নাটোর সদর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সদর থানার ভেতরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে এসআই আমিনুল ইসলাম নামে এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ঘুষ নিচ্ছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে রাতেই তাকে সদর থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এসআই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এক মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থী সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে ‘হ্যান্ডশেকের বাহানায়’ ঘুষ দেন। পরে আমিনুল তা নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন।

এই ভিডিওটি ধারণকারী অপর ভুক্তভোগী মামুন হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তিনি তার পরিচিত মোবারক হোসেনের হয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে থানায় আসেন। এসময় থানার ভেতরেই ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম তার কাছে ঘুষ দাবি করেন।

এসময় অন্য এক আবেদনকারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ধারণ করে রাখেন ভুক্তভোগী মামুন। পরে পুনরায় তার কাছে ঘুষ দাবি করলে প্রতিবাদ করে থানা থেকে বেড়িয়ে আসেন তিনি। আবেদনকারী মোবারককে বারবার ফোন করে ঘুষ দাবি করেন ওই এসআই।

ভুক্তভোগী মামুন বলেন, যারাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন তাদের থেকে কৌশলে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা টাকা আদায় করেন। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসেও যদি তারা এভাবে ঘুষ নেয় তাহলে তো আর বলার কিছু থাকল না। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এসআই আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

সদর থানার ওসি মাহবুর রহমান বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। সেটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা হয়েছে। অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ ক ল য় র ন স র জন য সদর থ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

৬ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন

২০১৫ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী (২৫) নামে এক ছাত্রশিবির নেতাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহত শাহাব উদ্দিনের বাবা। ঘটনার সময় শাহাব উদ্দিন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের হিসাববিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

শাহাব চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পশ্চিম চান্দিশকরা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারী ছেলে।  

মামলায় চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তী, পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ, এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার ও এসআই ইব্রাহিমসহ ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তা, কনস্টেবল, গাড়িচালক ও আনসার সদস্যকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত মামলার তদন্তের আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মো. শাহ জাহান।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শাহাব উদ্দিন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানা-পুলিশ শাহাব উদ্দিনকে পৌর এলাকার পশ্চিম চান্দিশকরা বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করে। রাতে পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে তার সন্ধান পায়নি। পর দিন সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার। 

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, চৌদ্দগ্রামের তৎকালীন এমপি মুজিবুল হক, পৌর মেয়র মিজানুর রহমান, র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীর হুকুমে অন্যান্য আসামিরা প্রত্যক্ষ সহায়তায় পুলিশ শাহাব উদ্দিনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। 

মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারী বলেন, ‘এতো দিন ভয় ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় মামলা করিনি। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে ন্যায় বিচার পাব। সেই ভরসা থেকে মামলা করেছি। আমার ছেলে কোনো অপরাধ করে থাকলে তাকে কারাগারে রেখে বিচার করা যেত। তাকে মাথায় গুলি করে হত্যার পর চৌদ্দগ্রামের শামুকসার নাভানা প্রকল্পের সামনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে বলে পুলিশ টিভি ও পত্রিকায় প্রচার করে। এছাড়াও ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে আমার ছেলের বিরুদ্ধে উল্টো অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দেয় পুলিশ।’ 

বাদীর আইনজীবী মো. শাহ জাহান সমকালকে বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ছাত্রশিবির করার অপরাধে ঠাণ্ডা মাথায় তাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু একজন নিরপরাধ ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার নির্দেশ ওই দিন কারা দিয়েছিল অভিযোগের তদন্ত হলে আরও অনেক পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনৈতিক নেতার নাম বের হবে। আশা করি বুধবার আদালত মামলার এফআইআর ও তদন্তের নির্দেশনা দেবেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের ছুরিকাঘাতে সুরুজ মিয়া আহত, আটক ১
  • তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় সশস্ত্র হামলা, ১৪ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ  
  • কালীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত যুবক নিহত
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০
  • শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
  • ৬ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন
  • ৬ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন
  • নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার হাত বিচ্ছিন্ন
  • মুন্সীগঞ্জে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্যসহ ছিনতাইকারী বাবু মিজি আটক
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ শুরু