বন্ধু ইয়াসিনের স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল অটোরিকশাচালক রাকিবের। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। পরে ইয়াসিন ও তাঁর মামাতো ভাই আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেন তারা।

ইয়াসিনকে ধরার পর জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তিনি এমন তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান ঢাকার দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.

আশরাফুল আলম। নবাবগঞ্জ উপজেলায় অনৈতিক সম্পর্কের জেরে খুন হন রাকিব। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

হত্যাকাণ্ডের শিকার চালক রাকিব উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নের মোক্তার হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তার দু’জন হলেন উপজেলার আগলা ইউনিয়নের ইয়াসিন ও কৈলাইল ইউনিয়নের আশরাফুল। গতকাল শনিবার নবাবগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান আশরাফুল আলম।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন রাকিব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন্ধু ইয়াসিন। এদিন তারা আর বাড়ি ফেরেননি। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর ভাই রবিউল হোসেন। 

বিষয়টি অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে রাকিবের সঙ্গে থাকা ইয়াসিনকে আটক করার পর মেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পরে শুক্রবার রাতে সন্ধান চালিয়ে আগলা পূর্বপাড়ার একটি নির্জন চক থেকে রাকিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াসিন পুলিশকে জানান, হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে আগলা পূর্বপাড়া চকের নির্জন মাছের খামারের পাশে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় করা মামলার বাদী রাকিবের বড় ভাই রবিউল হোসেন বলেন, তাঁর ভাই অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হতো। তারা ভাইকে হত্যা করল কেন? তিনি জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুমিনুল ইসলাম বলেন, শনিবার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়। ঘটনার সঙ্গে আর কেউ সম্পৃক্ত আছে কিনা, তা জানতে তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল পুলিশ। তা নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ