আওয়ামী লীগের পতনের পর গত সাড়ে পাঁচ মাসে সারাদেশে ৪০টি মাজার ও দরগায় অন্তত ৪৪ বার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশের বরাত দিয়ে গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, হামলাকারীরা মাজার ও দরগা ভাঙচুর, ভক্তদের মারধর, সম্পদ লুট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ১৭টি হামলার রিপোর্ট হয়েছে। এর পর চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ ও ময়মনসিংহে সাতবার হামলা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুরের একটি মাজারে দুর্বৃত্তরা চারবার হামলা চালিয়েছে।
প্রেস উইংয়ের ভাষ্য, সব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৫টি নিয়মিত মামলা ও থানায় ২৯টি জিডি হয়েছে। দুটি নিয়মিত মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বাকি ১৩টি নিয়মিত মামলা ও ২৯ জিডির তদন্ত চলমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাজার ও দরগার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ দিতে অনুরোধ করেছে পুলিশ। স্থানীয়ভাবে সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে শান্তি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণ ও ইসলামিক নেতাদের অংশগ্রহণে সচেতনতা কর্মসূচি চালানো হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার মাজার ও দরগায় যে কোনো হামলার বিষয়ে শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করছে। সব পুলিশ ইউনিটকে ঘটনাগুলোর তদন্ত কঠোরভাবে চালানো ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার মাজার ও দরগার নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, বাসরঘর থেকে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশোরীকে (১৬) এক যুবক ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত ওই যুবক গত বুধবার অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। খবর পেয়ে কিশোরীর পরিবার বিষয়টি থানায় জানায়। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাসরঘর থেকে অভিযুক্ত যুবককে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অভিযুক্ত যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই যুবকের নাম মো. আবুল কালাম (২৬)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়িও একই গ্রামে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারে দাবি, মেয়েটির মা ঢাকায় চাকরি করেন। মেয়ে তার বাবার কাছে গ্রামের বাড়িতে থাকে। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় প্রায়ই কিশোরীর বাড়িতে যাওয়া-আসা করতেন আবুল কালাম। চার মাস আগে দুজনের মধে৵ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন কালাম। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা বলে জানিয়েছেন। তাঁর সহজ-সরল মেয়েটার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, এ জন্য ওই যুবকের সর্বোচ্চ শাস্তি চান তিনি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে বাসরঘর থেকে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী কিশোরীকেও আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কিশোরীকে হাসপাতালে পাঠানো হবে।