিতে ঢুকতে চেষ্টা চালালে একটি বার্তা দেখাচ্ছে টিকটক, যেখানে বলা হয়েছে- টিকটক নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে, আপনি এখন টিকটক ব্যবহার করতে পারবেন না।”
আরো পড়ুন:
টিউলিপকে দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যা দিলেন ইলন মাস্ক
ভয়াবহ দাবানলের হুমকিতে ক্যালিফোর্নিয়ার ৬০ লাখের বেশি মানুষ
টিকটকের বার্তায় আরো লেখা রয়েছে, “আমরা ভাগ্যবান যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর টিকটক পুনরায় চালুর বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন।”
এর আগে শুক্রবার টিকটকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিদায়ী জো বাইডেন প্রশাসন শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত না বদলালে রবিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যাবে টিকটক।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সোমবার (২০ জানুয়ারি) দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ‘সম্ভবত’ টিকটককে নিষেধাজ্ঞা থেকে ৯০ দিনের জন্য অব্যাহতি দেবেন।
গত শনিবার ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে বলেন, “৯০ দিনের মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুব বেশি, কারণ এটি উপযুক্ত। যদি আমি এটি করার সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে সম্ভবত সোমবারই এটি ঘোষণা করব।”
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু অ্যাপটির চীন-ভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে বাইডেন প্রশাসন।
মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা, টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে। তবে বরাবরই চীন এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের এপ্রিলে পাস হওয়া নিষেধাজ্ঞা আইনটি বহাল রাখেন। ওই আইন অনুসারে, চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সকে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে তাদের টিকটক প্ল্যাটফর্মটি মার্কিন কোনো কোম্পানি কাছে বিক্রি করতে হবে, অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হবে টিকটক।
টিকটকের দাবি, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের ১৭ কোটি টিকটক ব্যবহারকারীর জন্য বাকস্বাধীনতা সুরক্ষা লঙ্ঘন করে।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটক ইস্যুটি সমাধানের করার আশ্বাস দিয়েছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ওই অনুষ্ঠানে টিকটকের প্রধান নির্বাহী শো জি চিউ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ট কটক ব যবহ র ট কটক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ল
শেয়ারবাজারের নেগেটিভ ইকুইটি বা ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ানো হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক জরুরি সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এত দিন বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এ কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির জরুরি সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, এই সুবিধা নিতে হলে প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে তাদের ঋণাত্মক ঋণ হিসাব বা অনিরূপিত (আনরিয়ালাইজড) লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সেই পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসহ ৩০ জুনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে। যারা এই পরিকল্পনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেবে, তারা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবে।
শর্তসাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, ঋণাত্মক ঋণ হিসাব নিয়ে একেক প্রতিষ্ঠানের সমস্যা একেক রকম। কারও নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বা প্রভিশনিং করতে হবে বেশি, কারও কম। এই বাস্তবতায় শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অতীতে সর্বজনীনভাবে বারবার সময় বাড়ানোর পরও প্রতিষ্ঠানগুলো এই সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নিজে থেকে এই সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়, সে জন্য শর্ত আরোপ করেছে বিএসইসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে সময় বাড়ানো হলেও পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পনাসাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানভেদে এই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে।
ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের এই সমস্যা তৈরি হয় মূলত ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের পর। ওই ধসের পর শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া বিপুল ঋণ আর আদায় করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার শেয়ারের বাজার মূল্য কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করেও পুরোপুরি ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ নেই। সে জন্য এসব ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে এত দিন নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ে ছাড় পেয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে এই সময় শেষ হয়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ঋণাত্মক ঋণের বিপরীতে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা দেখা দেয়। আবার ঋণ সমন্বয় করতে গিয়ে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রির চাপও তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ঋণাত্মক ঋণ হিসাব সমন্বয়ে আরও সময় চায় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। ডিবিএ ও বিএমবিএর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিএসইসির হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। এ নিয়ে শেয়ারবাজারের শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা গত মঙ্গলবার বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকও করেন।
বিএসইসিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিরা ২০৩০ সাল পর্যন্ত ঋণাত্মক ঋণ হিসাব ও লোকসানে থাকা ডিলার হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ছাড়ের দাবি জানিয়েছিলেন।