জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রধান অতিথি এমন একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরাসরি হামলায় অংশ নেওয়া ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী গোলাম নাছির। শুধু নাছির একা নন, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে দেখা গেছে জেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো.

জুবায়ের জাকিরকে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, পুলিশ খুঁজে না পেলেও, এমন একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে দেখে তারা অবাক হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স  ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রহিম বক্স দুদু। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান। সভাটি বিকেল ৪টায় শেষ হয়।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ফরিদপুর জেলার সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি গোলাম নাছির। তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরাসরি তাঁর বাহিনী নিয়ে হামলায় অংশ নেন। আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতেও দলবল নিয়ে অংশ নিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা ও ফরিদপুর জেলায় ছাত্র হত্যার কমপক্ষে ৫টি মামলা হয়েছে। সরকার পতনের পর থেকে পলাতক গোলাম নাছির। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরের অন্যতম সমন্বয়ক আবরাব নাদিম ইতু বলেন, সন্ত্রাসী নাছির গত ৩ ও ৪ আগস্ট তাঁর সহযোগীদের নিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা চালায়। পুলিশ তাদের সহযোগী ছিল। আমরা নাছির ও তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নাছিরের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের পক্ষে বহিষ্কৃত এই নেতা বক্তব্য রাখছেন। এ সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের বহিষ্কৃত সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জুবায়ের জাকির।

বক্তব্যে নাছির বলেন, ‘আমি ২২ বছর ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন যখন যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আমরা সঙ্গে থেকেছি।’ 

ফরিদপুর জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী গোলাম নাছিরের আসল নাম আশরাফুল আলম নাছির। শহরের ওয়্যারলেসপাড়ার বাসিন্দা নাছিরের বাবা মৃত মনিরুজ্জামান ওরফে বদরুল। সন্ত্রাস, হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিস্ফোরক বোমা প্রস্তুত ও অবৈধ অস্ত্র সরবরাহের অসংখ্য মামলার আসামি নাছির। নাছিরের বোন মাহমুদা বেগম ফরিদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর বড় ভাই প্রয়াত তপনও ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ নেতা।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখেছি। গোলাম নাছিরকে আটক করতে পুলিশ তৎপর।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত র জনত র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ