তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানির দিন আজ ধার্য রয়েছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শুনানির কার্যতালিকায় রয়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড.

সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রিভিউটি শুনানির জন্য ১৯ জানুয়ারি রাখেন।

গত ১৬ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে গত আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রিভিউ আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।

২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত। রায়ে বলা হয় এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন হলেও তখন বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হয়নি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস করে বিএনপি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

পরে বিএনপি সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ৪ অগাস্ট সেই রিট খারিজ হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধই থাকে।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করেন রিটকারীরা। ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ পদ্ধতির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় ৮ জন আইনজীবী বক্তব্য দেন।

তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। এমনকি তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও এর পক্ষে মত দেন।

ওই আপিল মঞ্জুর করে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়।

তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবিএম খায়রুল হক। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে একমত হয়েছেন বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা এবং বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।

বিচারপতি মো. ইমান আলী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে মত না দিয়ে বিষয়টি জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক সরক র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আচরণবিধি ভঙ্গে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ সাকিব

বিপিএলে আগ্রাসী আচরণের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো শাস্তি পেয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেসার তানজিম হাসান সাকিব। আগের বার জরিমানা হলেও এবার দুই ম্যাচে নিষিদ্ধ; সাথে পেয়েছেন ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট। 

কারণ ২৪ মাসের মধ্যে কোনো ক্রিকেটার ৪ ডিমেরিট পেলে তাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করার কথা। তবে সাকিব নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চিটাগং কিংসের বিপক্ষে তার দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের শেষ ম্যাচে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন তিনি।

ম্যাচের তৃতীয় ওভারে চিটাগংয়ে খেলা গ্রাহাম ক্লার্ককে আউট করে ব্যাটারের উদ্দেশে কিছু একটা বলেন সাকিব। ঘটনাটি নজর এড়ায়নি দুই অনফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল ও মোর্শেদ আলী খানের।

ম্যাচ শেষে দুই আম্পায়ার ম্যাচ রেফারির কাছে অভিযোগ জানান। পরে ম্যাচ রেফারি এহসানুল হক সেজান শাস্তি হিসেবে সাকিবকে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন। এর ফলে ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়া এই ক্রিকেটারকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ