রাজনীতির মধ্যে না ঢুকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই: সিইসি
Published: 19th, January 2025 GMT
আইন-কানুন মেনে রাজনীতির মধ্যে না ঢুকে কমিশন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকা কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য আমরা ইউএনডিপির কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তারা খুব দ্রুত সময়ে সহায়তা করেছে। আমরা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তাদের সহযোগিতা চাই। আমাদের মতো তারাও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে আগ্রহী।’
রোববার সকালে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে ইউএনডিপি কর্তৃক ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের সরঞ্জাম প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় কমিশনের অন্যান্য সদস্য এবং কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফেন লিলার জানান, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, তা নির্ধারণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০টি স্ক্যানার এবং বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহে ব্যবহারের জন্য ৪ হাজার ৩০০টি ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ দিচ্ছে’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, “অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ করে দিচ্ছে, যা দেশের নারীদের প্রান্তিক ও পরনির্ভরশীল অবস্থান থেকে উদ্যোক্তা কিংবা নেতৃত্বের অবস্থানে উন্নীত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে নারীর ক্ষমতায়নে অরেঞ্জ বন্ডের উদ্যোগ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং কর্মশালার সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
যমুনা অয়েলের ৯ মাসে মুনাফা বেড়েছে ৩৭.৭৮ শতাংশ
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন কেবল একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়-এটি একটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। বর্তমানে নারীরা দেশের শ্রমশক্তির প্রায় ৪১ শতাংশ হলেও, মাত্র ৬ শতাংশ নারীর আনুষ্ঠানিক অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে। নারী ক্ষমতায়নের জন্য নারী-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলিতে অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ ও বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্ষুদ্রঋণের জনক ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব' বা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নির্গমন বিষয়ের যে ভিশন তার ক্ষেত্রে সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে অরেঞ্জ বন্ড।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখের সভাপতিত্বে কর্মশালাটির সূচনা হয়। বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত উক্ত কর্মশালায় বিএসইসির কর্মকর্তা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইউএনডিপি, আইএফসি বাংলাদেশ ও পুঁজিবাজারের ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানসমূহসহ বন্ড বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কর্মশালায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উক্ত প্রবন্ধে দেশের টেকসই বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য বিএসইসির গৃহীত উদ্যোগসমূহ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, ইউএনডিপির সাথে বিএসইসির সমঝোতা স্মারক, দেশে অরেঞ্জ বন্ডের সম্ভাবনা সম্পন্ন খাতসমূহ, অরেঞ্জ বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
এছাড়া কর্মশালায় ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তানজিম আলমগীরের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্যানেল আলোচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ড. মালিহা মোজাম্মেল, আইএফসি বাংলাদেশের ইএসজি অফিসার মিজ লোপা রহমান অংশ নেন।
প্যানেল আলোচনায় দেশের বন্ড মার্কেটের নানাদিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। এছাড়া কর্মশালায় একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভা হয়। সভায় দেশের বন্ড মার্কেট এবং বিশেষত অরেঞ্জ বন্ড এর সুযোগ, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্ন ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের (আইআইএক্স) প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি আমেরিকান উদ্যোক্তা অধ্যাপক দুরীন শাহনাজের পক্ষ হতে ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের পরিচালক দেবাশীষ রায় ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সিইও বিজন ইসলাম কর্মশালায় অরেঞ্জ বন্ড ও বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।
বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ উক্ত কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “নারীরা দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক এবং তাদের দ্বারাই দেশের অর্ধেক অর্থনীতি ও কর্মশক্তি গঠিত। তাই নারীদের সাথে নিয়েই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগোতে হবে এবং এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এবং এখানে ইক্যুইটি ভিত্তিক পণ্যের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন বৈচিত্রপূর্ণ পণ্য থাকা উচিত যা বাজারের বৈচিত্রায়ন করবে এবং বাজারকে আরো টেকসই রূপ দিবে। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারে।”
ঢাকা/এনটি/এসবি