বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, দেশের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। অন্তর্বর্তী সরকার সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। তারা কিছু শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। সমস্যার সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করতে পারবে। কিন্তু গুরুদায়িত্ব ভবিষ্যৎ নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের। তাদেরই কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে।

গতকাল শনিবার ‘শ্বেতপত্র এবং অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও বাজেট’ শীর্ষক দিনব্যাপী সিম্পোজিয়ামের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। অর্থনীতি বিষয়ে সরকার গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এর আয়োজন করে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড.

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। 

অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বক্তব্যে ঋণখেলাপি, অর্থ পাচার, ব্যাংক ব্যবস্থার দুরবস্থাসহ দেশের অর্থনীতির নানা দুর্বল দিকের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর কোনোটিই নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে। বিগত ১৬ বছরের জবাবদিহি না থাকায় সমস্যাগুলো আরও ঘনীভূত হয়েছে। বিগত সরকারের অপশাসন ঋণখেলাপির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। পুরো আর্থিক খাত রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালিত হয়েছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানের আরেক বক্তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঋণখেলাপিরা যাতে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পান, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে তাঁর দল। ক্ষমতায় এলে চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে বিএনপির ভাবনা বিষয়ে তিনি বলেন, দুই বছর আগেই তারা এ বিষয়ে জনগণের সামনে ৩১ দফা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের কথা উল্লেখ করেছেন। 

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর গণঅভ্যুত্থানের ফলে মানুষের একটি তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মেছে, তারা পরিবর্তন চায়। জনগণ সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এ প্রত্যাশা পূরণ করা বেশ কঠিন। এ জন্যই রাজনীতিতে কাঠামোগত কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ এসেছে সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যারা নির্বাচন করেন না, কিন্তু দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারেন, তাদের দ্বিতীয় বা উচ্চকক্ষে নিয়ে আসার চিন্তা রয়েছে। নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচনে যারা আসবেন এবং আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হবে। 

ক্ষমতায় গেলে বিএনপি সংস্কার কার্যক্রমে করতে পারবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সন্দেহ অমূলক নয়। তবে পারব না, এ কথা বলা যাবে না। চেষ্টা করতে হবে। আমরা জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ। অনেকেই আশা করছেন, ছয় মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সব পেরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। তাই বিএনপি নির্বাচনে বেশি জোর দিচ্ছে।

সংস্কারের জন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে ছয় মাস সময় দিচ্ছে– এ সময়টা কতটুকু যৌক্তিক অধ্যাপক রেহমান সোবহানের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এটা তাদের রাজনৈতিক কৌশল। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়া-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী কোনো গোষ্ঠী আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে এ বিষয়ে তারা কিছু বলতে চান না।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সেলিম রায়হান মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চান, বিএনপি কি নিশ্চয়তা দিতে পারে, অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি করবে না। এর জবাবে ফখরুল ইসলাম বলেন, অতীতের সব অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। এর আলোকেই তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। দ্রুত নির্বাচন-সংক্রান্ত এক সমন্বয়কের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, একটি নির্বাচনকালীন সরকারই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে। কারণ, তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যেসব প্রত্যাশা নিয়ে ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থান করেছিল, তার তেমন কিছুই পূরণ হয়নি। শেখ হাসিনার সরকার টাকা ছাপিয়ে মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিয়েছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও টাকা ছাপিয়েছে। জিনিসপত্রের বাড়তি দামে মানুষ যখন মারাত্মক চাপে, তখন সরকার ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তালে রয়েছে। 

তৃতীয় অধিবেশনে অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে আলোচনায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. রওনক জাহান প্রশ্ন তোলেন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের শক্তিশালী চক্রের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে পেরেছে বর্তমান সরকার? তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা প্রভাব খাটায়। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। 

এ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা অনেক বলা হয়। অথচ বর্তমান সরকারের সময়েও সংস্কারে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে দুর্নীতি আছে। সংসদ সদস্য হতে ৩০০ কোটি টাকা লাগে। এই টাকা তারা কেন খরচ করেন– এর উত্তরে সব জবাব রয়েছে। তিনি বলেন, বিনা টাকায় এমপি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া দরকার। 

আলোচনায় তেল-গ্যাস ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, শেখ হাসিনা এত পরাক্রমশালী হয়ে ওঠার পেছনে ব্যবসায়ী, আমলা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের দায় রয়েছে। তারা গত সরকারের কাজকে উন্নয়নের ‘মিরাকল এবং আউটস্ট্যান্ডিং’ বলে হাসিনাকে শক্তি জুগিয়েছে। আমলাতন্ত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, আমলাতন্ত্র কৃষ্ণগহ্বর। এখানে সব হারিয়ে যায়। এখানে পরিবর্তন না হলে বাকি আর কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমলারা এখনও গগনবিদারী ভূমিকা পালন করছে। তারা এখনও ক্ষমতাবান। যেখানে অর্থনীতি চাপে আছে, সেখানেও তারা এ সরকারের কাছ থেকে মহার্ঘ ভাতা আদায় করে নিতে পারে। 

প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, সরকারি সব অফিসে এখনও স্বৈরাচার রয়েছে। একটা ফাইল যত দিন ইচ্ছা ধরে রাখার সুযোগ রয়েছে তাদের। এ প্রসঙ্গে নির্দিষ্ট কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করার ক্ষেত্রে ন্যাশনাল উইন্ডোর প্রস্তুতির কথা জানান তিনি। 

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব কোঅপারেশন ড. মিচেল ক্রিজা বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো হচ্ছে– দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, তথ্য-উপাত্তের স্বচ্ছতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়ন করা, বাজার অর্থনীতিকে প্রকৃত অর্থেই কার্যকর করা, পুঁজি বাজারে যাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসতে পারে, তা নিশ্চিত করা ও শ্রম অধিকার প্রশ্নে সংস্কার। তা না হলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ইইউতে রপ্তানিতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। 

সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, শ্বেতপত্র প্রতিবেদন এবং এর সুপারিশ বাস্তবায়নে গত দেড় মাসে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাজেটের জন্য অপেক্ষায় থাকা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। কারণ, বাজেট হতে আরও ছয় মাস বাকি। অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ছয় মাস অনেক লম্বা সময়। কারণ, নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব ছাড়তে তাদের ওপর চাপ রয়েছে। এখনই শ্বেতপত্রের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। 

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাতটি মেগা প্রকল্প পর্যালোচনা করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি দেখেছে, ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার প্রকল্পে ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। নিজেদের লোককে সুবিধা দেওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছ। এ রকম প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের প্রভাব যুগ যুগ ধরে থেকে যাবে। পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাচারের অর্থ ফেরত আনা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। বাংলাদেশে আসা পাচারের অর্থ ফেরত দেওয়ার রেকর্ড আছে, সুতরাং বাংলাদেশও পাচারের অর্থ ফেরত পেতে পারে। 

দেশে নির্বাচন ও সংস্কারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সংঘাতের সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ড. দেবপ্রিয়। এ ছাড়া ধীরগতির প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের অভাব ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জকে জরুরি বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে আসন্ন বাজেট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর মতে, প্রবৃদ্ধির হার বিশেষ করে ধীর হয়ে পড়ছে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সমস্যা বিদ্যমান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ব তপত র প র জন ত ক ব যবস থ ন সরক র সরক র র জনগণ র র জন য ত র জন সমস য ফখর ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

১২নং ওয়ার্ড কমিটিতে ফ্যাসিবাদী দোসরের জায়গা হবে না : সজল

বিগত সাড়ে ১৫টি বছর আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি কোনদিন চিন্তা করতে পারিনি যে এই ১২ বার একাডেমী স্কুলে আমরা যুবদলের কর্মী সভা করবো। আল্লাহ আমাদের রহমত করেছে এদেশের ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ১২নং ওয়ার্ড যুবদলে আমাদের সাংগঠনিকভাবে দুর্বলতা আছে। 

আমাদের সাংগঠনিকভাবে যুবদলকে শক্তিশালী হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু অতীতে এখানে যারা ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসররা ছিল তারা কিন্তু জনগণের মেন্ডেট নিয়ে ছিল না। বার একাডেমিতে খানপুরবাসী বারবার ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করেছিল। ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ এই স্কুল থেকে কোনদিনই জয়লাভ করতে পারেনি। 

একক প্রার্থী হিসেবে সিল মেরে তারা একাডেমি স্কুলের তারা যে বিগত সাড়ে ১৫ বছর জয়লাভ করেছে। এর আগে কখনও এই স্কুলে বিএনপির ভোট সব সময় বেশি ছিল। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির কোন ভোট ছিল না খুবই নগণ্য ছিল। খানপুরবাসী বিএনপি'র পক্ষে আছে। খানপুরের মুষ্টিময় কিছু লোকজন ব্যবহৃত হয়ে মানুষকে জুলুম নির্যাতনের নির্যাতন করেছে । আমরা সেই নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাঁখার আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ১২নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। শনিবার (১ মার্চ) বিকেল তিনটায় শহরের খানপুর বার একাডেমী স্কুল মাঠে এই কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। 

এ সময় সজল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আজকে যে কথা বলতেছি আপনাদের সাথে কথা বলতেছি কারণ আমরা আপনাদেরকে উজ্জীবিত করতে চাই। আমরা জানতে চাই আপনাদের মাঝে কারা পরীক্ষিত লোক, কারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে । এই ১২নাম্বার ওয়ার্ডে জানতে চাই কারা বিগত সময়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিল। 

১২নং ওয়ার্ড কমিটিতে ফ্যাসিবাদী দোসরের কেউ জায়গা পাবে না। যদি কেউ ঢুকতে চায় কেউ আমাদের কর্মীদের মাঝে মিশতে চায় আপনারা বলবেন এই কর্মী ফ্যাসিবাদী শক্তির সাথে ছিল আমাদের যুবদল করতে চায় আমরা তাকে যেনো কোনো সুযোগ না পায় সেই ব্যবস্থা করব। যারা রাজপথে আমাদের কষ্ট করেছেন তাদের অবশ্যই আমরা মূল্যায়ন করতে চাই। 

কিন্তু বর্তমান যে পরিবর্তন ভাষা বুঝে কিন্তু আপনাকে রাজনীতি করতে হবে। জনগণের সাথে মিলিয়ে কিন্তু আপনার রাজনীতি করতে হবে । কারণ জনগণের চাওয়া পাওয়ার উপরে কিন্তু আপনার রাজনীতি আপনারা যেই ধরনের রাজনীতি করেছে বাংলাদেশ। কোন চাঁদাবাজ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী জাতীয়তাবাদী যুবদলের জায়গা হবে না। 

তিনি আরও বলেন, এখানে আমাদের একজন কর্মী বলেছেন বিগত সাড়ে ১৫ বছর আমরা ভোট দিতে পারেনি। কিভাবে আপনারা ভোট দিবেন আমরা ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা সাড়ে ১৫বছর আন্দোলন করেছি ভোটের অধিকারের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য। 

মানুষের ন্যায় অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।  নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বিষয়ে উনি ইসলাম সজল বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে।

আন্দোলনে বিভিন্ন নেতা কর্মীদের মুখে শুনেছি আমরা যখন আন্দোলন করেছি তখন কিন্তু কোন দল গঠন হবে সেই চিন্তা করে আন্দোলন করি নাই। লোভ লালসার পিছনে পড়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি নাই। 

কারণ সরকার বিরোধী আন্দোলন সব শ্রেণীর মানুষের সাথে সম্পৃক্ততা ছিল। সব শ্রেণীর মানুষ যখন সম্পৃক্ততা হয় না তখন কোনদিন কোন অভ্যুত্থান হয় না। কারো একক দাবি, চিন্তা ও শক্তির বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয় নাই।

এদেশের স্বাধীনতার পিছনে যেমন মায়েদের ভূমিকা আছে, তেমনি তার সন্তানের ভূমিকা আছে, ছাত্রদের ভূমিকা আছে একজন পিতার ভূমিকা আছে একজন সামরিক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা যারা রিটার তাদের ভূমিকা ও আছে। 

তখন এই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে । কারণ শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সাড়ে ১৫বছর হাজার হাজার নেতাকর্মী  গ্রেপ্তার করেছে এই দেশের অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। অনেক ভাইয়ের বোনকে হারিয়েছে, অনেক স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়েছে। শেখ হাসিনা বিনা ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যারাই প্রতিবাদ করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি দিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এই যে শক্তি নতুন দল গঠন করা হলো এই দলের পিছনে কারা পৃষ্ঠপোষকতা আছে এদেশের জনগণ জানতে চায়। এদেশের জনগণ জানতে চায় কিভাবে মানিক মিয়া এভিনিউর মতো জায়গায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে সারা বাংলাদেশ থেকে লোক জমায়েত করেছে এই লোক জমায়েতের অর্থের উৎসব এদেশের জনগণ জানতে চায় তাদের। তাদের উদ্দেশ্য কি তা তাদেরকে প্রকাশ করতে হবে। 

আমি বলতে চাই আপনারা ভালো চিন্তা করে রাজনীতি করেন অবশ্যই আমাদের দলের নেতা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেব যেভাবে আপনাদেরকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমরা আপনাদেরকে স্বাগত জানাতে চাই কিন্তু।

আপনারা এই ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন সেই শহীদের রক্তের উপর ভর করে আপনারা কোন রাষ্ট্রীয়ভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অপকর্ম ও ক্ষমতার চিন্তাভাবনা আমাদের পক্ষ থেকে বারণ করা হচ্ছে। 

কারণ আমরা বলতে চাই কালকে শহীদ সাঈদের ভাই কালকে কিন্তু প্রত্যেকে টিভিতে বলেছে আমাদের ভাইদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতার যুদ্ধের সৃষ্টি হয়েছিল যে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছিল সেই দল গঠন কিন্তু আমি এবং আমার পরিবারের কাউকে দাওয়াত করা হয়নি। 

আমরা কি বলতে পারি যারা শহীদের যে রক্তের বিনিময় যেই দল সেই স্বাধীনতা হয়েছে সেই স্বাধীনতার অপব্যখ্যা আপনারা দিচ্ছেন অপচিন্তা করছেন অপরিকল্পনা করছেন। মানুষের হৃদয়ের কথা শুনতে এবং মানুষ যদি আপনাদের আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে ইনশল্লাহ আমরা নেব কিন্তু মানুষ ভোট না দিয়ে জোর করে কোন অপর চিন্তা করলে সেটা আমরা কিন্তু ক্ষমা করব না। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যেভাবে চিন্তা করবেন আপনাদের কিন্তু সেই ভাবেই রাজনীতি করতে হবে। আপনারা আমি কেউ কিন্তু এই দলের বাইরে না। এই দলের প্রধান তারেক রহমান সাহেব এদেশের মানুষের ধারণ করে মানুষের হৃদয়ের কথা বোঝার চেষ্টা করছেন। আপনাদেরকে বিপদ আপদ সুখ-দুঃখ মানুষের কাছে যেতে হবে। 

আপনি খবর নেবেন আপনার পাশের বাড়ির ভাইটি ঠিকমতো আছে কিনা সে ভালোভাবে চলতে পারছে কিনা। এইসব খোঁজখবরও আপনি নিবেন আপনি যদি তাকে টাকা দিয়েন না উপকারও করতে পারেন কথা দিয়ে অন্তত থাকে আপনি কনটেস্ট করার চেষ্টা করবেন।

ভোটের মাধ্যমে কিন্তু জয়লাভ করতে হবে জনগণের ভোটের বাইরে আমাদের নেতা তারেক রহমান অন্য কোন চিন্তা কোনদিন করে নাই । 

জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাকেই নেতৃত্ব যাকে নির্বাচিত করবে সেই আপনাদের আগামী দিনের নেতা হবেন আমি। জনগণ এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন আমাদের সহযোদ্ধা ভাইরা যদি কষ্ট পায় তাদের বলতে চাই আপনারা নিজেদের পরিবর্তন করেন আপনারা মানুষের চাওয়া পাওয়ার নির্ভর রাজনীতি হবে।

সমস্ত কর্মকাণ্ড এই জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য তারেক রহমান সাহেব ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে আমরা মানুষের কাছে দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিব ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করে ইইউ: হাদজা লাহবিব
  • আপনারা সীমাবদ্ধ সুশীল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানো পছন্দ নয়
  • বাংলাদেশ নিয়ে অমর্ত্য সেনের বক্তব্য নিয়ে যা বলছেন জামায়াতের আমির
  • অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার
  • অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার: আনু মুহাম্মদ
  • স্বৈরাচারী শাসনামলের নৃশংসতা নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
  • রবীন্দ্রনাথ-নজরুল কেউই ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না!
  • নতুন দলকে নতুন যে রাজনীতি দিতে হবে
  • রাজনীতি থেকে নেয়ার কোন সুযোগ নাই, দেয়ার সুযোগ আছে : স্বপন চৌধুরী
  • ১২নং ওয়ার্ড কমিটিতে ফ্যাসিবাদী দোসরের জায়গা হবে না : সজল